৫ম সংখ্যা ] প্রয়োগকে ‘পরঘাত প্রয়োগ’ বলিয়াছেন। মন্ত্রিত ‘বাণ’ মারিয়া শত্ৰু বধ করিতে পারা যায়, এ বিশ্বাস এখনও আছে, সে ‘বাণ ধনুকের লৌহফল-বিশিষ্ট শর নহে, অভিমন্ত্রিত উপকরণ । উক্ত শত্র-মারক সীস একটু পরেও (১১৬৪) আছে। সায়ণের ভাষা এই—হে শত্ৰু, যদি তুমি আমার গে অশ্ব তৃত্য পুত্র হিংসা কর, তাহ হইলে আমি তোমাকে ‘সীস দ্বারা এমন মারিব যে পরিবে না।” এখানেও আভিচারিক মন্ত্র সহযোগে সীস দ্বার। শত্রু বধের কথা। এই সীস, বন্দুক নিক্ষেপ্য সীসক ধাতু নয়। (৩) আগ্নেয়াস্ত্র । অর্থ, অগ্নিময় অস্ত্র । অস্ত্র, যেটা নিক্ষিপ্ত হয়। বন্দুক নিক্ষিপ্ত হয় না, বন্দুক অস্ত্র বলিতে পারা যায় না ; বলুক যন্ত্র, নিক্ষিপ্ত গুলি অস্ত্র বটে। আগ্নেয়াস্ত্র যে ধন্থদ্বারা নিক্ষিপ্ত হইত, ইহা যে বাণ-বিশেষ, তাহার ভূরি ভূরি • প্রমাণ আছে। যথা, রামায়ণে (“বঙ্গবাসী’র সংস্করণে, লং। ১০০) শ্রীরাম ‘ধমু’দ্বারা আগ্নেয়াস্ত্র নিক্ষেপ করিলেন । তিনি ব্ৰহ্মাস্ত্র দ্বারা রাবণ বধ করিয়াছিলেন লং৷১১০)। এই ব্ৰহ্মাস্ত্র কেমন ? “দীপ্তং নিশ্বসন্তমিবোরথম জাজল্যমানং স্বপুঙ্খং সধুমং ”স রোমঃ] রাবণায় সংক্রুদ্ধে ভূশমায়ম্য কামুকং। চিক্ষেপ পরমায়ত্তঃ শরং মম বিদারণম্ ॥”—রাম কামুক অত্যস্ত আকর্ষণ করিয়া মম-বিদারণ শর নিক্ষেপ করিলেন । শরটি প্রজ্জ্বলিত, জলিবার সময় সাপের মত শো শেণ শব্দ করিতেছিল। মৎস্যপুরাণে ("বঙ্গবাসী’র,১৫৩ অঃ),জন্তাম্বর বধের নিমিত্ত ইন্দ্র কর্ণপ্রান্ত পর্যন্ত শরাসন আকর্ষণ করিয়া ব্ৰহ্মাস্ত্র বাণ ত্যাগ করিলেন। এইরূপ, মহাভারতে আছে। ব্ৰহ্মশির, ব্রহ্মাস্ত্র, এবং রামায়ণের ঐষিকান্ত্র, গাড়াস্ত্র, সৌরাস্ত্র প্রভৃতি সব, আগ্নেয়াস্ত্রের ভেদ। কেবল বাণে অগ্নি প্ৰজলিত করিয়া নিক্ষিপ্ত হইত না । অন্ত অগ্নিও শত্ৰুসেনার মধ্যে ফেলা হইত। রামায়ণে (লং। ৭৩) ইন্দ্রজিং স্ফুলিঙ্গ ও অগ্নিকণা-সম্বলিত শূল নিক্ষেপ করিয়াছিলেন। এত ক্ষিপ্র-হস্তে ও বেগে অগ্নিময় অস্ত্র নিক্ষিপ্ত হইত যে, লক্ষ্য-শত্ৰু বাম কিংবা দক্ষিণে সরিয়া দাড়াইবার অবসর পাইত না। . ৪ । শতী ৷ একদা অনেক লোককে হত করিতে প্রাচীন ভারতে বন্দুক ছিল না ७२१ عماعیحیعیحیی পারে। কিন্তু একমাত্ৰ কামানের গোলাই যে পারে, তাহা নয়। কৌটিল্যে শতঘ্নী চলযন্ত্রবর্গের মধ্যে। টীকাকার লিখিয়াছেন, বহু-লোঁহ-কণ্টক-সমাচ্ছন্ন বৃহৎ স্তম্ভ, দুর্গ-প্রাকারে স্থাপিত হয়। বৈজয়ন্তী কোষে (খ্ৰীঃ ১২শ শতাদের আদ্যে), শতন্ত্রী “অয়ঃ-কণ্টক-সংছন্ন৷ মহাশিলা ।” রামায়ণের টীকায় "শতন্ত্ৰীচ চতুহস্তা লৌহकफेरुिनैौ शन, इंडि रखहरूंौ ” भलक्झञ्जूष्म विषयরক্ষিত, “অয়ঃ-কণ্টক-সংছঃ শতন্ত্রী মহতী শিলা ।” অর্থাৎ শিলাস্তম্ভের গায়ে লোহার কাটা পুতিয়া রাখা হইত শত্ৰুসেনা প্রাকারে উঠবার উপক্রম করিলে তাঁহাদের উপরে স্তম্ভটি ঠেলিয়া ফেলিয়া দেওয়া হইত। তাহারা কাটায় বিদ্ধ ও শিলার ভারে পিষ্ট হইয়া প্রাণত্যাগ করিত। যথা, রামায়ণে (লং। ৩ “লঙ্কাপুরীর কবাটবদ্ধ চারি দ্বারে দৃঢ় ও বৃহৎ ইষু উপলমন্ত্র (শর ও পাষাণ নিক্ষেপের যন্ত্র) এবং শাণিত কৃষ্ণায়সময় শত শত শতস্ত্রী আছে।” কৃষ্ণায়সময়,—ইস্পাতের কণ্টকময় । কামান শাণিত হয় না। হনুমান লঙ্কায় গিয়া “শতঘ্নী মুষলাযুদ্ধ” শতঘ্নী ও মুষল নিক্ষেপের সেনা দেখিতে পাইল (স্থং ৷ ৪)। দুই আয়ুধই পিষিয়া মারে, এই কম সাদৃশ্য হেতু কবির পরে পরে মনে হইয়াছে। শতঘ্নী রণস্থলে লইয়া যাওয়াও হইত। রাম-রাবণের যুদ্ধে, রাক্ষসেরা যুদ্ধস্থলে শতঘ্নী লইয়া গিয়াছিল (লং । ৭৮) । মহাভারতেও ( দ্রোণপব) চাকার উপরে শতকী বাহিত হইয়াছিল। বহুকাল পরে, ১২শ খ্ৰীষ্ট শতাদের পরে, বাশিষ্ঠ ধনুবেদের অপেক্ষাকৃত আধুনিক সংস্করণে শতঘ্ন, কামান হইয়াছে। প্রাচীন নামের অর্থ ধরিয়া অথৰ্পস্তরপ্রাপ্তির ভূরি ভূরি উদাহরণ আছে। ৫। ভূশ ঔী। শব্দটি ভূ-শূণ্ডী, কি ভু",ণ্ডী, তাছা জানা নাই। অমরাদি-কোষে নাই । বৈজয়ন্তী কোষে, ভূশ ষ্ট। অর্থ, “দারুমী বৃত্তায়-কীল-সঞ্চিতা।” বোধ হয়, গোল লৌহ পিণ্ডাগ্ৰ গদাবিশেষ। প্রয়োগ দেখি। মৎস্যপুরাণে (১৫১ অঃ ), "হরি কৃতাস্ত তুল্য ভূ- ওঁী গ্রহণ করিয়া শম্ভের মেঘবাহন ‘পিপেষ, পিষিয়া মারিলেন। এইর প পূর্ববর্তী অধ্যায়ে, “শৈলবৎ গর, ও, ভীষণ তৃতী দ্বারা নিশাচরদিগকে নিশিপে, পিষিয়া মারিলেন। রামায়ণে (লং । ৬০), “নিদ্রিত কুম্ভকৰ্ণকে
পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৮০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।