পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৩২ প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড SAA AA ASASASA AAAAAS SASAAAAASAAAA "বি-এ পাশ করার আবার দোষট কি হ’ল ?” “দোষ হ’ল না ?—ছেলে যদি গিয়ে তোমার সাহায্য করে, তাহলে কি বি-এ পাশের মান থাকে, না বিয়ের বাজারে আর তেমন আদর থাকৃবে ?” ૨ আষাঢ়ের মেঘমুক্ত আকাশ । শুভ্রোজ্জল রৌদ্রে চারিদিক ভরিয়া গিয়াছে। সেদিন সুরবালার হাতে কত কাজ,--তাড়াতাড়ি করিয়াও সব সামলাইয়া উঠা র্তাহার পক্ষে কঠিন হইয়া পড়িয়াছিল। ঘরধোয়া, বাসনমাজা, তরকারির জোগাড়, গোয়াল-ঘর পরিষ্কার করা— এসব দৈনন্দিন কাজ ত আছেই; তাছাড়া পুত্র হরেন্দ্রনাথের ময়লা একটা জামা আর দুইখানি ধুতি আজ এই বেলার মধ্যেই পরিষ্কার করিয়া দিতে হইবে। হরেন্দ্রনাথ সে সম্বন্ধে. সকালে মাতাকে বেশ করিয়া তাড়া দিয়া বলিয়া দিয়াছে। ঠিক। ঝি আসে নাই । আজ ছয় দিন হইল, সে তাহার বোনঝির বিবাহের কুটুম্বিত৷ রক্ষা করিতে গিয়াছে। স্বরবালার এক সমস্ত কাজ সারিয়া উঠিতে বেল প্রায় দ্বিপ্রহর হইয়া উঠিল । চইপটু একটু তেল মাখিয়া ঘড়া গামছা লইয়া বাড়ীর বাহির হইয়া স্বানের ঘাট অভিমুখে যাইতেই তিনি দেখিতে পাইলেন, সে-ই সকাল হইতে একটুখানি দড়িতে গরুটি তেমনি অবস্থায় খোটার সহিত বাধা রহিয়াছে। গাছের ছায়া কখন সরিয়া গিয়াছে —সম্পূর্ণ অনাবৃত স্থানে দ্বিপ্রহরের সেই কাঠফাট রৌদ্রে বেচারী অভুক্ত দাড়াইয়া ধুকিতেছে। স্বরবালাকে দেখিয়া মুখ তুলিয়া মান কাতরভৃষ্টিতে র্তাহার পানে চাহিল। কৃষ্ণবিহারী সকালবেলায় কাছারীতে যাইবার পূৰ্ব্বে প্রত্যহ গরুটিকে ঘর হইতে বাহির করিয়া তাহার জাব ইত্যাদির বন্দোবস্ত করিয়া যান। আবার দ্বিপ্রহরে সন্ধ্যায় বাড়ী ফিরিয়া তাহার তত্ত্বাবধান করিয়া থাকেন। আজ অতি-প্রত্যুষে মনিবের বিশেষ কোন কার্য্যের জন্য তাহাকে বাহিরে যাইতে হইয়াছিল বলিয়া তিনি গরুটির সেরূপ কোনো ব্যবস্থা করিতে পারেন নাই। স্বরবালা থমকিয়া দাড়াইলেন। ওমা ! গরুটাকে এখনও খেতে দেওয়া হয়নি। সকাল থেকে রোদেই বাধা রয়েছে । আহা বেচারী !” স্বরবালা ঘড়া গামছা নামাইয়। রাখিয়া গরটাকে খোটা হইতে খুলিয়া ঘরে লইয়া গিয়া বাধিলেন, তারপর তাহার সম্মুখে কতকগুলি শুষ্ক বিচালি আনিয়া দিয়া ভ্র কুঞ্চিত করিয়া বলিলেন, "একা আমি কোন দিকেই বা তাল সাম্লাব। যেদিকে না যাব – যেদিকে না দেখব—সেইদিকেই একটা বিতিকিচ্চি কাণ্ড হয়ে পড়বে। আর এই ঝি ? ঝি মাগী আজ ছ’ দিন হ’ল, তার বোনঝির বিয়েতে গিয়েছে,— আস্থক ঘুরে সে একবার । ভাত মাইনে ওকে এবার ভাল করেই দেব।” শেষটায় স্বরবালা তাহার যত ক্রোধ সব ঝির উপর আরোপ করিয়া মনের ঝাল ঝাড়িতে ঝাড়িতে স্বানের ঘাটে চলিয়া গেলেন । আহারাদি শেষ হইয়া গিয়াছে। কৃষ্ণবিহারী ঘরের মেঝেয় একখানা মাদুর পাতিয়া বসিয়৷ তামাক খাইতে থাইতে বলিলেন, “আজ মাঝেরপাড়া থেকে লোক এসেছিল চিঠি নিয়ে ।” মুরবালা পান সাজিতে সাজিতে বলিলেন, “কি লিখেছে ?” কৃষ্ণবিহারী হাতের হু কাটা বৈঠকের উপর রাখিয়৷ দিয়া জামার পকেট হইতে চিঠিখানা বাহির করিয়া আনিয় স্ত্রীকে পড়িয়া শুনাইলেন । - স্বরবালা বলিলেন, “কই, তোমার টাকার কথা ত কিছু লেখেনি ?” কৃষ্ণবিহারী একটু গম্ভীরভাবে বলিলেন, "তাই ত দেখছি। যা-ই হোক, আমি ত বাবা যা চেয়েছি, তার আধ পয়সার কমে ছাড়ব না। আমার কাছ থেকে পালাবে কোথায় ?”—বলিয়া হকাট। তুলিয়া লইয়া গোটাদুই টান দিয়া বলিলেন, “হ্য—ঐ সঙ্গে মেয়ের একখানা কুষ্ঠাও পাঠিয়ে দিয়েছে।” মুরবালা স্বামীর হাতে গোটা-দুই পান দিয়া বলিলেন, “মেয়ের বয়স হ’ল কত ?” “বয়স ?”—বলিয়া কৃষ্ণবিহারী জামার অপর পকেট হইতে কোষ্ঠখানা বাহির করিয়া আনিয়া খানিকৰুণ বেশ ঠাহর করিয়া দেখিয়া বলিলেন, “এই গত কাৰ্ষিক মাসে ষোল বছরে পড়েছে ” -