পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○ > ● AMSAMSMMAMJSAMAMA AMMeAA ASASASA AAAAAS SAAAAAMMAAAA প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড বাড়ী নাই, সে দালানের বেঞ্চিতে একাটি বসিয়া একখান! এস্ রায়ের ক্যাটালগ নাড়িয়া চাড়িয়া দেখিবার ভাণ করিল। এই বইখানার মধ্যেই একখানা বিবাহের প্রতিউপহার পাইল, হাতে লইয়া বিস্ময়ের সহিত দেখিল সেখান সুরেশের বিবাহের দরুণ অতসী-দি দিতেছে সুরেশ-দাকে । সে দুঃখিতও হইল, আশ্চৰ্য্যও হইল, মাত্র মাসখানেক আগে বিবাহ হইয়াছে, সুরেশ-দা তাহার ঠিকানা জানে, সবই জানে, অথচ কি জেঠাইম, কি সুরেশ-দা কেহই তাহাকে জানায় নাই ! ‘ন যযৌ ন তস্থে অবস্থায় বেলা সাড়ে দশট। পৰ্য্যন্ত বসিয়া থাকিয় সে জেঠাইমার কাছে বিদায় লইয়া চলিয়া আসিল, জেঠাইম। নিলিপ্ত, অন্যমনস্ক সুরে বলিল— আচ্ছা ত'এসো-খাকৃ, থাকৃ—আচ্ছা । ফুটুপাথে নামিয়া সে ইপি ছাড়িয়া বাচিল । মনে মনে ভাবিল স্বরেশ-দার বিয়ে হয়ে গিয়েচে ফাল্গুন মাসে, একবার বললেও না ...অথচ আমাদের আপনার লোক--- আজ দ্যাখে। ন নববর্ষের দিনটা খেতেও বললে না— খানিক দূরে আসিতে আসিতে তাহার কেমন হাসিও পাইল। আচ্ছা যদি বলতাম, জেঠিম! আমি এথানে এবেলা থাবো তা হ’লে—হি হি-তাহলে কি হোত ! বাসার কাছে পথে সুন্দর-ঠাকুর হোটেলওয়ালার সঙ্গে দেখা । দু-দুবার নাকি সে অপুর বাসায় গিয়াছে, দেখা পায় নাই, আজ পয়লা বৈশাখ, হোটেলের নতুন খাতা—টাকা দেওয়৷ চাই-ই। সুন্দর-ঠাকুরের চড়া চড় কথায় পথে লোক জুটিয়া গেল—পথে দাড়াইয়। অপদস্থ হওয়ার ভয়ে সে কোথা হইতে দিবে বিন্দুবিসর্গ না ভাবিয়াই বলিল, বৈকালে নিশ্চয়ই সব শোধ করিয়া দিবে । - বৈকালে একটা বিজ্ঞাপনে দেখিল কোন স্কুলে একজন ম্যাটিকুলেশন পাশ-করা শিক্ষক দরকার, টাটুকা মারিয়৷ দিয়া গিয়াছে, এখনও কেহ ঠিকানাট ছেড়ে নাই । খুজিয়া তখনি বাহির করিল, মেছুয়াবাজারে একটা গলির মধ্যে কাহাদের ভাঙা বাড়ীর বাহিরের ঘরে স্কুল— অপার প্রাইমারী পাঠশালা। জনকতক বৃদ্ধ বসিয়া দাবী খেলিতেছেন, একজন তাহার মধ্যে স্কুলের না কি হেড, মাষ্টার। অঙ্কের শিক্ষক...দশটাকা মাহিনী...বাজার যা তাতে ইহাই যথেষ্ট—ইত্যাদি । অপুর মন বেজায় দমিয়া গেল। এই অন্ধকার স্কুলঘরটার দারিদ্র্য, এই ত্রিকালোৰ্ত্তীর্ণ বৃদ্ধগণের মুখের একটা বুদ্ধিহীন সন্তোষের ভাব ও মনের স্থবিরত্ব, ইহাদের সাহচৰ্য্য হইতে তাহাকে দূরে হঠাইয়া লইতে চাহিল। যাহা জীবনের বিরোধী, আনন্দের বিরোধী, সৰ্ব্বোপরি তাহার - অস্থিমজ্জাগত যে রোমান্সের তৃষ্ণ তাহার বিরোধী, অপু সেখানে একদণ্ড তিষ্ঠিতে পারে না । ইহার বৃদ্ধ বলিয়া যে এমন ভাব হইল অপুর তাহা নয়, ইহাদের অপেক্ষাও বৃদ্ধ ছিলেন শৈশবের সঙ্গী নরোত্তম দাস বাবাজি । কিন্তু সেখানে সদাসৰ্ব্বদা একটা মুক্তির হাওয়া বহিত, কাশীর কথকঠাকুরকেও এইজন্যই ভাল লাগিয়াছিল। অসহায়, দরিদ্র বৃদ্ধ একটা আশা-ভরা আনন্দের বাণী বহন করিয়া আনিয়াছিলেন তাহার মনে—যেদিন জিনিষপত্র বাধিয়া সে হাসিমুখে নতুন সংসার বাধিবার উৎসাহে রাজঘাটের ষ্টেশনে ট্রেনে চড়িয়া দেশে রওনা হইয়াছিলেন। স্কুল হইতে যখন সে বাহির হইল, বেল প্রায় গিয়াছে। তাহার কেমন একটা ভয় হইল—এ ভয়টা এতদিন হয় নাই । না খাইয়া থাকিবার বাস্তবতা ইতিপূর্বে এ ভাবে কখন নিজের জীবনে সে অনুভব করে নাই—বিশেষ করিয়া যথন এখানে থাইতে-পাওয়া নির্ভর করিতেছে নিজের কিছু একটা খুজিয়া বাহির করিবার সাফল্যের উপর । কিন্তু তাহার সকলের চেয়ে দুর্ভাবনা মায়ের জন্য—একট পয়সা সে মাকে পাঠাইতে পারিল না, আজ এতদিন মা পত্র দিয়াছে—কি করিয়া চলিতেছে মায়ের ! -- কিন্তু এখানে তো কোনো কিছুই আশা দেখা যায় না—এত বড় কলিকাত সহরে, পাড়াগায়ের ছেলে, সহায় নাই, চেনাশোনা নাই, সে কোথায় যাইবে—কি করিবে ?. পথে একটা মাড়োয়ারীর বাড়ীতে বোধ হয় বিবাহ । সন্ধ্যার তখনও সামান্য বিলম্ব আছে, কিন্তু এরই মধ্যে