পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] এই দেখুন দু হাজার আগাম দিচ্ছি। এর পর মাসে মাসে দেব। কেমন ? রাজি " ` হাতের নোটগুলে। সে সবে মাত্র মাটিতে মমতার পায়ের কাছে নামিয়ে রাখছিল। কিন্তু মমতার আগুনরাঙা মুথের দিকে তাকিয়ে তার কেমন সাহস হ’ল না – *বেরিয়ে যান—আমরা গরীব মানুষ, তা ব’লে আত হীন মই –আমার স্বামীর অসাক্ষাতে আর এ বাড়ীতে ঢুকবেন না।” চমকে উঠে তোতলার মত নরেন্দ্র বলল,—“আপ-– অপি – তো – তোমার ভালর জন্যই বলছিলাম, খেতে পা ও না, ভিক্ষা করতে হয় । থাকতে । তোমার জনোয়ার স্বামীর মুখে ঝাড়ু, মেরে চলে যেতে।” জলস্ত কয়লার মত দু'চোখ তার মুথের উপর তুলে সমত বলল, “যান—” নরেন্দ্র ঘাড় নীচ করে নোটের তাড়াট। পকেটে পূরে মমতার তর্জনী-নিদিষ্ট পথে নিরীহের মত বের হয়ে গেল। একটিও কথ। আর বলতে পারল না। অণর মমতা—সেইখানে ধপ করে বসে পড়ে বহুদিন পরে অঝোরে কাদতে লাগল । এত দুঃখ সে আর সত্যিই বহন করতে পারছে না। বাচবার স্পৃহ নেই, তবু বঁাচতে হবে। অন্ন নেই, ক্ষুধা আছে, থেতে অর্থ নেই, ধার করতে হবে, ন। পেলে ভিক্ষা করতে হবে । সম্ভ্রম আছে, বজায় রাখবার পথ নেই । লজ্জা আছে, নিবারণ করবার উপায় নেই। স্নেহ আছে, সামর্থ্য নেই । সে আর পারে না । ঈশ্বরের করুণ অসীম শোনা যায়, এতদিন তারও সেই বিশ্বাস ছিল । কিন্তু অসীম দুঃখ যন্ত্রণার পেষণে তার আর সে বিশ্বাস ও নেই । * শিশুপুত্র এসে মমতার ভিজে কাপড়ের উপরই ঝাপিয়ে পড়ল। “মা একটা পয়ছ। দাও --বাছী কিনব।” কন্যা এক টুকুরো ভাঙা শ্লেটে কাটাকুটি খেলবার ঘর একে ডাকল,—“ভাইটি খেলবি আয়, মার পয়সা নেই চেও না।” ছেলে শুনল না, কচি কচি ছোট ছোট দুটি হাতে মমতার মুখ তুলে ধরে বলল, “দা ও ন মা, দুতি পায়ে পলি ।” মমতা চোখ মুছে বলল,”পয়সা নেই বাবা, আজ থাক আর মথে হবে । প্রাণের দাবী 8ぬ9 AMMAMAAA AAAA ASASASA AAA একদিন কিনো।” “ন মা, আজকেই দাও।” সংসারঅনভিজ্ঞ মহা-আবদারে শিশু আঁচল ধরে টানাটানি করতে লাগল । মমত ডাকূল, “শিউলি!”—“কি ম৷ ” “বাক্সট একবার ভাল করে খুজে দেখত মা, যদি পয়সা থাকে”—মেয়ে মুখের উপর হতে এক ঝণকড়া চুল সরিয়ে দিয়ে বলল, “কোথায় খুজব ? সকালেই ত দুবার খুঁজলাম মুড়ি আনব বলে ; তা একটি ও পয়সা পেলাম না ।” একটা দীঘশ্বাস মোচন করে খোকাকে শাস্ত করবার জন্য মমতা উঠে পড়ল । বেল বাড়তে লাগল, স্বামীর দশন নেই । সেই যে কাল বেরিয়ে গিয়েছেন এখনও আসেন নি। শুকনো মুখে কাছে দাড়িয়ে মেয়ে কুষ্ঠিতভাবে বলল, “ভারি ক্ষিদে পেয়েছে মা শ” ধেন ক্ষিধে পাওয়াটা তার একট। বিযম অপরাধ ! ছয় বৎসরের মেয়ে তবু মার অবস্থাটা বেশ ভাল রকমই বোঝে। কোলের ছেলে কেঁদে কেঁদে কাধের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ল । কন্তু তৃতীয়বার ঢুলঢাকা চাদের মত মুখখানি মলিন করে পাশে দাড়িয়ে । হাতে একটি পয়সা নেই যে ক্ষুধাৰ্ত্ত কন্যার হাতে তুলে দেওয়া যায় । ঘরে একটি কণাও চল নেই । এসব চিরাভ্যস্ত অভাব তার গা-সহাপ্রায় হয়ে গিয়েছিল। তবুও আজ যেন একেবারেই নিরুপায় সে । নিজের সর্বস্ব বিক্রী করেছে সে এদেরই খাওয়া-পরার জন্য । কোনো সম্বল নেই। সাহায্য করবারও আজ কেউ নেই । অথচ—যাক্‌--। কন্যা আবার বলল, “মা বডড ক্ষিদে পাচ্ছে যে ।” খোকাকে মাদুরে শুইয়ে দিয়ে মমতা বলল, “একট। কাচা পেয়ার আছে, এখন খা । পরে ভাত রে ধে দেব।” কবে কার বাড়ির প্রসাদী চরণামৃতের সঙ্গে দেওয়া একটা শুকনে কালো কঁাচ পেয়ারা বের করে এনে পরম উল্লাসে কন্য। তাই খেতে লাগল। আর স্তব্ধ কালবৈশাখীর আকাশের মত নিস্পন্দ নিৰ্ব্বাক হয়ে বসে বসে মমতা তাই দেখতে লাগল। ডিজে কাপড় গায়ে শুকিয়ে উঠল। মাথার চুল