পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] سہلا ب ’’مم* جب ھ۔ --م-rد তাহাকে মুগ্ধ করিবার জন্যই ত মায়ার জন্ম হয় নাই ? জগতে কত কাজ হয়ত তাহার জন্ত পড়িয়া আছে। এই কথা মনে হইতেই তাহার প্রভাসের কথা মনে পড়িল । স্কুল-করা বিষয়ে মায়া এখন পৰ্য্যস্ত ত কিছু স্থির করিয়া উঠিতে পারিতেছে না। সাবিত্রীর এ সকল বিষয়ে খুব যে সহানুভূতি ছিল, তাহ মনে হয় না। অথচ জনহিতের দিক দিয়া দেখিতে গেলে, স্কুলটাই গ্রামের পক্ষে সব চেয়ে প্রয়োজনীয়। প্রভাসকে বিস্তৃত ভাবে চিঠি লিখিয় সব বিষয় আলোচনা করা মায়ার উচিত ছিল রেজুন যাইবার আগেই, কিন্তু কিছুই সে করে নাই। স্কুলের জন্য কত টাকা লাগিবে, সেটা এক সঙ্গে লাগিবে, না বারে বারে দিলেও চলিবে, এ সব কথাও ভাল করিয়া জানিয়া গেলে হইত। নিরঞ্জনকে ন জানাইয় শেষ অবধি চলিবে কি না, তাই-বা কে জানে ? নানা কথা ভাবিতে ভাবিতে মায়। নীচে নামিয়া গেল । মাঝের দিনট যাত্রার আয়োজনেই কাটিয় গেল । মায় একটি মাত্র মাকুম, কিন্তু নিজের এবং বাণীর জন্য জিনিষ যাহা জুটাইয়াছিল, তাহা গুছাইতেই তাহার প্রাণ বাহির হইবার জোগাড় হইল। বিজয় বলিল, “একট। কেবিনে ধরবে বলে ত মনে হচ্ছে না, আর একটার জন্যে লেখ ।” বাড়ীতে বড় ছেলে একমাত্র বিজয়, সে-ই মায়াকে জাহাজে তুলিয়া দিতে চলিল। জয়ন্তী আসিবে বলিয়াছিল, সেও আসিতে পারিল না, তাহার কোলের মেয়েটির সর্দিজর হইয়াছে। বিজয় হাজার হইলেও ছেলেমানুষ, এ সব কৰ্ম্মে বিশেষ অভ্যস্ত নয় ; মায়ার ভাবনা হইতেছিল, জাহাজঘাটের হাজার হাঙ্গামী বঁাচাইয়া সে মায়াকে ঠিক উঠাইয়া দিতে পারিবে কি না । অন্যান্য বারে নিরঞ্জন সঙ্গে থাকেন, তাহাকে কিছুই ভাবিতে হয় না । ঘাটে পৌছিতেই দেখা গেল, শিবচরণবাবু এবং দেবকুমারও সেই মাত্র আসিয়া পৌছিয়াছেন, জিনিষপত্র নামানো হইতেছে। দেবকুমারের জিনিষই বেশীর ভাগ, ইউরোপের বিভিন্ন দেশভ্রমণের ছাপ মারিয়া তাহার বিচিত্র রূপ ধারণ করিয়াছে। শিবচরণবাবুর জিনিষের ۹ -سسس ۹ وا ৫২৯ মধ্যে ছোট একটি ট্রাঙ্ক, এবং সতরঞ্চিতে জড়ানো বিছানা । জলের কুজা এবং বেতের প্যাটরাও আছে বোধ হইল। অর্থব্যয় সম্বন্ধে বৃদ্ধ সৰ্ব্বদাই অত্যন্ত সতর্ক, কখনও ডেক্‌ ভিন্ন কেবিনে যাতায়াত করেন না। এবারে ছেলে সঙ্গে থাকায় কিছু বিপদে পড়িয়াছেন। দেবকুমার যেরকম সাহেব হইয়া আসিয়াছে তাহাকে ডেকে যাইবার কথা বলাও যায় না, অথচ পুত্র কেবিনে গেলে, পিতা ডেকে যাইবেন, ইহাও হয় না । সুতরাং দুজনের জন্যই সেকেণ্ড ক্লাসের টিকিট করিতে হইয়াছে। জাহাজঘাট তখন লোকে লোকারণ্য । যাত্রী, যাত্রীর বন্ধু, কুলি এবং জাহাজঘাটের অন্যান্য লোক মিলিয়া এমন একটা বিরাট জনতার স্থষ্টি হইয়াছে যে, তাহার ভিতর দিয়া যাওয়ার কথা ভাবিতেও ভয় হয় । থার্ড ক্লাসের যাত্রীগুলি নিজেদের পোটলপুটলি সব নিজেরাই বহন করিয়া আনিয়াছে, এবং আগেভাগে কাঠগড়া পার হইয়া ষ্টীমারে উঠিবার জন্য এমন ভীষণ ঠেলাঠেলি আরম্ভ করিয়াছে যে, সেদিকে, স্ত্রীলোক কেন, কোনো ভদ্র পুরুষ মানুষেরও যাওয়া প্রায় অসম্ভব । মায়া ট্যাক্সি হইতে নামিয়া বলিল, “কি রে বিজয়, আজ শেষ অবধি উঠতে পারব বলে মনে হচ্ছে ?” বিজয়ের নিজেরও সে বিষয়ে একটু যে সন্দেহ না হইতেছিল এমন নয়, তবু মুখে খুব সাহস দেখাইয়া বলিল, “না, পারবে কি আর, এইখানেই থেকে যাবে । আপাততঃ কুলি ডাকিয়ে, জিনিষপত্রগুলো ত নামান যাক ৷” কুলি ডাকিবার কোনোই প্রয়োজন ছিল না, গাড়ী থামিবামাত্র যে পরিমাণ কুলি আসিয়া তাহার উপর হুমড়ি খাইয়া পড়িল, তাহারা এক হাজার যাত্রীর মাল স্বচ্ছন্দে বহন করিতে পারিত। মায়া ব্যস্ত হইয়া বলিল, “বিদায় কর, বিদায় কর, একটা কি দুটোকে রাখ, এখনি টানাটানি করে অৰ্দ্ধেক জিনিষ নষ্ট করে ফেলবে ।” এমন সময় পিছন হইতে কে যেন বলিল, “আপনি ভীড় থেকে বেরিয়ে আস্বন, জিনিষপত্রের ব্যবস্থা আমি করছি। বাবা ঐদিকে বসে আছেন, তার কাছে বস্বেন চলুন।”