পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\లిసి 8 বিরাজ স্ত্রীকে ডেকে বললে, “শুনলে ? না জানি তোমার ঘাড়ে আবার কি অস্ত্র রয়েছে। গোস্ত খরচ— খাই খোরাকী—রাত জাগুনি—আঃ ! একেবারে জ্যাস্তে মেরেছ ? যে রকম গতিক, কতকগুলো টাকার শ্রাদ্ধ করে, তোমার পেটের অম্বল সম্বল করে ঘরে ফিরতে হবে .” কেতকী এ-কথার অ্যর জবাব দিলে না। ঘাড় হেঁট করে বসে রইল । তিনদিন পরে বিরাজের অদৃষ্ট স্বপ্রসন্ন হ’ল । ঠাকুর-বাবার প্রধান শিষ্যটি এসে প্রশ্ন করলে— সেই একই প্রশ্ন,-দেবতার ভোগ কত’র দাও, ছেলের অন্নপ্রাশনে বা কি খরচ কর । অবশ্ব প্রশ্নটি কিছু রকমফের করে করা হ’ল । বিরাজ বললে, “দেবতার ভোগ সওয়া আনার বেশী কোনদিন দিতে পারিনি। আর অন্নপ্রাশন—ইষ্টদেবের একটু কৃপাদৃষ্টি আছে গরীরের উপর। তাই তার প্রসাদ নিয়ে ছেলেমেয়েগুলোর গালে ভাত দিয়েছি।” বিরাজ ও তার স্ত্রীকে ভালমত পর্য্যবেক্ষণ করে চেলাটি চলে গেল । বাবা বড়লোক সেই দেমাকে না হোক, লোকের চোখে স্বামীর কোপন-স্বভাব কতকটা ঢাকা দেবার জন্য বাবার প্রদত্ত অলঙ্কারগুলি কেতকী কখনও গা থেকে খুলত না । এবার এ সমস্ত ঘাড়ে চেপে আস্তে বিরাজ অনেক আপত্তি জানিয়েছিল । কেতকী বলেছিল, "তোমার এদেী ধরে দরজা এ টে—গায়ে দিয়ে বসে থাকৃতে অথবা সিন্দুকে ঢাকা দিয়ে রাখতে ত বাবা এ সকল দেননি ? যায়—যাবে ; তখন আর পরবার বালাই থাকবে না ।” এদিকে কিছুক্ষণ পরে চেলাটি আবার ফিরে এল । বললে, “মাকে তলব করেছেন, ঠাকুরবাবা।” বিরাজ জিজ্ঞাসা করলে, “অৰ্দ্ধাঙ্গ ছেড়ে ? না, আমারও ষাবার অনুমতি আছে ?” চেলাটি বললে, “উনি একলাই যাবেন । সঙ্গে আর কারও থাকার নিয়ম নেই । গোলযোগ বাড়ে, বাবা মনস্থির করতে পারেন না।” প্রবাসী—আষাঢ়, >999 [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড বিস্ময়ে বিরাজের চক্ষু দুইটি ঠিকৃরে পড়ল। বললে, “রাত্রি যে অত্যন্ত গভীর সাধুজী । উনি গিয়ে আমার ঘরের পর্দা—অম্বল সারাতে শেষটা আমাকে আবার হাপানিতে ধরবে ?” 哆 চেলাটি কুপিত হয়ে বললে, “বাবার উপর তা হ’লে বিশ্বাস নেই আপনাদের ?” বিরাজ আমৃত আমৃত করে বললে, “না—না, তা অবিশ্বাসই বা কি ? শুধু নাভিশ্বাসের ভয় করি । সেট। যেন তোমাদের এই নাটমণ্ডপে ঘটে না ওঠে।” চেলাটি এবার রোষ প্রকাশ করে কিছু উগ্ৰকণ্ঠে বললে, “পেয়েও হাতছাড়া করলেন আপনারা ? দুর্য্যোগ এখনও কাটেনি। আপনারা আর এখানে বুথা ভিড় জমিয়ে অপর লোকের অসুবিধা ঘটাবেন না।” কেতকী চেলাটির পা জড়িয়ে ধরলে । বললে, “আপনি ক্ষমা করুন সাধুজী " স্বামীকে বললে, “তুমি কি পাগল হলে নাকি ? এই সব দেবতা-লোকের সঙ্গে তক্ক জুড়ে দিলে ?” বিরাজ বললে, “পাকক্রিয়ার একটু দোষ ঘটেছে ওর, বাবা ধদি তুক্তাক্ জানেন, এইখানেই একটু মেহেরবাণী করতে বল না। আমি ওঁর স্বামী-দেবতা । ঝক্কিঝাটি যে আমার অনেক ৷” কেতকী বললে, “তোমার পায়ে ধরি আর তন্ধ তুলে ন । এই পয়সাকড়ি ব্যয় করে এসে সমস্তষ্ট যে ফঁাসিয়ে দিলে তুমি ।” বিরাজ দেখলে, কথাটাও সত্যি। বললে, “ঝন্টর ম! তোমার গলায় ফাসি পরিয়ে ছেড়ে দিয়েছে ও আর আমি ফাসিয়ে দিতে চাইনে। আচ্ছা ! যাও। হাসতে হাসতে ফিরো যেন ?” কেতকী বাবার সকাশে নীত হ’ল । উৎকণ্ঠিতচিত্তে নাটমণ্ডপে বসে রইল । বিরাজ 8 কেবলরামের সম্বন্ধে কিছুদিন থেকে কানাঘুষ চলছিল। সে নাকি নিশীথ রাত্রে মেয়েদের একাকী বাগানে নিয়ে যায়। নৌকায় নদীর উপর নিয়ে গিয়ে হাওয়া