পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

☾b~b• প্রদর্শক হ’য়ে দেখিয়ে আনবে। ঘণ্টা দুইয়ের মধ্যেই ফিরে আসবে অল্পমান ক’রে বেরুলুম। গায়ের বাইরে এসেই পৰ্ব্বত-সঙ্কল স্থানে একটা ছোটো নদী পেলুম— বেশ তোড়ের সঙ্গে চ'লেছে। নদীটার মাঝে চাবড়া চাবড়া পাথর প’ড়েছে, তার পাশ দিয়ে তর-তর শব্দে প্রচুর ফেনা আর জলের ছিটে তুলে নদী ছুটেছে। নদীর ধারে আর মাঝে চটান পাথরের উপরে বসে মেয়ের দল নাইছে, কাপড় কাচছে ; গ্রাম্য লোকে আস্তে আস্তে নদী পেরুচ্ছে, টাটু, পার করছে। চারিদিকে পাহাড়, আর ਚੌਂ পাহাড়ের গা কেটে কেটে ধানের ক্ষেত। নদী পেরুতে আমাদের ঝঞ্জাট হ’লন - আমাদের ধূতি মালর্কোচ ক’রে পর, জুতো খুলে হাতে ক’রে নিয়ে বেশ ওপারে গিয়ে উঠলুম। কিন্তু,বাকের, বাকে-পত্নীর আর দ্রেউএসএর হ’ল বিপদ ; জুতো খোলো, মোজা খোলো, পেণ্ট লেন, গোটাও, আবার ওপারে গিয়ে পা মুছে মোজা জুতো পরো । ত্রেউএস আর ধীরেন বাবু আগে আগে আমাদের সেথো বা পথ-প্রদর্শকের সঙ্গে সঙ্গে চ’লে গেলেন, আমি পিছনে বাকেদের সঙ্গে রইলুম। বেচারীরা বড় মুস্কিলে পড়ল, খানিক পরে পাহাড়ের গায়ে ধানের ক্ষেতের মধ্যে গিয়ে । ক্ষেতের আ’লের উপর দিয়ে যেতে হ’ল । আমার পক্ষে কোনও ঝঞ্চাট নেই-দিব্যি থালি পায়ে জুতো হাতে ক’রে আ’লের কাদার উপর দিয়ে যেতে লাগলুম ; বা দিকে একগোড়ালি আর কোথাও বা হাটুর কাছাকাছি পৰ্য্যস্ত জলে কাদায় ভর ধানের এক খর ক্ষেত, আর ডানদিকে তার চাইতে নীচু থর, হাত দুই আড়াই নীচু,–একটু পিছলে প’ড়লেই হয় এ-দিকে নয় ও-দিকে প’ড়ে জলে আর কাদায় অস্ততে হাটু পর্য্যস্ত মাখামাথি হ’য়ে যাবে, যদি আছাড় নাও খাই । ছিল—ছোটোখাটো লাঠি ব’ললেই হয়—বিন্ধ্যাচল থেকে আনা, বিজয়গড়ের বঁাশে তৈরী আর শিশির তেল রোদ্দ র আর রান্নাঘরের ধোয়ায় পাকানো,—পাহাড়ে বেড়াবার পক্ষে বেশ, বাকেদের সেটা দিলুম। কিন্তু তাতে কি হয়—কুচারুবায় বেচারীদের ক্ষেতের কাদায় গোড়ালী ডুবিয়ে নামতে হ’ল। ধানের ক্ষেতের আ’ল প্রবাসী—শ্রোবণ, ১৩৩৭ আমার হাতে একটি বেশ শক্ত বাশের ছড়ি । [ ৩eশ ভাগ, ১ম খণ্ড দিয়ে খানিক ক্ষণ গিয়ে আবার চড়াই,—আবার সেই পাৰ্ব্বত্য নদীটী ২/৩ বার প্যর হওয়া। এখানটায় পথটা একটু কষ্টকর, কিন্তু পাহাড়ে হাওয়ায় আর চমৎকার দৃষ্ঠে কষ্ট আমাদের ততটা লাগল না। প্রাকৃতিক সৌন্দৰ্য্য অতি সুন্দর। নদীটী উপল-বিষম অীকা-বাকা খাত দিয়ে ত্বরিতগতিতে চ'লেছে, কোথাও কোথাও বা বিশাল শিলা-খণ্ডে বাধা পেয়ে সফেন গর্জনের সঙ্গে সেই বাধাকে ঘিরে উপহাস ক’রে কাটিয়ে যেন নৃত্যছন্দে যাচ্ছে ; এক একটা শিলাস্তপ থাকায় নদীর গতিবেগকে যেন বাড়িয়ে দিয়ে আরও স্বন্দর করে তুলেছে। এস্থানে লোক-সমাগম কম ; অনেক ক্ষণ ধ’রে চ’লে চ’লে জন-মানবের সঙ্গে দেখা হয় না ; শুধু পায়ে-চলা পথ ধ’রে যাচ্ছি, কখনও কখনও দূরে উচু চড়াইয়ে অগ্রগামী বন্ধুদের দেখতে পাচ্ছি ; আর বাকে-দম্পতী কিঞ্চিং পশ্চাতে । এক জায়গায় নদী - শেষবার পেরোবার সময়ে নদী-গভস্থ প্রকাণ্ড গোলাকার একখণ্ড শিলা অতিক্রমণ ক’রেই দেখি, নদীরজল চারিদিকে শিলা-বেষ্টিত একটা স্বাভাবিক কুণ্ডের মত স্থলে জমা হয়ে চমৎকার একটুি স্নানাগারের স্থষ্টি ক’রেছে, আর সেখানে শিলাসনের ধারে আবক্ষ জলে স্নান-নিরত দুটা বলিদ্বীপের কন্যা ; বিস্ময়-বিহ্বল দৃষ্টিতে এরা আমার দিকে চেয়ে রইল- এদের চোখে আদিমযুগের, সত্যযুগের সারল্য , চকিতের মত আমার T মনে গ্ৰীক পুরাণোক্ত দেবকস্তাগণ সহ স্নাননিরত। কুমারী বনচারিণী দেবী আবৃতেমিস আর মৃগয়ার্থ বনে আগত শ্বগণ-পরিবেষ্টিত যুবক আক্তাইওন-এর কাহিনী মনে এলো। আমি নদী পার হতে হতেই বাকেদম্পতী সেখানে এসে পড়লেন, তাদের চোখেও প্রাচীন গ্রীক পুরাণের কল্পলোকের উপযুক্ত এই জীবন্ত চিত্রট এড়াল না । চড়াই উতরাইয়ের পথ ছেড়ে, একটা পাহাড়ের শ্রেণী এই ভাবে পেরিয়ে, আমরা খানিকটা সোজা পথ পেলুম। মাঝে একটা গ্রাম প’ড়ল, সেখানে লোকজনের . সঙ্গে দেখা হল। আশেপাশে খুব নারকেল গাছ ; আমাদের তেষ্টাও পেয়েছে ; কতকগুলি লোককে স্থানীয় লোক ব’লে মনে হল,— এরা আমাদের চারিদিকে ভীড় ক’রে