পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“লছন। খুলনা কাছে মাগিল মেলানি। বাছিয়া অজয়নদ পাইল ইত্ৰানী ॥” কথিত আছে, বার ঘাট তের হাটে এই স্থান প্রসিদ্ধ ছিল। তিন শতাধিক বৎসর পূৰ্ব্বে কবি কাশীরাম দাস র্তাহার মহাভারতে এই দ্বাদশ ঘাটকে ভাগীরথী-তীরের : দ্বাদশ তীর্থ বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন, “ইক্রানী নামেতে দেশ পূৰ্ব্বাপর স্থিতি । স্বাদশ তীর্থেতে যথা বৈশে ভাগীরথী ॥” এই সকল ঘাটের স্থান নির্ণয় করা এক্ষণে দুরূহ। এখানে একটি স্থানকে লোকে ইন্দ্ৰেশ্বরের ঘাট বলিয়া দেখাইয়া থাকে । এখনও ইন্দ্রদ্বাদশীর দিন এই ঘাটে বহু যাত্রী স্নান করিতে আসেন । ইন্দ্ৰেশ্বরের মন্দিরের দ্বারদেশের উপরের প্রস্তরখণ্ড মুকুন্দরাম ও কাশীরাম উভয়েই কাটোয়ার নাম না করিয়া ইন্দ্রানীর উল্লেখ করিয়াছেন । ইহা হইতে অসুমিত হয়, সে সময় কাটোয় অপেক্ষ ইহার প্রসিদ্ধি অধিক ছিল। কালক্রমে চৈতন্য-সম্প্রদায়ী বৈষ্ণবের সংখ্যাধিক্যের সহিত কাটোয়ার নাম বিখ্যাত হইল, আর ইন্দ্রেশ্বর মহাদেব ইন্দ্রানীর রাজসম্পদ ও এথানকার সমৃদ্ধিগুলি লোপ পাইবার সঙ্গে সঙ্গে সে নামও লোপ পাইতে বসিয়াছে। এখন সে শিবমন্দির রাজবাড়ী ঘাট প্রভৃতির স্থান নির্ণয় করা প্রত্নতত্ত্বের বিষয় হইয়া পড়িয়াছে । রামানন্দ-পূজিত সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের কালীর কাঠাম দাইহাট আসিতে সর্বপ্রথম পথিকের নয়ন আকৃষ্ট করে, পথিপাশ্বে একটি কারুকার্য্য-খচিত অৰ্দ্ধ-প্রোথিত স্বন্দর প্রস্তর স্তম্ভ। উহ! কৃষ্ণবর্ণের প্রস্তরে নিৰ্ম্মিত, কে কবে কোথা হইতে আনিয়া এখানে স্থাপিত করিয়াছে তাহা স্থানীয় লোকের কেহই বলিতে পারিল না । তথায় ‘হকুমানের লাঠি' নামে ইহা খ্যাত। কেহ কেহ বলেন ইহা রাজবাড়ীর স্তম্ভ। আমার মনে হয়, এ আতুমান সত্য। উহার পাশ্বেই হরগৌরীর মন্দির। ইহা একটি আড়ম্বরহীন চতুষ্কোণ গৃহ, দ্বার রুদ্ধ থাকায় ভিতরের বিগ্রহ দর্শনলাভ ঘটিল না । জনৈক মুসলমান কৃষককে জিজ্ঞাসা করায় জানিলাম, এই স্থানের নাম রাজার ডাঙ্গ । সে ব্যক্তি দূরে একটি স্থান দেখাইয়া বলিল— উহাই রাজার বাড়ী । একটি বাগান পার হইয়া কিছুদূরে আমাদের লইয়া গিয়া একটি প্রাচীন ভগ্নপ্রায় শিব-মন্দির দেখাইল । সময় ও স্বযোগের অভাবে ইচ্ছা সত্ত্বেও আমরা বন-জঙ্গলের ভিতর ঘুরিয়া দেখিতে পারিলাম না। কৃষকের নির্দেশ অনুসরণ করিয়া আমরা আর তিনটি অতি প্রাচীন মন্দির দেখিবার জন্য অগ্রসর হইলাম। সে পথে গাড়ী যায় না, পদব্রজেই একটি মেঠো গ্রাম্যপথ ধরিয়া গস্তবা স্থানে পৌছিলাম। দেখিলাম,