পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] আলাপ জমিল । সাতারেরই গল্প। কথায় কথায় প্রকাশ পাইল তিনি ইউরোপ ও আমেরিকার বহুস্থান ঘুরিয়াছেন । অপু কৌতুহল দমন করিতে না পারিয়া র্তাহার নাম জিজ্ঞাসা করিল। ভদ্রলোক বলিলেন—আমার নাম বসু মল্লিক— অনেক দিনের একটা কথা অপুর মনে পড়িয়া গেল, সে সোজা হইয়া বসিয় তাহার মুখের দিকে চাহিল। কিছুক্ষণ চপ করিয়া থাকিয়া বলিল— আমি আপনাকে চিনি, আপনি অনেক দিন আগে বঙ্গবাসীতে ‘বিলাতযাত্রীর চিঠি লিখতেন । —ই-ই- ঠিক, সে দশ এগারে বছর আগেকার কথা— তুমি কি করে জানলে ? পড়তে ন কি ? —৪, শুধু পড়তাম না, ই কারে বসে থাকৃতাম কাগজখানার জন্তে—তখন আমার বয়েস বছর দশ– পাড়াগায়ে থাকৃতাম--কি আপনার লেগ থেকে . ভদ্রলোকটি ভারি খুশী হইলেন। কি করে, কোথায় থাকে জিজ্ঞাসা-বাদ করিলেন। বলিলেন, দ্যাথো কোথায় বসে কে লেপে তার কোথায় গিয়ে তার বীজ উড়ে পড়ে – বিলেতে হ্যাম্পষ্টেডের একটা বোর্ডিংয়ে বসে লিখতাম, আর বাংলায় এক obscure পাড়াগায়ের এক ছোট ছেলে আমার লেখা পড়ে—-বাঃ বাঃ– ভদ্রলোকটির ব্যবসা-বাণিজ্যে খুব উৎসাহ দেখা গেল । মাদ্রাজে সমুদ্রের ধারে জমি লইয়াছেন, নারিকেল ও ভ্যানিলার চাষ করিবেন । তেরো বৎসরের নিগ্রে বালককে নিঃসম্বলে ইউরোপে আসিয়া নিজের উপজ্জন নিজে করিতে দেথিয়াছেন—দেশের যুবকদের চাষবাস করিতে উপদেশ দেন । ভদ্রলোকটিকে আর অপুর অপরিচিত মনে হইল না। তাহার বাল্যজীবনের কতকগুলি অবর্ণনীয় আনন্দমুহূৰ্ত্তের জন্য এই প্রৌঢ় ব্যক্তিটি দায়ী, ইহারই লেখার ভিতর দিয়া বাহিরের জগতের সঙ্গে সে আনন্দ-ভরা প্রথম পরিচয়—সেই ধূমায়মান ভিস্বভিয়াস, বীর-প্রসবিণী কর্সিকা, পল্লীবালা জোয়ান, সঙ্গে সঙ্গে ওদের সঙ্গে জড়িত সুরেন্দ্রনাথ inspiration CR (ofwEf N অপরাজিত SAAAAAA AAAAMAAA SAAAAA AAAA AAAA AAAAMASAMAMMA AMASAAMAMMMAMAeeMiAAMAMMMMMAAAM MMAMMMMAMAMAMeMMMAMMMMAeMMMAMMMMAMAAMAMMAMMMMMMMAMMMMMMMMMMMMMM MMMMMMMMMeMA AMMAeSeS Q)Q সেই ইছামতী, ওপারে মাধবপুরের ঘন সবুজ উলুখড়ের মাঠ, দিগম্বর পাটনির ভাঙা থেয়ার ডিঙিথান । সম্পূর্ণ নতুন ধরণের উৎসাহ লইয়া সে ফিরিল । কে জানিত বঙ্গবাসীর সে লেখকের সঙ্গে এভাবে দেখা হইয়া যাইবে ...শুধু বাচিয়া থাকাই এক সম্পদ, তোমার বিন চেষ্টাতেই এই অমুতময়ী জীবনধারা প্রতি পলের রসপাত্র পূর্ণ করিয়া তোমায় অন্যমনস্ক, অসতর্ক মনে অমৃত পরিবেশন করিবে. সে সে করিয়া হউকু বাচিবে । (بالا) অনেকদিন পরে মনসাপোত খুব ভাল লাগিল, পথের প্রত্যেক গাছপালা যেন কত কালের পুরাতন পরিচিত সাথী, উল ষ্টেশন হইতে হাটাপথে - ক্রোশ-চারেক, গহনার নৌকাতেও রাণাঘাট হইতে আসা যায় বটে, কি স্তু এই পথটাই সুবিধ । অপু ভাবে, “এইবার সেই তেঁতুল গাছটা', এইবার কাটাদ’র মিত্তির বাড়ীর অশথ গাছটা দেখা যাবে। সন্ধ্যা ঠিক হয় নাই, উঠানে তেলী-বাড়ীর বড়-বেী দাড়াইয়া কি গল্প করিতেছিল, দূর হইতে অপুকে আসিতে দেখিয়া হাসিমুখে বলিল– কে আস্চে বলুন তো মাঠাকুরুণ ? সৰ্ব্বজয়ার বুকের ভিতরটা কেমন করিয়া উঠিল, অপু নয় তো ! অসম্ভব—সে এখন কেন— পরক্ষণেই সে ছুটিয়া আসিয়া অপুকে বুকের ভিতর জড়াহয় ধরে । সৰ্ববজয়ার চোথের জলে তাহার জামার হাতটা ভিজিয়া উঠিল । মাকে ধেন এবার নিজের অপেক্ষ মাথায় ছোট দুৰ্ব্বল ও অসহায় বলিয়া অপুর মনে হইতে লাগিল । তপঃকৃশ শবরীর মত ক্ষীণাঙ্গী, আলুথালু অৰ্দ্ধরুক্ষ চুলের গোছা একদিকে পড়িয়াছে, মুখের চেহার এখনও সুন্দর, গ্রীব ও কপালের রেখাবলী এখন অনেকাংশে ঋজু ও স্বকুমার । তবে এবার মায়ের চুল পাকিয়াছে, কানের পাশের চুলে পাক ধরিয়াছে। নিজের সবল দৃঢ় বাহুবেষ্টনে সরল, চিত্রদুঃখিনী মাকে সংসারের সহস্ৰ দুঃখাবপদ হইতে বাচাইয়া রাখিতে অপুর ইচ্ছা যায়। এভাবটা এইবার প্রথম সে মনের মধ্যে অনুভব করিল, ইতিপূৰ্ব্বে কখনও হয় নাই ।