পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অপরাজিত শ্ৰীবিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় Ꮌ ☾ ছাত্রীকে পড়াইতে যাইবার সময় অপুর গায়ে যেন জর আসে, ছুট-ছাটার দিনট না যাইতে হইলে সে যেন বাচিয়া যায়। অদ্ভুত মেয়ে ! এমন কারণে-অকারণে প্রভুত্ব জাহির করার চেষ্টা, এমন তাচ্ছিল্যের ভাব—এই রকম সে একমাত্র অতসী-দি’তে দেখিয়াছে। একদিন সে ছাত্রীর একটা রূপ-বাধানে পেন্সিল হারাইয়া ফেলিল, পকেটে ভুলিয়া লইয়া গিয়াছিল, কোথায় ফেলিয়াছে, তারপর আর কিছু খেয়াল ছিল না, পরদিন পাতি সেট চাহিতেই তাহার তো চক্ষুস্থির। সঙ্গচিতভাবে বলিল—কোথায় সে হারিয়ে ফেললাম - কাল বরং একটা কিনে— পীতি অপ্রসন্ন মুখে বলিল, ওটা আমার দাদুমণির দেওয়া বাথ ডে গিফট ছিল— ইহার পর আর কিনিয়া আনিবার প্রস্তাবট। উত্থাপিত করা যায় না, মনে মনে ভাবিল, কাল থেকে ছেড়ে দেবে— এখানে আর চলবে না। কি একটা ছুটীর পরদিন সে পড়াইতে গিয়াছে, পতি জিজ্ঞাস করিল কাল যে আসেন নি ? অপু বলিল, কাল ছিল ছুটির দিনট—তাই আর অসিনি। গীতি ফট্‌ করিয়া বলিয়া বসিল -- কেন, কাল তো আমাদের সরকার, বাইরের হজন চাকর, ড্রাইভার সব এসেছিল ? আমার পড়াশুনে। কিছু হ’ল না, আজ ডিটেন করে রাখলে পাচট অবধি । অপুর হঠাৎ বড় রাগ হইল, দুঃখও হইল। খানিকক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া বলিল, আমি তোমাদের সরকার কি রাধুনী ঠাকুর তো নই প্রতি ? কাল স্কুল-কলেজ সবু বন্ধ ছিল, এজন্যে ভাবলাম আর যাব না। আমার যদি ভুলই হয়ে থাকে—তোমরা সেই রকম মাষ্টার রেথে যিনি এখানে বাজার-সরকারের মত থাকবেন আমি কাল থেকে আর আসবে না বলে যাচ্ছি । N:)8-—-8 بيعته বাটীর বাহিরে আসিয়া মনে হইল দেওয়ানপুরের নিৰ্ম্মলাদের কথা। তাহারাও তে অবস্থাপন্ন, তাহাদের বাড়ীতেও তে। সে প্রাইভেট মাষ্টার ছিল, কিন্তু সেখানে সে ছিল বাড়ীর ছেলের মত—নিৰ্ম্মলার মা দেখিতেন ছেলের চোখে, নিৰ্ম্মল! দেখিত ভাইয়েব চোখে—সে স্নেহ কি পথেঘাটে স্থলভ ? মিৰ্ম্মলার মত মমতাময়ীকে তখন সে চিনিয়াও চেনে নাই, আজ নতুন করিয়া তাহাকে আর চিনিয়া লাভ কি ? অার লীল ? সে কথা ভাবিতেই বুকের ভিতরটা যেন কেমন করিয়া উঠিল—যাক সে-সব কথা । হাতের টাকায় কিছুদিন চলিল। ইতিমধ্যে কলেজে একটা বড় ঘটনা হইয় গেল, প্রণব লেখাপড় ছাড়িয়া দেশের নাকি কি কাজ করিতে চলিয়া গেল। সকলে বলিল, সে এনাকিষ্ট দলে যোগ দিয়াছে । প্রণব চলিয়া যাওয়ার মাসখানেক পরে একদিন অপু হোটেলে খাইতে গিয়া দেখিল মুনরি-ঠাকুর হোটেলওয়ালার মুখ ভার ভার। দু-তিন মাসের টাকা বাকী, হাতে মতদিন ছিল দিয়াছে, তারপর বার বার তাগাদ সত্বেও শোধ দিতে পারে নাই। পাওনাদার আর কতদিন শোনে ? আজ সে স্পষ্ট জানাইল দেন শোধ না করিলে আর সে থাইতে দিতে পরিবে না । বলিল, বাবু অন্য খদের হ'লে মাসের পয়লটি যেতে দিই নে—ওই কৃষ্টোবাবু থায়, ওদের পাটের কলের হগুটি পেলে দিয়ে দেয়--তুমি ব’লে আমি কিছু বলেচি না—দু-মাসের ওপর আজ লিয়ে সাত দিন । যাক আমি আর পারবে না, আপুনি আর আসবেন ন—আমার ভfত একজন ভদর নেকের ছেলে পেয়েচে ভাব বো, আর কি করবো ? কথাগুলি খুব স্যায্য এবং আদৌ অসঙ্গত নয়, কিন্তু থাইতে গিয়া এরূপ রূঢ় প্রত্যাখ্যানে অপুর চোখে জল আসিল । তাহার তে একদিনও ইচ্ছা ছিল না যে,