পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা 1 বিবিধ প্রসঙ্গ-ছাত্রসমাজ ও 'দেশের কাজ ○.A সমস্যা হইয়া দাড়ায় ; কারণ, গবন্মেন্টনামক মনুষ্যসমষ্টি নিজেদের প্রভুত্ব ও মুনফ ছাড়িতে চান না বলিয়া স্বরাজ লাভ চেষ্ট হইতে যত লোককে পারেন নিবৃত্ত রাখিতে প্রয়াস পান । ভারতবর্যের মত পরাধীন দেশে ছাত্রদের রাজনৈতিক আন্দোলনে যোগ দেওয়ার বিরুদ্ধে সরকারী নানা সাকুলার ও অন্য চেষ্টা যে কেবল তাহীদের কল্যাণকামনা হইতে উদ্ভূত নহে, তাহার দু একটা প্রমাণ দিতেছি । সরকারপক্ষ বলেন, ছাত্রের রাজনৈতিক আন্দোলনে যোগ দিলে তাহদের পড়াশুনার ক্ষতি হইবে, উত্তেজক আন্দোলনে তাহাদের সমুদয় বা কতক সময় গেলে অধ্যয়ন ও জ্ঞান লাভের জন্য তাহারা যথেষ্ট সময় দিতে পরিবে না, উত্তেজক আন্দোলনে যোগ দিলে তাহীদের চিত্তচাঞ্চল্য ও চিত্তবিক্ষেপ জন্মিয়৷ জ্ঞানলাভের দিকেই প্রধানতঃ তাহীদের মনের ঝোক থাকিবে না, ইত্যাদি। গড়ের মাঠে ফুটবল খেলার সময়, ঘোড়দৌড়ের সময়, ছাত্রেরা যে দর্শকরূপে রোদে জলে পুড়িয়া ভিজিয়া অনেক দিন অনেক ঘণ্টা সময় কাটায়, তাহাতে তাহাদের পড়াশুনার সুবিধা হয়, পড়াশুনার জন্য বেশী সময় তাহীদের হয়, জ্ঞানলাভই তাহাদের প্রধান উদ্দেশ্য এই বোধ জন্মে, মনে কোন উত্তেজনা বা চাঞ্চল্যের কারণ জন্মে না, ইহা কেহ বলিতে পারেন কি ? অথচ সরকার বাহাদুর কখনও ত ফুটবল ম্যাচ ও ঘোড়দৌড় দেখিয়া সময় নষ্ট করার বিরুদ্ধে কোন আদেশ প্রচার করেন নাই । খোলা মাঠে কতকটা সময় যাপন করিলে তাহার দৈহিক কিছু উপকারিত অস্বীকার করি না ; কিন্তু রাজনৈতিক কাজ উপলক্ষ্যে ঘুরিয়া বেড়াইলেও কখন কখন সেরূপ উপকার হয় । পতিতা নারীরা যে সব থিয়েটারের অভিনেত্রী, বিস্তর ছাত্র প্রায় সমস্ত রাত্রি জাগিয়া সেখানে অভিনয় দেখে । তাহাতে তাহাদের অর্থব্যয় ও স্বাস্থ্যহানি হয়, মানসিক শুচিত কমে, এবং কাহারও কাহারও চরিত্রভ্রংশও ঘটে । ইহাতে অধ্যয়নে অঙ্গুরাগ বাড়ে এবং অধ্যয়নের জন্য সময় বেশী পাওয়া যায়, এরূপ কেহ বলিতে পারেন না। কিন্তু সরকার বাহাদুর এ বিষয়ে কোন উপদেশ দেন না, হুকুম জারী করেন না। বলা বাহুল্য আমরা সব রকম অভিনয়ের বিরোধী নহি । সিগারেট বিড়ি খাইলে, অন্তত: অপরিণতবয়স্ক ছাত্রদের ক্ষতি হয়। . গবন্মেটি এই কুঅভ্যাস দমনের কি চেষ্টা শিক্ষকদের দ্বারা বা অন্ত উপায়ে করাইতেছেন ? মদ্যপান আমাদের দেশের অধিকাংশ লোকের (অর্থাৎ হিন্দু ও মুসলমানদের ) শাস্ত্র घट्रश्नांtग्न श्रृं%, ७२९ दिखांम७ हेशंद्र अनिटेकाब्रिड প্রমাণ করে । অথচ কোন ছাত্র মদের দোকানের সম্মুখে কোন মদ্যপায়ীকে মদ না-থাইতে বলিলে তাহার কারাদণ্ড হুইবার অর্ডিন্যান্স হইয়াছে। . এই অর্ডিন্যান্স কি ছাত্রদের চারিত্রিক উন্নতির জন্য জারী করা হইয়াছে ? আমরা বরাবরই সাধারণতঃ স্কুলের ছাত্রদের রাজনৈতিক আন্দোলনে যোগ দেওয়ার.বিরোধী। কিন্তু উপরকার ক্লাসের ছাত্রেরাও রাজনৈতিক সভায় গিয়া কখনও বক্তৃতা শুনিবে না কিম্বা কোন সভার বেঞ্চি সাজাইবে না, আমাদের মত এ রকম নয়। অবশ্য এমন অনেক বক্তার এমন বক্তৃত আছে, যাহা বালক কেন বৃদ্ধেরও না শুনাই ভাল। কিন্তু রাজনৈতিক বক্তৃত মাত্রেই খারাপ এরূপ কোন সাধারণ নিয়ম নির্দেশ করা যায় না । স্কুলের বড় ছাত্রেরা তাহাদের বিতর্ক সভায় রাজনৈতিক বিষয়ে নিজেরা তর্কবিতর্কও করিতে পারে। বস্তুত, তাহারা বড় হইয় নির্দোষ যে যে সাৰ্ব্বজনিক কাজ করিতে পারে, তাহার সহিত সংস্পর্শ ছাত্রাবস্থাতে ঘটিলেই তাহাদের মহা অনিষ্ট হইবে, আমরা এরূপ মনে করি না । একথা কলেঞ্জের ছাত্রদের পক্ষে আরও বেশী খাটে । রাজনৈতিক ও অন্যবিধ আন্দোলন সম্পর্কে স্কুলের ছাত্রদের বেশী স্বাধীনতা থাকা উচিত। কিন্তু মোটের উপর যিনি ছাত্র তিনি প্রধানতঃ বিদ্যার্থ, ইহা সত্য, কথা। কিন্তু বিদ্যা জিনিষটি কি ? “সা বিদ্যা যা বিমুক্তয়ে”, “তাহাই বিদ্যা যাহা মুক্তির অমুকুল”। মুক্তি প্রধানতঃ মানুষের অস্তরের বন্ধন মোচন অর্থেই ব্যবহৃত হয়, এবং সেরূপ মুক্তি না ঘটিলে স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশের মানুষেরও দাসত্ব কাটে না । কিন্তু বাহিরের বন্ধন না ঘুচিলে মানুষের আভ্যস্তরীণ বন্ধনও যায় না। পরাধীন দেশসকলে এমন অসাধারণ মানুষ অতি অল্পসংখ্যক থাকিতে পারেন, র্যাহারা বাহিরের বন্ধনকে ভয় করেন না, গ্রাহ করেন না, এবং র্যাহাদের অন্তরের অজ্ঞানতাপাশ মোহপাশ প্রবৃত্তিপাশ আদি ছিন্ন হইয়াছে। কিন্তু সাধারণতঃ পরাধীন দেশের মামুষেরা বাহিরে ও ভিতরে দাস । এবং যে-সব অসাধারণ মানুষের কথা বলিলাম, তাহারাও বাহিরের বন্ধনের ভয়ের অতীত হইলেও নিজেদের স্বাধীন ইচ্ছা অনুসারে নিজ নিজ কৰ্ত্তব্য করিতে পারেন না—যেমন কারারুদ্ধ মহাত্মা গান্ধী। আমাদের স্কুলকলেজসকলে পরোক্ষভাবে অজ্ঞাতসারে কোন কোন ছাত্রের ভিতরের বন্ধন মোচনের স্ববিধ হয়ত হয়, কিন্তু অধিকাংশের তাহা হয় না, এবং সাক্ষাৎভাবে তাহাদিগকে বন্ধনমুক্ত করিবার চেষ্টা ত হয়ই না। বাহিরের যে বন্ধন, অর্থাৎ অধীনতা বা দাসত্ব, তাহ হইতে মুক্ত হইবার জন্য উপদেশ দান এবং তাহার উপায় নির্দেশ, সরকারী পরীক্ষা উত্তীর্ণ হইতে ষে সব স্কুল