“গোল টেবিল” “রাউণ্ড টেবল বা “গোল টেবিল” জিনিষটা কি তাহা অাজকীলকার দিনে স্মরণ রাখা দরকার । কিম্বদস্তীতে ও কাব্যে অর্থার নামক ব্রিটেনের একজন ঐতিহাসিক বা অনৈতিহাসিক রাজার কাহিনী বর্ণিত আছে। “নাইট” বলিয়া পরিচিত র্তাহার বীর সহচরেরা যে টেবিল ঘিরিয়া বসিতেন,তাহ গোলাকার ছিল । টেবিলট গোলাকার করা হইয়াছিল এইজন্য, সে, তাহা বেষ্টন করিয়া যাহার বসিতেন, তাহীদের মধ্যে পদমর্য্যাদায় যে সকলেই সমান, উহার গোল আকৃতি দ্বারা তাহা স্থচিত হুইবে । “রাউণ্ড টেবল” বা গোল টেবিলের সহিত এই সামোর ভাব জড়িত থাকায় “রাউণ্ড টেবল কনফারেন্স” বা “গোল টেবিল বৈঠক” কথাটির ঠিক মানে, এরূপ একটি মন্ত্রণাসভা বা আলোচনাসভা, যাহার উভয় পক্ষের এবং প্রত্যেক সভ্যের মর্য্যাদা ও ক্ষমতা সমান, যাহাতে কোন পক্ষ বরদাতা প্রভু এবং কোন পক্ষ বরপ্রার্থী ভিক্ষুক রূপে উপস্থিত হয় না। ক্ৰয়ারের অভিধানেও ইহার মানে এই রূপ লেখা আছে :– “A conference between political parties in which each has equal authority, and at which it is agreed that the questions in disputes shall be settled amicably,” šjtfi t ভারতবর্ষের জন্য যাহারা পূর্ণস্বরাজ চাহিতেছেন, র্তাহারা ইংরেজ গবন্মেন্টের সহিত সমানে সমানে গোল. টেবিল বৈঠকে যোগ দিতে রাজী আছেন। র্যাহারা, নামতঃ ন হইলেও, কাৰ্য্যতঃ পূর্ণস্বরাজ. চান, র্তাহারাও গোল টেবিল বৈঠক চান। কিন্তু যাহারা ইংরেজের অনুগ্রহে যাহা পাওয়া যায়, তাহাই, ভিক্ষালব্ধ তণ্ডুলের মত, উৎকর্ষপকর্ষ বিচার না করিয়া, গ্রহণীয় মনে করেন, র্তীহাদের বিবেচনায় টেবিলট। গোল ন হইলেও চলিবে, , এমন কি তাহীদের মধ্যে অনেকে টেবিলের চারি পাশে উপবেশনের পরিবৰ্ত্তে কৃতাঞ্জলিপুটে দণ্ডায়মান থাকিতেও রাজী হইবেন । -. লণ্ডনের কনফারেন্স বিষয়ে বড়লাটের বক্তৃত৷ লগুনে যে ইঙ্গ-ভারতীয় কনফারেন্স হইবে, সম্প্রতি বড়লাটের এক বক্তৃতায় তাহার কিছু বর্ণনা আছে। কিন্তু ঐ বস্তৃতার কোথাও কনফারেন্সটিকে রাউণ্ড টেবিল কনফারেন্স বলা হয় নাই। বড়লাটের এই সত্যবাদিত প্রশংসনীয়। কিন্তু আমাদের দেশের অনেক তথাকথিত নেতা এই বক্তৃতার পরেও এই কনফারেন্সটাকে রাউণ্ড টেবিল কনফারেন্স বলিতেছেন । যাহারা আত্ম-প্রতারিত হইতে সৰ্ব্বদাই প্রস্তুত ও উন্মুখ, তাহাদিগকে সত্যের সম্মুখীন করিয়া দিলেও তাহদের ভূল ভাঙিয়া দেওয়া মুকঠিন । বড়লাটের বকৃত হইতে ধ্রুব কোন আশার উদ্রেক হয় না। তাহার কারণ বলিতেছি । ভারতবর্ষের যে-সব স্বাঞ্জাতিক ব্যক্তি (ন্যাশন্যালিষ্ট) অধুনা দেশের সম্বন্ধে শুধু কথা বলেন নাই এবং লেখেন নাই, কিন্তু দুঃখকে বরণ করিয়া দুঃখ পাইয়াছেন ও পাইতেছেন, তাহারা সৰ্ব্বাগ্রে চাহিয়াছেন দেশের সম্মান বা ইজ্জত। তাহারা ইহা কাৰ্য্যতঃ স্বীকৃত হইতে দেখিতে চাহিয়াছেন, যে, ভারতীয় লোকের নিজেদের হিতাহিত বুঝিতে সমর্থ এবং ভারতের হিত করিতে সমর্থ। সুতরাং তাহারা কাৰ্য্যতঃ ইহাই চাহিয়াছেন. যে, দেশের প্রতিনিধিদের সহিত যদি ইংরেজ গবষ্মেন্টের
পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৫৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।