পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] কামিথ্যের ঠাকুর ۹چ(ف বিরাজ ভেবে দেখলে লোকটাকে হাতছাড়া করলে ফল বড় শুভ হবে না । দৈবাৎ যদি জুটে গেছে, সোজ পাকে রাখাই ভাল। কিন্তু পেটের ঠাই যে অনেক । হিড়িম্ব রাক্ষসী । বললে, “কি চাও, বল। নোটফোটের কথা পেড় না যেন । পেটের ক্ষিধে বাড়ালে পেরে উঠব না।” ইনস্পেক্টর মুচকি হেসে বললেন, “ক্ষিধে ত খুবই। আপনি যে দাতা, বিড়ি সিগারেটের পয়সাটা হ’লেই কুতার্থ হব ।” বিরাজের সমস্ত দেহে গোটা চল্লিশেক টাকা ছড়ানো ছিল । কতক কাছায়—কতক ক্টোচায়—কতক কোমরের গেজেয়-কতক পকেটে । সকলদিকটায় হাত ড়ে টিপে টিপে দেখে নিরাশ হয়ে সে বললে, “সবই সে আস্ত ? টীক। ন৷ আচ্ছা ! দাড়া ও ---" এই বলে সে বুকপকেটটা হাত ড়ে একটা সিকি টেনে বের করে জিজ্ঞাসা করলে, “পথে কিছু খাবার খাব বলে সিকিটে ছিল, তা’ তোমার গিয়ে সিগারেটের দাম কত ?” “বেশী না—দশ পয়সা ।” “ত হ’লে থাকুছে গিয়ে ছ’ পয়সা । আছে তোমার কাছে ? থাকে ত ধে iয়া— ভেঙেছ, না উড়েছে । খুচরো পয়সা ছটা পয়সা দাও । ক্ষিধে তেষ্ট। ত চলোয় গেছে। মনে করুব’খন দশ পয়সার কলা কিনে খেয়েছি।” “কিন্তু যে আপনাকে কলা দেখালে তার গল্পটা ত এখনও শোনা হয়নি। পয়সা এখন থ্রাকৃ। সিগারেট যা আছে, আপাততঃ চলবে ।” হেসে কেস হতে একটা সিগারেট টেনে বের করে তিনি আগুন ধরালেন। বিরাজ খুলী হয়ে সিকিট আবার যথাস্থানে রেপে দিলে। বললে, “মেজাজের কি আমার ঠিক আছে ? পাজি—জোচ্চর—জরদ গব-পাক মেরে কি না মাথার উপরে ছো ?” “গালিট। এখন থাক, গল্পটাই আগে বলুন ! পরের ষ্টেশনে এখুনি গাড়ী ধরবে। তার আগে আপনার বক্তব্য শোন চাই। দেখি, যদি কিছু করা যায়।” বিরাজের কাছে আহুপূর্বিক সমস্ত ঘটনা , শুনে তিনি বললেন, “গাড়ী থামূলে আপনি যদি আপনার স্ত্রীর অনুসন্ধানে ছুটোছুটি করেন, আমি কিছুই করতে পারব না। সামনের ষ্টেশনে নেমে আমি কলিকাতার পুলিশকে সদলবলে সজ্জিত থাকৃতে তার করব । সেইগানে ওদের গ্রেপ্তার করার ব্যবস্থা করা যাবে। আপনি এই সময়টা চাদর মুড়ি দিয়ে বেঞ্চের উপর শিষ্ট ছেলের মত নাকসিটকে পড়ে থাকুন দি কিনি । কাকেও মুখ দেখাবেন না যেন। বুঝলেন ?” “বুঝব না কেন ? শঠ ছেড়ে স্যাকরার হাতে পড়েছি, যেদিকে দমাবে, সেইদিকে দম্তে হবে বলে,—নিজের জালায় মরে মনসা, বর দিয়ে যা !” ইনস্পেক্টর দরজাট। বললেন, “তা হলে নামূলুম আমি ?” “নামে । দেশে গিয়ে মুখ ত ঢাকৃতেই হবে । তুমি দেখি ঘোমটাটা গাড়ীর মধ্যেই টেনে দিচ্ছ । নিধের বোঝা সিধে নিয়ে পালাবে না ত ? তুমি ত, বাবা পুলিসের লোক ” “পুলিসের উপর মমতা আপনার খুবই বেশ । আমি এই নামূলুম । আপনি চাদর মুড়ি দিন ।” তিনি নেমে পড়লেন । বিরাজ আগাগোড়া মুন্ডিমুড়ি দিয়ে পড়ে রইল । গাড়ীখান। কলিকাতায় পৌছিলে বাব নেমে সঙ্গের লোকজন এবং কেতকীকে নিয়ে ষ্টেশনের একধারে উপবেশন করলেন । কুলীরা জিনিষপত্র নামিয়ে তাদের সম্মুখে স্ত পীরুত করতে লাগল। এদিকে পুলিশের লোকেরা এসে তাদের ঘেরাও করে দাড়াল । ইনস্পেক্টর সঙ্গে বিরাজ তথায় উপস্থিত হ’লে সে আর আত্মসম্বরণ করতে পারলে না । রোধে কাপতে কাপতে বললে, “পাজী—বদমাস্—ডাকু—মুখে চণকালী দিয়েছিস, শাল৷ ” কেতকী শশব্যস্তে উঠে এসে স্বামীর হাত চেপে ধরে সভয়ে বললে, “কাকে কি বলছ ? কি সৰ্ব্বনাশ করছ তুমি, বাবার উপর পেত্যাদেশ হয়েছে পেরাগে গিয়ে অামাকে বিল্বপত্র দিতে ।” ভিতরের দিকে টেনে ধরে যাক্‌, সেন নেমে পড়বেন না ।