পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

む○。 সুকৌশলে, অনেক সাধারণ সামান্য ব্যবহারের জিনিষ— এমন একটা নুতন ঐ ও দিব্য-মহিমা মণ্ডিত হয়ে উঠে, যাহার স্পর্শ পেয়ে এই সাধারণ ব্যবহারের উপকরণগুলি একটা নূতন আকর্ষণ ও মূল্য’ লাভ করে। যে-সব শিল্পজাত দ্রব্য এই সৌন্দর্য্যের স্পর্শ হতে বঞ্চিত, বেচা-কেনার হাটের প্রতিযোগিতায় তারা চিরকাল পিছিয়ে পড়ে থাকে । এইজন্য পাশ্চাত্য দেশে শিক্ষা ও ব্যবসায়-ক্ষেত্রে –‘কারু-শিল্পে কলা-কৌশলের &IClios” (application of art to industry) Hoo নানা আলোচনা ও ঘোষণা সৰ্ব্বদাই শোনা যায়। বিদেশের মনীষীর। অনেকদিন স্বীকার করে নিয়েছেন, যে, কলা-বিহীন কারু-শিল্প পশুত্বেরই নামান্তর (industry without art is brutality) aroit:-3so দিক দিয়ে এটা খুব সত্য কথা যে, যে-জিনিষে কলাকৌশলের ছাপ আছে বিশ্বের বেচা-কেনার হাটে তার বাজার-দর খুব বেশী। জাপানের অতি তুচ্ছ জিনিষ, জাপানের জাতীয় কলার কল্যাণ-টীকা কপালে নিয়ে, যুরোপ ও আমেরিকার বাজারে প্রতিযোগিতায় সফল হয়ে, প্রতিষ্ঠা-লাভ করেছে। পক্ষাস্তরে ভারতের শিল্পজাত দ্রব্য রূপের সৌন্দর্য্যে হীন হয়ে দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে। আমাদের দেশের কারুশিল্প আবার কলা-লক্ষ্মীর কল্যাণ স্পর্শ না পেলে, এই প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে আপনার স্থান অধিকার করতে পারবে না। সুতরাং অর্থকরী শিল্পের ক্ষেত্রেও, কলা-লক্ষ্মীর আরাধন ও সৌন্দর্য্য-বুদ্ধির সাধনার একান্ত আবশ্যক হয়েছে । অবশ্য শিল্প-সাধনার এক ক্ষেত্রে নবীন-ভারত অনেকটা সম্মান ও প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। এটা হ’ল, চিত্র-কলা-বিদ্যার নানা নবীন প্রচেষ্টা । শ্ৰীযুক্ত অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়ের নায়কতায় বাংলা দেশের নবীন শিল্পীরা নব-পৰ্য্যায়ের নবীন চিত্র-শিল্পে একটা নূতন প্রাণের স্পন্দন ও নব-জাগরণের উদ্বোধন এনে দিয়েছেন। এই প্রচেষ্টা বহু প্রতিভাবান শিল্পীর সাধনা ও সাহায্য পেয়ে কয়েক বৎসরের মধ্যে যথেষ্ট সাফল্য ও প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। দেশে ও বিদেশে বাংলার নবীন শিল্পীদের চিত্ৰপট যথেষ্ট আদর ও সম্মানে অভিনন্দিত প্রবাসী-শ্রাবণ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড AMAeMA SAMAAA SAAAAA হয়েছে। বাংলার নবীন শিল্পীরা প্রমাণ করেছেন যে, শিল্পের ক্ষেত্রে নবীন-ভারতের এমন অনেক কথা বলবার আছে—যে কথা, যে বার্তা পশ্চিম-দেশের গুরুদের বিদ্যাপীঠের ‘শেখ-বুলির প্রতিধ্বনিমাত্র নহে । ভারতের নিজস্ব সাধনার ভাণ্ডার যে এখনও শূন্ত হয় নাই সাহিত্যক্ষেত্রে সে-কথা প্রমাণ করেছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ, চিত্রশিল্পের ক্ষেত্রে সে কথা প্রচার করছে• আচার্য্য অবনীন্দ্রনাথ । বাংলার নবীন-শিল্প-সাধনার বিশেষত্র এই, যে, বাংলার নবীন-সাহিত্যে পশ্চিম-দেশের যে প্রভাব ও প্রতিপত্তি জাজ্জল্যমান রয়েছে, বাংলার নবীন-চিত্র-শিল্পে তাহার বিশেষ কোনও চিহ্নই পাওয়৷ যায় না। এই নিজস্ব ব্যক্তি-স্বাতন্ত্র্য,– এই স্বারাজ্যের জয়টীকা বাঙ্গালীর চিত্র-শিল্পের বড় গৌরবের কথা । এই নবীন শিল্প-সাধনার আর একটা দিক আছে । সেটা হ’ল কাজের পর্য্যায়, বা অর্থকরী বিভাগ । আমাদের বিশ্ব-বিদ্যালয়ের শিক্ষিত যুবকের অর্থ-উপার্জনের নান। ক্ষেত্রে প্রবেশ চেষ্টায় কি পরিমাণ বিপৰ্য্যস্ত লাঞ্ছিত ও পরাজিত হচ্ছেন, তা এই অর্থসঙ্কট ও অন্নসঙ্কটের দিনে কাহারও অবিদিত নাই। দেশের চাকরীর’ বাজার ও ব্যবসায়-কারবারে গ্রাজুয়েটের মূল্য’ কি, তার কথা প্রকাশ্বে বলতে অনেকের লজ্জা করে । কিন্তু স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীতে যাদের প্রবেশলাভ ঘটেনি, এমন অনেক 'নিরক্ষর’ বাঙ্গালী শিল্পী শিল্পের অক্ষর শিখে, বাংলার নবীন-শিল্প-সাধনার ক্ষেত্রে সিদ্ধিলাভ করে অনেক গ্রাজুয়েটের চেয়ে বেশী উপার্জন করেছেন ও করছেন। অবশ্য সকলের ভাগ্যে লক্ষ্মীর অনুগ্রহ লাভ সমানভাবে ঘটেনি। কিন্তু সকলেই প্রায় প্রমাণ করতে পেরেছেন, যে, ভারতের শিল্পের ক্ষেত্রে একটা নূতন উপার্জনের পথ আবিষ্কৃত হতে পারে। সকলে মিলে ঐ একই ‘লিখিত পঠিত বিদ্যার সংকীর্ণ ক্ষেত্রে নিস্ফল প্রতিযোগিতা না করে শিল্পের নূতন ক্ষেত্রে অর্থ-উপার্জনের স্বযোগ খুজে নিতে পারেন, এ কথাটা যে আংশিকভাবে সত্য তাহ প্রমাণ হয়েছে। ভারতের চিত্রশিল্পে কৃতিত্ব লাভ করে দুচারজন বাঙ্গালী যুবক এমন সব উচ্চ-বেতনের পদ পেয়েছেন, যে, সে-সব পদ অনেক M. A. এবং P, R, S.