পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] বিবিধ প্রসঙ্গ—সাইমন-রিপোর্ট-প্রকাশ পরিহাস (?) 8õዓ রাজধৰ্ম্মপালন ঢাকায় হিন্দু অপেক্ষ মুসলমানদের জন্য বেশী প্রয়োজন ছিল। যাহাঁদের সম্পত্তি ও প্রাণ গিয়াছে, যাহারা আহত হইয়াছে, তাহাদের মধ্যে হিন্দুদের ংখ্যাই খুব বেশী। হিন্দুর লুষ্ঠিত ও দগ্ধ সম্পত্তির মূল্যও মুসলমানের লুষ্ঠিত ও দগ্ধ সম্পত্তি অপেক্ষ অনেক হাজার গুণ বেশী । কিন্তু হিন্দু অপেক্ষা অনেক অধিকসংখ্যক মুসলমানের এই গুরুতর ক্ষতি হইয়াছে, যে, তাহারা কাপুরুষতা, নিষ্ঠুরতা ও দস্থ্যতার হযোগ পাইয়া মহুষ্যত্ব হারাইয়াছে এবং ধৰ্ম্মচ্যুত ও বর্বরীভূত হইয়াছে। অতএব, যাহাদের প্ররোচনা, প্রশ্রয় বা অবহেলায় ঢাকায় দানবীয় কাণ্ড ঘটিয়াছে, তাহারা হিন্দু অপেক্ষা মুসলমানেরই শক্রতা ও ক্ষতি বেশী করিয়াছে। হিন্দুদের অন্ততঃ এই উপকারটুকু হইয়াছে, যে, তাহারা চিস্ত। করিলে নিজেদের অবস্থা বুঝিতে পারিবে ও প্রকৃত প্রতিকারের উপায় করিতে পারিবে, এবং তাহাদের অনেকের প্রকৃতিগত বীরত্ব ও মানবপ্রীতির পরিচয় দিবার সুযোগ ঘটিয়াছে । অবশু, দৈহিক ও আর্থিক ক্ষতি ছাড়া, যে সব হিন্দুর সাহস কমিয়াছে ও ভীরুতা বাড়িয়াছে, তাহাদের গুরুতর ক্ষতি হইয়াছে বটে। শহর ছাড়িয়া গ্রামেও লুট খুন গৃহদাহের ঢেউ পৌছিয়াছে, ইহা অতি দুলক্ষণ। হিন্দু-মুসলমান সকলেরই এরূপ অবস্থার বিস্তৃতি নিবারণের যথাসাধ্য চেষ্টা করা একান্ত কৰ্ত্তব্য । ঢাকার ব্যাপারের তদন্ত কমিটি ঢাকার ব্যাপারের তদন্ত কমিটির কথা উঠিয়াছে। সাফাইয়ের জন্য তদন্তে কুফলই বেশী হয়। কিন্তু প্রকৃত তথ্য নির্ণয় করিয়া ভবিষ্যতে এরূপ কাণ্ড যাহাতে না ঘটে, তাহা করিবার ইচ্ছা থাকিলে তদন্তে সুফল ফলিতে পারে। এরূপ তদন্তের ফলে কোন কোন দুষ্ট্রের শাস্তি হইতে পারে ; কিন্তু হত ব্যক্তিরা বাচিয়া উঠিবে না, আর্থিক ক্ষতিপূরণও হয় ত সামান্যই হইবে। তথাপি প্রকৃত তদন্ত হওয়া ভাল। গবন্মেণ্ট কি করিবেন, জানি না। কিন্তু বেসরকারী কোন তদন্ত কমিটি হইলে তাহাদের দস্তুরমত প্রকাশু সাক্ষ্য লইয়া সাক্ষীকে জেরা করিয়া সমুদয় সাক্ষ্য এবং তদুপরি রিপোট ছাপান উচিত। দৈনিক সাপ্তাহিক ও মাসিকে যাহ। বাহির হইতেছে, তাহাতে ব্যাপারটার একটা স্থূল ধারণা হয়, কিন্তু সব বিষয়ের ঠিক ধারাবাহিক তথ্য জানা যায় না। সাইমন-রিপোর্ট-প্রকাশ পরিহাস (?) ভিন্ন ভিন্ন দেশের লোকের তথাকার গবষ্মেণ্টের কখন গুণ কখন বা দোষ কীৰ্ত্তন করে আবার একই সময়ে তথাকার কোন দলের লোক গবন্মেন্টের প্রশংসা করে, অন্য কোন দলের লোক নিন্দ করে। শাসকের জনগণের ভাল করেন, না মন্দ করেন, প্রশংসা ও নিন্দ এই রকমের হইয়া থাকে। কিন্তু কোন দেশের গবন্মেণট পরিহাস করেন, এমন কথা শোনা যায় না—সচরাচর ত শোনাই যায় না। বাস্তবিক গবন্মেণ্টের পরিহাস করিবার কথাও নয় । কিন্তু কোন কোন দেশে—অন্ততঃ আমাদের দেশে-সরকার বাহাদুর কখন কখন কাজ এমন করেন যাহার উদ্বেষ্ঠ পরিহাস না হইলেও যাহা দেখায় পরিহাসের মত । ভারতবর্মের দণ্ডবিধি আইনের রাজদ্রোহবিষয়ক ধারাটি এমন যে, আদালত ইচ্ছা করিলে, সরীস্বপজাতীয় ভিন্ন অন্য যে-কোন দেশী সংবাদপত্রের সম্পাদককে শাস্তি দিতে পারেন—দেন না যে, সেটা দয়া । এরূপ আইনের উপর আবার অর্ডিন্যান্স গোট তিন জারি হইয়াছে। স্বতরাং খুব ভাল উদ্দেশ্বে ও খুব মন খুলিয়া ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসনের সমালোচনা করা সাতিশয় বিপৎসস্কুল। এহেন অবস্থায় সরকার বাহাদুর সাইমন কমিশনের রিপোর্টের প্রথম ভলুমি বাহির করিয়া সম্পাদকদিগকে পাঠাইয়াছেন, তাহদের মতামত জানিবার জন্য । আমরাও এসোসিয়েটেড, প্রেসের মারফৎ ৯ই জুন অপরাহ্লে উহার আলগা পাতাগুলি পাইয়াছি—তাহার সঙ্গের মানচিত্রগুলি পাই নাই। ইহার ঠিক সমালোচনা, গবন্মেণ দণ্ডবিধির রাজদ্রোহবিষয়ক ধারাটি ও প্রেস অর্ডিন্যান্সটি রদ না করিলে, হইতে পারে না। অথচ,