G o ও ব্যতিরোকী ন্যায়ের উপর এই সিদ্ধান্ত স্থাপিত হয়, তাহার প্রয়োগ সব সময় সহজ হয় না । এই সমস্ত বিশ্নের জন্ত মনোবিজ্ঞানের পরীক্ষায় বিশেষ সাবধানত প্রয়োজন । আজকাল মনোবিদগণ কোন বৈজ্ঞানিক সূত্রে উপনীত হইবার পূৰ্ব্বে সেই স্বত্রের সত্যত নানাদিক হইতে নানা উপায়ে নিৰ্দ্ধারণ করিয়া থাকেন । এই উপায়গুলির মধ্যে তুলনামূলক উপায় বিশেষ উল্লেখযোগ্য । আধুনিক মনোবিজ্ঞানের কার্য্যকারিত মাত্র অৰ্দ্ধশতাব্দী পূৰ্ব্বে আধুনিক মনোবিজ্ঞানের কাৰ্য্য আরম্ভ হইয়াছে। কিন্তু এই অল্প সময়ের মধ্যেই উহ! প্রভূত উন্নতিলাভ করিয়াছে। আজ ইহার ক্রিয়। কেবলমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকেন্দ্র ও পরীক্ষাগারের গণ্ডীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নহে। মানুষের ব্যবহারিক জীবনের পক্ষে ইহার উপকারিত সম্বন্ধে পাশ্চাত্য দেশে আজ কেহই সন্দিহান নহেন। গত চৌদ-পনের বংসরের মধ্যে মাতুষের মন লইয়া বা মনের ক্রিয়ার ফলে যেখানেই সমস্ত উঠিয়াছে, মনোবিদ সেখানেই তাহার বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান প্রণালীর সাহায্যে কাৰ্য্যকারণ নির্ণয় করিয়াছেন ও ব্যবহারিক জীবনব্যাপারের সাহায্য করিতে সচেষ্ট হইয়াছেন। ইহার ফলে মনোবিদ পাশ্চাত্যদেশে আজ নানাক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পদ অধিকার করিয়া আছেন । শিক্ষা, শিল্প, রোগ নিরাকরণ প্রভৃতি যে সমস্ত বিষয়ে মানব মন ও চরিত্রের সম্বন্ধে সম্যক্ জ্ঞান আবশ্বক বলিয়া বিবেচিত হয়, সেই সেই বিষয়ে সাধারণ বুদ্ধির উপর আর নির্ভর না করিয়া মনোবিদের মত ও পরামর্শ গ্রহণ করিয়া আজকাল কাৰ্য্য করা হইয়া থাকে। মনোবিদ আজ পরীক্ষার দ্বারা ছাত্রদের প্রকৃতিগত পার্থক্য নির্দেশ করিয়া বলিতেছেন যে, শিক্ষাম্বেষী সকল ছাত্রের সহজ বুদ্ধি একরূপ নয়।. যাহাদের সহজ বুদ্ধি প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড প্রখর ও উচ্চ শিক্ষার অনুকূল তাহাদেরই উচ্চ শিক্ষার চেষ্টায় সাফল্যের সম্ভাবনা । শিক্ষার প্রথমেই সহজ বুদ্ধির দিক হইতে ছাত্রদের শ্রেণীবিভাগ করিয়া এবং এই বুদ্ধির তারতম্য ও প্রকৃতি অনুসারে উপযোগী শিক্ষাধারার নির্দেশ করিয়া মনোবিদ শিক্ষানুষ্ঠানের মধ্যে প্রভূত অপচয়ের সম্ভাবনা দূর করিয়াছেন। শিক্ষা সমাপ্তির পর কে কোন কার্য্যে প্রকৃত উপযুক্ত, তাহাও পরীক্ষা দ্বারা বলিয়া দিবার ভার তাহার হস্তে । শিক্ষ|বিষয়ে আমরা এতদিন চিরাচরিত প্রণালী অন্ধভাবে অনুসরণ করিয়া আসিতেছিলাম । অল্পদিন হইল মনোবিজ্ঞানের সংস্পর্শে আসিয়া শিক্ষাদানপ্রণালীর অনেক পরিবর্তন ঘটয়াছে। কোন বিষয় শিক্ষা দিবার সহজ ও প্রকৃষ্ট উপায় কি তাহ আজকাল অনেক স্থলে মনোবিদের পরীক্ষার দ্বার বা মনস্তত্ব অনুসারে নিরূপিত হয় । মনোবিং দেখাইয়াছেন, শিল্পানুশীলনে যে সব বহুকালাভ্যস্ত কাৰ্য্য নৈপুণ্যের অভিমান লইয়া আমরা এতদিন করিয়| আসিয়াছি সেই সব কার্য্যেও বহুস্থলে শক্তির অযথা অপব্যবহার হইয়া থাকে এবং সেই সব অভ্যস্ত কায্যের উন্নতি সম্ভব। পাশ্চাত্য দেশে অনেক শিল্পালয়ে কোন নৈপুণ্যমূলক কাৰ্য্য কিরূপে আয়ত্ত ও সম্পাদন করা উচিত তাহ বিশেষজ্ঞ মনোবিদের পরামর্শ মত স্থিরীকৃত হইয় থাকে। মনোবিকার নিরাকরণের চেষ্ট৷ আধুনিক মনোবিজ্ঞানের আর একটি প্রধান বিশেষত্ব। মনের গতি তাহার যাত্রাপথে রুদ্ধ হইয়া ঘুর্ণাবৰ্ত্তের স্বষ্টি করিয়া যেখানে বিকারে পরিণত হয় মনোবিদ সেখানেও তাহার মনের engineering-এর দ্বারা রোধের হেতু লক্ষ্য করিয়া রুদ্ধগতির মুক্তির পথ করিয়া দিতেছেন।*
- উনবিংশ বঙ্গীয় সাহিত্য-সম্মিলনের বিজ্ঞানশাখার পঠিত।