পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] রাঢ়ের কয়েকটি পল্লী ভ্রমণ N98సి মন্দিরের ভগ্নাবশেষ দেখিলাম। উহার গাত্রে সংলগ্ন প্রস্তরফলক হইতে জানা যায় ১৬৭৬ শকে শিষ্য নন্দকিশোর দাস দ্বারা উহা নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। দাঁইহাট স্কুলের প্রধান পণ্ডিত শ্ৰীযুক্ত সতীশচন্দ্র দেব শৰ্ম্মণ মহাশয় আগ্রহসহকারে আমাদিগকে র্তাহার বাটতে লইয়া গিয়া এখানকার অনেক কথা বলিলেন । শ্ৰীগৌরাঙ্গদেবের পারিষদ শ্ৰীকৃষ্ণদাস ঠাকুরের পাট অনতিদূরে একাইহাটে ছিল। শোনা যায়, ভাস্কর পণ্ডিত এইখানেই দুর্গোৎসব করিয়াছিলেন । এস্থান হইতে বিদায় লইয়া দেওয়ানগঞ্জ নামক স্থানে পৌছিলাম। এখানে বহুকাল পূর্বে একটি স্ববৃহৎ হাট ছিল ; উহার প্রতিষ্ঠাতা দেওয়ান মাণিকচাদের নাম হইতে দেওয়ানগঞ্জ নাম হইয়াছে। বড় বড় অট্টালিকার ভগ্নাবশেষ দেখিয়া বেশ বুঝিতে পারা যায় স্থানটি জনবহুল ছিল । দেড় শত বৎসর পূৰ্ব্বে এই প্রসিদ্ধ হাটের পাশ্ব দিয়া গঙ্গা প্রবাহিত হইত, এখন তাহা প্রায় এক মাইল সরিয়া গিয়াছে । বর্গীরা এই হাটের বিশেষ অনিষ্ট সাধন করিয়াছিল বলিয়া শোনা যায়। এস্থানে এক সময় বড় বড় পাথরের মন্দির ছিল । বদর সাহেবের আস্তানা এখানে একটি প্রসিদ্ধ মুসলমান দরগা। ইহা বদর শাহ আউলিয়ার সমাধি । এই দরগার কোনো কোনো স্থানে যে প্রস্তর বসান আছে, তাহার শিল্পনৈপুণ দেখিয়া বুঝা যায় উহা প্রাচীন হিন্দু দেবমন্দিরের অংশ। বদর শাহ এই অঞ্চলে বিশেষ প্রসিদ্ধ। জনশ্রুতি এইরূপ, কোনো নৌকা বিপদে পড়িলে বদর সাহেবের পূজা মানত করিলে বিপদমুক্তি হইয়া থাকে। গঙ্গায় ঝড় উঠিলে অনেক মাঝিমাল্লাকে এখনও বদর বদর বলিতে শুনা যায়। দে ওয়ানগঞ্জের হাট এখন দাইহাটে উঠিয়া আসিয়াছে । দেওয়ানগঞ্জ দাইহাটের অন্তর্বত্তী বলিলেও হয় । এখানে পিতলের কাজ পূর্বে খুবই ছিল। এই অঞ্চলের মত পাথরের দেব-দেবীর মূৰ্ত্তি গঠনে পারদর্শী ভাস্কর অন্যত্র খুব কমই আছে। ইহার ক্রমেই হ্রাস পাইতেছে ; এখন মাত্র এক ঘর আছে । T বৰ্দ্ধমানরাজের সমাজবাড়ী এই দ্বাইহাটেই। ইহ braー8 আমরা তথায় যাত্রা করিলাম । কালনার সমাজবাড়ীর ন্যায় আড়ম্বরশালী না হইলেও, এখানে রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা আবু রায় হইতে মহারাজা কীৰ্ত্তিচন্দ্র পর্য্যন্ত বৰ্দ্ধমানাধিপতিদের অস্থি সমাহিত আছে । ইহার অনতিদুরে পথিপাশ্বে কতিপয় প্রস্তরমূৰ্ত্তি স্ত্রীরাধাগোবিঙ্গ জীউর প্রস্তর মন্দির—জগদানন্দপুর দেখিলাম । তিনটির মধ্যে মনে হইল, অপর ভগ্নমূৰ্ত্তিটি ঠিক একটি অৰ্দ্ধভগ্ন বুদ্ধমূৰ্ত্তি করিতে পারা গেল না। যেটি আজও আভগ্ন থাকিয়া ষষ্ঠী দেবী বলিয়া ভক্তের পূজা পাইতেছেন সেটি একটি বিষ্ণুমূৰ্ত্তি। দাইহাটে আর দেখিবার মধ্যে দ্বাদশ ঘাটের অন্যতম দুই একটি জীর্ণ ঘাট। আর আছে পাইকপাড়ার পাশ্বে জঙ্গল শাহের গড়ের চিহ্ন। তসরের কাজের জন্যও দাইহাটের প্রসিদ্ধি আছে। নিকটবৰ্ত্তী গ্রাম জগদানন্দপুরে একটি স্বন্দর স্ববৃহৎ প্রস্তরমন্দির আছে, এখানে গাড়ী যাইবার উপায় নাই, অগত্যা মধ্যাহ্নের রৌদ্রে মাঠ ভাঙিয়া চলিলাম। রেল পার হইয় প্রায় দেড় মাইলের পর আমরা গন্তব্য স্থানে পৌছিলাম। স্থানটি জনবিরল,