পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] নিখ্রিল-ভারত হিন্দু-সভার পক্ষ থেকে তার বীরত্ব ও ধৈৰ্য্যের জন্য একটি সুবর্ণপদক দেওয়া হবে স্থির হয়েছে। হিন্দু মহাসভার বর্তমান কৰ্ম্মকৰ্ত্তা সভাপতি ডাঃ মুঞ্জে এই কথা বলেছেন। পুঃ—সকল হিন্দুর মুখে কেবল এই কথা শুনি, যে, পুলিশ যদি হিন্দুকে রক্ষা না করে, তবে যেন তাদের রক্তের হাসি AASAASAASAASAAMAMAMA AMAMAAASAASAASAA AA ASASASA AAA AAAA AAAA AAAA SAAAAAMMAMMMAAAS 8©ፃ SSASAS SSAS SSAS SSAS SSAS SSASAS SS SAAAAAMAMAAASAAA আত্মরক্ষায় বাধা না দেয় ; তা হ’লেই আমরা নিশ্চিন্ত হ’য়ে বাস করতে পারি । যখনই হিন্দুরা প্রতিরোধ ক’রতে গেছে, তখনই পুলিশ এসে নাকি তাদের প্রতিরোধ করেছে। তাতেই হিন্দুর এমন সৰ্ব্বনাশ হ’তে পেরেছে । এখনও ঢাকা-হলের আশ্রিত অবশিষ্ট লোকেরা নিজেদের বাড়ীতে ফিরে যেতে সাহস করছেন না । রক্তের হাসি শ্ৰীসান্তন গুহ প্রয়োজনের তাগিদ ফুরোলে চলে যাওয়াই হয় ত জগতের চিরন্তন নিয়ম । তাই মাঘের কনকনে বাতাস গায়ে লাগতে না লাগতেই পাতারা সব ঝরে পড়ে, ফুলের হাসিটুকু শুকোতে না শুকোতেই পথের ধুলায় তার চির-সমাধি হয় । কিন্তু মাতৃযের হৃদয় বলে যে একটা জিনিষ আছে, তাও ত অস্বীকার করবার নয়। তার কাছে আইন নাই, কাতুন নাই, নীতি-সংহিতার বিধিনিষেধও সেখানে অচল । কাজের বাইরে গেলে গরু-ঘোড়ার হয় গো-হাটায়, ন ত পিছরাপোলেই চিরটা কাল সদগতি হয়ে আসছে। কিন্তু পরেশবাবুর বুড়ে ঘোড়াটার বেলায় হঠাৎ এই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটে গেল। ছোটবেলা হ’তে তিনি এটার কোলেপিঠে চড়ে আজ এতবড়টি হয়েছেন একথা তিনি কিছুতেই ভুলতে পারেননি। আর তাই তার সঙ্গে তার ওপর ছিল একট। অন্ধ-মমতা জড়িয়ে । ছোকৃরা সহিস রামলালটার কিন্তু সহ হ’ত না। সে কিছুতেই বুঝত না,—যে ফুল শুকিয়ে গিয়েছে তাকে ধরে রাখবার জন্যে এই ব্যর্থ চেষ্টা কেন ? মনিবের পক্ষপাতিত্বকে সে তাই কিছুতেই স্বনজরে দেখতে পারত না । অক্ষম সহিসের সব রাগ গিয়ে শেষে পড়ত—এই অসহায় জীবটির ওপর । ফলে কোনদিন তার বরাদ আহার জুট্ৰত, কোনদিন জুটত না । পরেশবাবু সহিসকে বুড়ে ঘোড়াটার উপযুক্ত যত্ন করতে আদেশ দিয়েই র্তার কৰ্ত্তব্য শেষ করেছিলেন, কার্য্যক্ষেত্রে তার কতদূর প্রয়োগ হচ্ছে তা দেখা হয়ত প্রয়োজন মনে করেন নি । এমনি অনাহার ও স্বল্পাহারের ফলে তার বুকের সবক’টি পাজরা ধীরে ধীরে বেরিয়ে পড়ল, নড়তে গেলে পাজরায় পাজরায় ঠোকাঠুকি লাগে । ক’দিন উপযুপিরি অনাহারের পর সেদিন মনিবের হুকুমে রামলাল তাকে নিয়ে গেল মাঠে চড়াতে। সবুজ মাঠ ঘাসে ভরা। তাকে কিন্তু নিয়ে বেঁধে দিলে এমনি এক জায়গায়, যেখানে ঘাসের কোন চিহ্ন নেই—শুকনো খট্‌খটে মাটি । খাটে। করে বাধা দড়িটার ঠিক নাগালের বাইরেই কচি কচি দূৰ্ব্ব । মুখ গিয়ে কিন্তু তার সেখানে পৌছয় না। উপবাসশীর্ণ করুণ মুখটা তুলে মূক জীবটি একবার সহিসের দিকে চায়, আবার দড়ি ছিড়বার ব্যর্থ চেষ্টায় ছট্‌ফট্‌ করে । সারাট অঙ্গে তার করুণ প্রার্থনা উন্মখ হয়ে ফুটে উঠল। বুভূক্ষু চোখের ড্যালাছুটোও ঠেলে বেরিয়ে পড়তে চায় যেন । রামলাল নিৰ্ম্মম উল্লাসে হাততালি দিয়ে নেচে উঠল । বঞ্চনা-বেদনার সবটুকু বাথ তার প্রতিহিংসাপরায়ণ মনে একটা মস্ত হাসির জিনিষ বলেই মনে হ'ল। পঞ্চরসার শীর্ণ দেহের সবটুকু শক্তি কে এক করে মরীয়া ঘোড়া দড়ি টেনে ধরল। জীর্ণ দড়ি আর আত্মরক্ষা করতে পারলে না, সশব্দে ছিড়ে গেল। উপবাসখিল্প তার স্নান দেহখানি এই অসহ বেগে আর টাল সামলাতে পারলে না । হুমড়ি খেয়ে গিয়ে পড়ল,—ইণঢ়দুটোও দুমড়ে ভেঙে গেল । সবুজ দূৰ্ব্বাদলের ওপর কস বেয়ে একরাশ ফেনার সঙ্গে একটু রক্ত পড়ল, একটিবারের জন্তে নড়ে উঠেই জন্মের মত সে নিপন্দ হয়ে গেল । জয়ের উল্লাসে উন্মত্ত রামলাল ফিরেও চাইল না । হয়ত প্রয়োজন মনে করলে না । যথাসময়েই মনিবের কাছে খবর গেল-বুড়ে ঘোড়াটা মরে জুড়িয়েছে। পরেশবাবুর অশ্রুঝাপসা চোখের কোলে দুফোট জল টল্টল করে উঠল ; কিন্তু সে ক্ষণিকের জন্য। জগৎ তারপরে আবার যথারীতি আপনার পথে ছুটে চলল। ধুলোর ঘুর্ণ উড়িয়ে কালবৈশাখী দেখা দিল, মেঘের ঘন জটাজালে আকাশ ঢেকে বর্ষ এল, কারুর যাত্রাপথে এতটুকু বাধারও স্বষ্টি হ’ল না। ধীরে ধীরে মরা ঘোড়াটা পচতে লাগল, টেনেও ফেলে না কেউ । তারপরে বর্ষাশেষে একদিন, যে একবিন্দু ঘাসের জন্যে সে হাহাকার করে মরেছিল, তবু এতটুকুন ঘাসও পায়নি, তারই গলিত শবে উৰ্ব্বর-করা পাষাণমাটির বুকে একরাশ কচি দূৰ্ব্বার হাসি ফুটে উঠল।