পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S(tSు প্রবাসী—ভাদে, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড SAASA SAASAASSAAAAAAS AAASASASS পিতামাতার বিরুদ্ধে দাড়াইবে, পিতামাতার ছেলের বিরুদ্ধে দাড়াইবে।” এই কথার উপর খুব বেশী জোর দিয়া প্রচার করা হইতেছে। অধিকাংশ স্থলে যুবকেরাই পাশ্চাত্য চাকচিক্যে মোহিত হইয়া খ্ৰীষ্টধৰ্ম্ম গ্রহণ করিয়া থাকে। তাহারা যখন শুনিতে পায় পিতামাতার কথা শুনিবার দরকার নাই, তখন আর তাহাদিগকে কে রাখে ? যুবক-যুবতীর পিতামাতার অবাধ্য, অনেকস্থলে বৃদ্ধ পিতামাতাকে অসহায় অবস্থায় রাখিয়া চলিয়া যায়। গ্রাম্য পাস্তর (প্রচারক) মুসলমান মোল্লার মত গ্রামের একচ্ছত্র অধিপতি । র্তাহার হুকুমই খোদার হুকুম । ছেলেমেয়ের উপর পিতামাতার কোন হাত নাই । তিনি যাহা বলেন তাহাই হয়। ছেলেমেয়ের বিবাহ পিতামাতাই দিত, এখন তাহা পাস্তরের ইচ্ছাধীন। তিনি যেখানে ইচ্ছা বিবাহ দিতে পারেন বা যখন ইচ্ছা বন্ধও করিতে পারেন । ইহাতে পিতামাতার বলিবার কিছু নাই। এই সব কারণে আমাদের পারিবারিক জীবন যে কিরূপ বিষময় হইয়া দাড়াইয়াছে তাহ বলিবার নয়। মিশনারী আন্দোলন সকল প্রকারে আমাদিকে ধ্বংসের পথে লইয়া চলিয়াছে। কে-ই বা বুঝিবে আর কাহার নিকটেই বা কাদিব ? আমার স্বজাতীয় বৃদ্ধদের মধ্যে যাহারা এখনও খ্ৰীষ্টান হয় নাই, তাহারা সমাজে কোণঠাসা । তাহারা একে নিরক্ষর, তার উপর পাত্রীদের অত্যাচারে জর্জরিত । আর দেশবাসীর নিকট আমরা ত বাঘ ভালুক বা এই রকম কিছু। পতিত জাতিদের সাহায্য করিবার জন্য আজ সারা ভারতময় আন্দোলন চলিতেছে। আমরা পতিত, নিরাশ্রয়। বিরাট হিন্দুসমাজের দ্বারে আমরা ভিক্ষাপ্রার্থী, কৃপাগ্রার্থী। আমরা পতিত, অক্ষম, বা যাই হই, আমরা হিন্দুই । সমগ্র জাতির এককোণে আমরাও কি একটু স্থান পাইব না ? আমরা কি এতটুকু সহানুভূতি হইতে বঞ্চিত হইব ? মিশনারী আন্দোলন কি ভাবে আমাদিগের সর্বনাশ করিতেছে, তাহা লিখিতে গেলে একখানা বৃহৎ পুস্তক হইবে। আমি অতি সংক্ষেপে লিথিয়াছি। খ্ৰীষ্টীয় আন্দোলন কেবল যে আমাদের সর্বনাশ করিতেছে তাহ নয়, ইহাতে সমস্ত দেশেরই একটি বিশেষ ক্ষতি হইতেছে। আমি ধৰ্ম্মের দিক হইতে বলিতেছি না ; কারণ শুধু ধর্মের জন্য কাহারও স্বধৰ্ম্ম ত্যাগ করিয়া ধৰ্ম্মাস্তর গ্রহণ করিবার কোন আবশ্যকতা নাই । ধৰ্ম্ম হিসাবে খ্ৰীষ্টধৰ্ম্মকে বা কোন ধৰ্ম্মকেই আমি অশ্রদ্ধা করি না । আমি দেশের দিক হইতে বলিতেছি, জাতীয়তার দিক হইতে বলিতেছি । আজ দেশের সমুদয় চিন্তাশীল ব্যক্তিই একটি কথা প্রাণে প্রাণে অনুভব করিতেছেন, “হিন্দু মুসলমান সমস্তার সমাধান না হইলে ভারতের কল্যাণ নাই।” এই হিন্দু মুসলমান সমস্তার জন্য দায়ী কে ? হিন্দুরাই নহে কি ? যখন মুসলমানরা এদেশে আসিয়াছিল তখন তাহাদের কয়জনই বা এদেশে স্থায়ীভাবে বাস করিয়াছিল। ভারতের প্রার সমুদায় মুসলমানই ত এককালে হিন্দু ছিল । কেন তাহারা মুসলমান হইল ? কেন ইহার হিন্দুধৰ্ম্ম ত্যাগ করিয়৷ মুসলমান হইয়াছে এবং এই হিন্দু মুসলমান সমস্তার স্বষ্টি করিয়াছে ? এর জন্য দায়ী কে ? বলা যাইতে পারে, উচ্চবংশের হিন্দুরা কখনও স্বেচ্ছায় ধৰ্ম্মান্তর গ্রহণ করে না। হইতে পারে ইহা সত্য কথা। হিন্দুসমাজ তাহার নিম্ন শ্রেণীকে আপন গণ্ডীর মধ্যে রাখিতে পারেন ন৷ কেন ? কেবল দল ছাড়া নয়, প্রতিপক্ষের দল বৃদ্ধি করা । এই সব দেখিয়া মনে হয়, আজ হিন্দু মুসলমান সমস্তার সমাধান ত হইতেছেই না, উপরন্ত আবার খ্ৰীষ্টান সমস্ত নামক তৃতীয় সমস্ত। ধীরে ধীরে মাথা তুলিতেছে। হিন্দুসমাজ আর কত কাল ঘুমাইবেন ? এতদিনে অন্ততঃ ঠেকিয়াও শেখা উচিত ছিল । পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি, আমাদের বিষয় চিন্তা করিয়৷ কোন কুলকিনারা পাই না । স্থধিগণের উপদেশ ও সহানুভূতি পাইবার আশাতেই এই প্রবন্ধ লিখিতেছি । কাছাড়, মণিপুর, লুসাই পাহাড়ের শত শত বর্গ মাইল ধরিয়া কেবল পাহাড় এবং এই পাহাড়ে হাজার হাজার পাহাড়ী লোক বাস করিতেছে। লোকচক্ষুর অন্তরাণে উহারা কিরূপ ভাবে দিন দিন সৰ্ব্বস্বাস্ত হইয়া দেশের নিকট পর হইয়া যাইতেছে, তাহ কেহই বুঝিতেছেন না ।