পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ᏬᏬ8 প্রবাসী—ভাদে, ১৩৩৭ ৩•শ ভা, ১শ খও অবশু তারা যে পুলিশে লাগায় না তা নয়-প্রাপ্তির আশায় তারা সবই করে—কিন্তু আমরা যারা সৎ—আপনার কথাটা শুনে হাসছেন–কিন্তু কথাটা না ব্যবহার করে থাকতে পারছি না—আমরা, যারা সংচোর, এই সব ‘বিচ্ছুর দলকে সমস্ত মনপ্রাণ দিয়ে ঘৃণা করি। তাদের আর একটা নাম আমরা দিয়েছি সেটা বিশ্ৰী গালাগালি— আপনাদের সাম্নে আর সে কুৎসিত কথা উচ্চারণ করব ন। স্থা, বলছিলাম কি, এই জঞ্চালের দল, এরাই কোনো লুট-তরাজ গুণ্ডামির খবর পেলে ছুটে আসে। গুগুমির অপবাদও বুঝি সহ হয়, কিন্তু এই নচ্ছারদলের সঙ্গে আমাদের সংস্রব-কল্পনা শতগুণে অপমানজনক । “ভদ্রমহোদয়গণ, আমি লক্ষ্য করেছি, আমার কথা শুনতে শুনতে বহুবার আপনাদের ঠোটে হাসির রেখা ফুটে উঠেছে। আপনাদের মনোভাব আমি বুঝি। আমাদের এই আবির্ভাব—আপনাদের সাহায্যের জন্য আমাদের আজ্জা, এবং সবচেয়ে তস্কর-সমিতির মত একটা অভূতপূৰ্ব্ব ব্যাপার—তাদের প্রতিনিধি—তার দলপতি —যারা সবাই চোর সমস্ত জিনিষই এত নূতন, অদ্ভুত যে, শুনলেই হাসি পাথ। কিন্তু বহিরঙ্গের বাধা ঘুচিয়ে একবার সমানে সমানে মানুষে মানুষে পরিচয় হয়ে যাক— “আমাদের দলের সবাই শিক্ষিত, আমরা সবাই বই পড়তে ভালবাসি—আমরা যে কেবল অদ্ভুতকৰ্ম্মার কাহিনী পড়ি বাস্তব সাহিত্যিকের, একথা ঠিক নয়— আপনারা কি মনে করেন যে, যখন এই অন্যায় জঘন্য অত্যাচার চলছিল তখন ব্যথায় আমাদের বুক ফেটে রক্ত ঝরেনি—লজ্জায় আমাদের মাথা নীচু হয়নি? আপনারা কি সত্যই ভাবেন যে, যখন কসাক সৈন্তের চাবুকে দেশ জর্জরিত হয়ে উঠে-মরিয়া মানুষ উন্মাদ হয়ে পরস্পরের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে, সেদিন আমাদের রক্তে আগুন লাগে না ? একথা কি আপনার বিশ্বাস করবেন যে, আমরা, এই চোরের দল, পরম আগ্রহে অসীম আনন্দে অদূরাগত মুক্তির চরণধ্বনির অপেক্ষা করছি! “জানি -আমরা সবাই জানি—হয়ত আপনাদের মত আইনজীবীদের চেয়ে কিছু কম বুঝি—কিন্তু বেশ জানি এই-সব মারামারির গুঢ় অর্থ কি ! কে যে কি উদ্দেশ্যে নিরীহ ইহুদীর উপর অত্যাচারের লোভ দেখিয়ে সাধারণ লোকের জাগ্রত ক্রোধ শান্ত করে তা জানি—এ দলে ও-দলে দাঙ্গা বাধিয়ে দেয় কোন সে শয়তান-এবিষম রক্তপাত—কার খেলা এই পিশাচ-প্রবৃত্তি লোকদের রক্তস্বানের উৎসব স্বষ্টি ? “কিন্তু এবার শেষ হয়ে এসেছে—আমলাতন্ত্রের নাভিশ্বাস উঠেছে, তার অঙ্গবিকৃতি দেখতে পেয়েছি ! মাপ করবেন, একটা রূপক বলি– —এক দেশে এক পীঠস্থান ছিল—বিরাট মন্দিরে তার গভীর ক্ষুদ্র গর্ভগৃহে ছিল রক্তপিপাস্থ এক দেবতু— লোকচক্ষের অন্তরালে কালে আবরণের আড়ালে—পাণ্ডাপূজারী ঘেরা! একদিন এক দুঃসাহসী দিল সে আবরণ ছিড়ে ফেলে। আলো যখন পড়ল, তখন সবাই দেখলে দেবতা সে নয়—অতিকায়, কুৎসিত খাদ্যলোলুপ এক মাকড়সা ! লোকের তাকে মারবার জন্যে অস্ত্র নিক্ষেপ করলে—অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তার কেটে কেটে পড়তে লাগল । চরম যন্ত্রণার আবেগে সেই বিত্র ভয়ানক জানোয়ারের বীভৎস লোমশ পা-গুলো মন্দিরের চারপাশে বিস্তৃত হয়ে পড়েছে, আর সেই পাণ্ডী-পূজারীর দল—মৃত্যু যাদের অবধারিত—তাদের ভীত কম্পিত হাতে যাকে ধরতে পাচ্ছে, তাকেই সেই রাক্ষসের কবলে ঠেলে ঠেলে দিচ্ছে ! “কিছু মনে করবেন না। যা বল্লুম তা হয়ত উদ্ভট, সামঞ্জস্যহীন। একটু বিচলিত হয়ে পড়েছি—আমায় মাপ করুন! যা বলছিলুম-চুরি যাদের পেশা তারা সবাই অন্য সবাইয়ের চেয়ে ভাল করেই জানে কেমন করে ইহুদীদের এই অত্যাচারের ব্যবস্থা হয়। আমরা কোথায় ন। যাই—বাজারে, চায়ের দোকানে, শুড়িখানায়, বস্তীর মাটকোঠায়, থিয়েটারে, গির্জায়—সৰ্ব্বত্রই আমাদের গতি । ভগবান আর মানুষের সামনে, ভবিষ্যৎ বংশীয়দের মুখ চেয়ে আমরা শপথ করে বলতে পারি কেমন করে পুলিশ এই হত্য-উৎসবের আয়োজন করে, নিতান্ত নিল্ল জভাবে-তাদের দুষ্কাৰ্য্য তারা গোপন করবারও চেষ্টা করে না ! তাদের মুখ আমরা চিনি—উদ্দী পরেই তারা ঘুরুক বা ছদ্মবেশেই ফিরুক। আমাদেরও তারা ডেকেছিল, কিন্তু এমন হীনাত্মা আমাদের মধ্যে কেউ নেই جمي