পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ? ঝুলছে, আর কিচির-মিচির করছে ; দুচারটে উড়ে বেড়াচ্ছে, এদিক ওদিক ক’রছে ; আর গুহাটি ভীষণ নোংরা আর দুর্গন্ধ । মন্দিরের অন্য গৃহ গুলি খালি পড়ে আছে, বেমেরামতী অবস্থায় ; মন্দিরের ঘাস আগাছা আবর্জনাও পরিষ্কার করা নেই। শুনলুম, এদেশের মন্দিরগুলি সাধারণতো এই রকমই প’ড়ে থাকে, বহু মন্দিরে দেবমুৰ্বি থাকে না, দৈনিক দেব-সেবাও হয় না ; কেবল উৎসবের সময়ের মন্দির সাফ ক’রে সজ্জিত ক’রে দেবমূৰ্ত্তি বা দেবতার প্রতীক আনে, তখন খুব পূজার ঘট| লেগে যায়, আশপাশের গ্রাম থেকে বাদ্যভাণ্ড নৈবেদ্য খাদ্যদ্রব্য নিয়ে লোকেরা জমায়েত হয়—এদেশের মন্দিরের এইই হচ্ছে ব্যবহার বা সার্থকতা । বাদুড়-গুহা দেখে আমরা আবার সেই মনোহর দৃশ্বাবলীর মধ্য দিয়ে কারাঙ-আসেমের পুরীতে ফিরলুম, সাড়ে নট থেকে এগারোটা পৰ্য্যস্ত দেড় ঘণ্টা চমৎকার ভাবে কাঢ়ল । পুরীতে ফেরবার পরে রাজা তার পুরাতন প্রাসাদ দেখাতে আমাদের নিয়ে খেলেন। নোতুন প্রাসাদের সামনে, একটা সরু পথ দিয়ে ঢুকতে হ’ল । পুরাতন বলিদ্বীপীয় পদ্ধতির বাড়ীর একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ এই প্রাসাদটী। লাল ইটের দেয়াল, দেয়ালে বালী চুনকাম কিছু নেই ; মাঝে মাঝে একরকম নরম পাথর, তাতে খুব নকশা কাট—তাই দেয়ালে লাগানে আছে । আলাদা আলাদা দেয়াল দেওয়া কতকগুলি মহল । চার দিকে দেয়াল দিয়ে ঘেরা খানিকট সমতল জায়গ!, তার মধ্যে পৃথক পৃথক্ এক একটি কুঠরী, উচু দাওয় বা রোয়াক ব৷ চাতালের উপরে, সিড়ি দিয়ে উঠতে হয় প্রত্যেক চাতালের উপরে ; আর কুঠরীগুলির প্রত্যেকটর সামনে একটু ক’রে রোয়াক বা বারাণ্ডা। প্রত্যেক মহলে ঢোকবার জন্য উচু দরওয়াজ। একটা মহলকে বাগান বাড়ী বলা যায়। তিন্ন ভিন্ন মহলের ঘরগুলির বরান্দার দেয়ালে বলিদ্বীপীয় পদ্ধতিতে ছবি অঁাকা—নানা রঙীন ছবি, কাপড়ের উপরে একে দেওয়ালে লাগিয়ে দিয়েছে। দেব-দানবের যুদ্ধ, কৰ্ম্মবিপাক বা নরকের দৃপ্ত, অৰ্জুন-বিবাহ বা অৰ্জ্জুনের তপস্তা, কিরাতাঞ্জুনীয়, অর্জুনের পাশুপত অস্ত্রলাভ, দ্বীপময় ভারত نيسياc معجمعمیعے নিবাত-কবচ রাক্ষসের সঙ্গে অর্জুনের যুদ্ধ, স্বপ্রভা নামে অপারার সঙ্গে অর্জুনের বিবাহ–এই সব ব্যাপার নিয়ে ছবি । কোনও কোনও চাতালে ওঠবার সিড়ির দুপাশে দানবমূৰ্ত্তি আর কোথাও বা অন্য মুক্তি আছে, ঐ নরম পাথরের তৈরী। একটি ঘরের চাতালে সিড়ির উপর দুটি পদণ্ড বা ব্রাহ্মণ মূৰ্ত্তি আছে— বেশ একটুখানি caricature বা ব্যঙ্গময় ভাবে তৈরী। আমার একটা ধারণ হ’য়ে গিয়েছিল যে, পদগুরা সাধারণতো ততট স্বপুরুষ দেখতে হয় না— বলিদ্বীপের অন্ত সাধারণ পুরুদের তুলনায় পদণ্ডদের যেন একটু কুন্ত্রই বোধ হত। এর কারণ কি তা ব’লতে পারি না । পদগুদের দেহে ভারতের ব্রাহ্মণ-রক্ত কিছু বিদ্যমান আছে আহমন- করা যায়। তবে কি ভারতের ব্রাহ্মণ আর ইন্দোনেসীয় ব। মালাই বলিদ্বীপীয়—এই দুই জাতের মিশ্রণ দৈহিক সৌন্দর্য্যের পক্ষে উপযোগী হয় নি ? যবদ্বীপের অভিজাত শ্রেণীর মধ্যে ভারতীয় রক্ত যথেষ্ট বিদ্যমান, আর এদের অনেককে ভারতীয়দের থেকে পৃথক করা অনেক সময়ে দুষ্কর হয়ে পড়ে ; কিন্তু এর তো বেশ স্বপুরুষ। আর একটা জিনিস লক্ষ্য করলুম : বলিদ্বীপে যখনই পদগুদের ছবি অঁাকে বা মূৰ্ত্তি তৈরী করে, তখনই তাতে একটু বিকট ভাবের, একটু ব্যঙ্গ করার যেন ইঙ্গিত থাকে। এর বা কারণ কি তাও বুঝতে পারলুম না। ঘরগুলির কাঠের চালের বাতায়, থামের গায়ে আর মাথায়, আর জানাল দরওয়াজায় বেশ গোদাই কাজ আছে। একট প্রকোষ্ঠ দেখলুম ; বড়ে বড়ে চীনা ছবিতে ভৰ্ত্তি । ছবিগুলি বারীন্দায় দেয়ালে আর থামে টাঙানো। বেশীর ভাগই হাতে আঁকা চীনা সুন্দরীদের মুখের রঙীন ছবি । চীন প্রভাব সরাসরি চীন দেশ থেকে কিছু কিছু ইন্দোনেসিয়ায় এসে গিয়েছে, এদের শিল্পে, আর সঙ্গীতে। সমস্ত মহলগুলি পরিষ্কার ঝকঝকে তক্তকে অবস্থায় আছে ; তবে ঘরগুলিতে লোকজন বেশী থাকে ব’লে মনে হ’ল না। ঠিক একটি মহলে ঢোকবার সামনেই একটা ইটের দেয়াল দেখলুম ; দেয়ালটার ভিতর দিকে