পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা می حیحیی حیحی মৃক্তমালা বলিলেন, “আচ্ছা তা আয় গিয়ে।” রূপলাল দাড়াইয়া ইতস্ততঃ করিতেছে দেখিয়া তিনি জিজ্ঞাদা করিলেন, “কিছু চাস নাকি ? বড়দি তোর মাইনে দিয়ে দেন নি ?” বৃদ্ধ বলিল, “হ্যা তা দিয়েছেন। টাকার কথা নয় মা, অন্ত কথা। আপনি কি ঝি রাখবেন ?” : মুক্তা মালা বলিলেন, “রাখার ত দরকার, কেন তোর জানা-শোনা কেউ আছে নাকি ?” রূপলাল বলিল, “আপনি যদি রাখেন ত বউটীকে নিয়ে আসি । চাচী ত মরে গেল, এখন কার কাছেই বা তাকে রেখে আদব ? মাইনে আপনাদের যেমন খুসি দেবেন। নীচে ত আমার ঘরে আমি ছাড়া কেউ থাকে না, সেইখানেই থাকৃবে।” মুক্তামাল হাসিয়া বলিলেন, “আচ্ছ তা নিয়েই আসিস। অচেনা লোকের চেয়ে জানা-শোনা হলে ত ভালই। মাস দুই পরে ত আয়াটা চলে যাবে, তখন লোক না হ’লে আমার বড় অসুবিধা হবে।” “আমি একমাস পরেই ঠিক আসব বহমা " বলিয়া রূপলাল বাহির হইয়া চলিয়া গেল । তাহার ঘাড় হইতে যেন একটা মস্ত বোঝা নামিয়া গেল। চাচীর দুঃখে সে যত না কাতর হইয়াছিল, তাহার চেয়ে বেশী হইয়াছিল, ঝুলনীর ভাবনায়। ছেলেমামুব বউ, তাহাকে কোথায় সে রাখিয়া আসিবে ? গ্রামের লোকগুলা ষা অসাধারণ পাজী, চাচী বাচিয়া থাকিতেই কতজনে কত কথা বলিত । রূপলাল অবশ্ব সে সব কথা বিশ্বাস করে নাই। আত্মীয়ের মধ্যে ত অবশিষ্ট আছে এক খুড়তুতো বোন। কিন্তু সে পরের ঘরের বউ, তাহার কাছে কি আর স্ত্রীকে রাখিয়া আসা যায় ? সে রাজীই বা হইবে কেন ? ছোট বহুম ঝুলনীকে রাখিতে রাজী হওয়াতে সে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলিয়া বাচিল । ছোট ছেলেমেয়ের কাজ হাল্কা কাজ, দেখাইয়া দিলে ঝুলনী নিশ্চয়ই পরিবে । পাড়াগায়ের মেয়ে তাহার, খাটিতে-খুটিতে অভ্যস্তই আছে। রূপলালের সহিত কথা বলিতে গিয়া মুক্তামালার খুমও ছুটিয়া গিয়াছিল। শেলাই পাড়িয়া লইয়া তিনি তরুণী ভাৰ্য্যা 88ම් কাজে লাগিয়া গেলেন । কিন্তু অল্প পরেই নীচে বড় জায়ের ক্রুদ্ধ কণ্ঠস্বর তাহার কার্ধ্যে ব্যাঘাত জন্মাইল । রূপলাল ছাড়াও এবাড়ীতে আরও দুজন চাকর, ছজন ঝি। কিন্তু বুড়া না থাকিলে কাহারও কোনো কাজ ঠিকমত হয় না। গৃহিণীদের প্রতিনিধি-স্বরূপ, সে-ই সকলকে চালাইয়া লইত। বড়বউ ছেলেপিলে লইয়া বিত্রত, সেগুলি সংখ্যায় বড় কম নয়। ছোটবউয়ের যদিও মাত্র ছুটি ছেলে মেয়ে, তবু তিনিও ঘরের কাজ বড় একটা দেখিতেন না । পড়াশুনা, বায়োস্কোপ, সখের শেলাই ইত্যাদি লইয়াই তাহার দিন কাটিয়া ষাইত । রূপলাল গিয়া সকলেরই অত্যন্ত অসুবিধা হইতে লাগিল । বাজারে চুরি হইতে লাগিল দেদার। কোনো জিনিষ হাতের কাছে পাওয়া যায় না, কোনো কাজ ঠিক সময়ে হয় না, কর্তা গিন্নি সকলে চটিয়া আগুন হইয়া উঠিলেন। থাইতে বসিয়া বড়কর্তা বলিলেন, “বাজারে কি আজকাল পচা চিংড়ি ছাড়া মাছ পাওয়া যায় না ? ন, বাজার-খরচের পয়সা নেই ?” ছোটবাবু স্ত্রীকে খোচা দিয়া বলিলেন, “ইউরোপীয় রাজনীতির খবর দুদিন না নিয়ে, স্থক্তোতে যে লঙ্কাবাটা দেয় না, সেটা ঠাকুরকে বলে দিলে ভাল হয়।” কৰ্ত্তার। রাগ ঝাড়িতে লাগিলেন গিন্নিদের উপর, গিরিরা ঝাল মিটাইতে লাগিলেন চাকর-ঝিদের উপর । তাহারা কেহ বা কাজ ছাড়িবার ভয় দেখাইল, কেহ বা বেশী করিয়া দুষ্টামী করিতে লাগিল। আয়ার ছোট ছেলেদের দুই চারিটা টিপুনি দিতেও ক্রটি করিল না । যত দিন কাটিতে লাগিল, বিশৃঙ্খলা তত বাড়িতে লাগিল। বড়বউ ত বকণবকি করিয়া নিজেকে এবং বাড়ীমুদ্ধকে পাগল করিয়া তুলিবার জোগাড় করিতে লাগিলেন, মুক্তণমালা স্বামী-বেচারীকে নোটিশ দিলেন যে, ম। অনেক দিন হইতে র্তাহাকে একবার যাইতে বলিতেছেন, তাই তিনি ভাবিতেছেন যে, একবার গিয়া মাসখানেকের মত থাকিয়া আসিবেন। ঠিক এই সময় ৰূপলাল ফিরিয়া আসিল, সঙ্গে আসিল, ঝুলনী। দিব্য স্বত্র মুখ, পরিপুষ্ট গঠন। রং শুমৰণ বটে, কিন্তু তাহ যেন নবোদগত কিশলয়ের শুশমলতা