পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

N੭੯੪੯੪ প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩৩৭ [ ৩eশ ভাগ, ১ম খণ্ড করে এক কীল বসিয়ে সে বললে, “তারা তাকে গুলি করে মেরেছে—কিন্তু মহান তার কীৰ্ত্ত—মৃত্যুহীন সে বাক্যের সৌন্দৰ্য্য !” “যদি সে মহান শুভদিনে আপনার আমাদের দূরে সরিয়ে দেন, সেদিন আমরা আপনাদের এই প্রশ্ন করব, ‘বলি অকলঙ্ক স্বর্গদূতের দল, যদি মানুষের চিন্তার জোরে মানুষের অর্থ-মান প্রতিপত্তি খৰ্ব্ব হয় তবে আপনাদের মধ্যে কোন সরল ঘুঘুটি সরকারের চাবুক আর সারাজীবন দ্বীপান্তর থেকে মুক্তি পাবেন ? ব্যস্, তারপর আপনাদের ছেড়ে আমরা চলে যাব-নিজেদের চোরেদের মজার আগড় তৈরি করে লড়াই দেব—এমন হাসিমুখে সম্মিলিত গানের স্বরের মাঝখানে প্রাণ দেব, তখন হিংসেয় আপনাদের জান্‌ যাবে-আপনারা, যারা নাকি তুষারের চেয়ে নিষ্কলঙ্ক! “এই দেখুন—আবার উত্তেজিত হয়ে গেছি—মাপ করবেন আমায়—আমার কথা শেষ হয়ে এসেছে—বুঝতেই পারছেন, খবরের কাগজের নিণায় আমাদের মন কি রকম বিকল হয়ে গেছে—আমাদের কথা সত্য বলে বিশ্বাস করুন এবং আমাদের নামে এই অন্যায় কলঙ্ক মোচনের একটা ব্যবস্থা করে দিন । আমার আর কিছু বক্তব্য নেই।” টেবিলের কাছ থেকে সরে গিয়ে দলপতি স্বদলে ভিড়ল। ব্যারিষ্টার-মহলে চাপ-গলায় শতেক আলোচনার অফুট গুঞ্জন ছাপিয়ে সভাপতির কণ্ঠস্বর বেজে উঠল, “আপনার কথা আমরা নিঃসন্দেহে বিশ্বাস করেছি-এ অন্যায় অপবাদ থেকে আপনাদের মুক্ত করবার জন্যে আমাদের যথাসাধ্য করব । সভার মুখপাত্রস্বরূপ আমার বন্ধুবর্গের অনুরোধ-মত আমি আপনাদের অশেষ ধন্যবাদ ও গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি—নাগরিক কৰ্ত্তব্যে আপনাদের অসীম আগ্রহ । আমার দিক থেকে আমি দলপতি-মশায়ের করমর্দনের অনুমতি প্রার্থন করছি ।” পুরুষোচিত সবল ভঙ্গীতে দীর্ঘায়ত দুইটি পুরুষ গম্ভীর ভাবে পরস্পরের হাত চেপে ধরল। ব্যারিষ্টারের দল নাট্যমন্দির থেকে একে একে বেরিয়ে পড়ছেন–জনচারেক টুপী রাখবার আলনার কাছে জড় হয়েছেন—আইজকে সাহেবের নতুন-কেনা ফ্যাসানে টুপীর কোন পাত্তা নেই—তার জায়গায় স্বতীর একটা সস্ত টুপী ঝুলছে। “ইয়াস !” দলপতির কঠোর উচ্চস্বর দরজার বাইরে থেকে শোনা গেল । “ইয়াসা ! এই শেষবার বলছি—কি-রে ?” ভারী বড় দরজাটা খুলে গেল -দলপতি আস্তে আস্তে ঘরে ঢুকল—হাতে আইজাক সাহেবের সাধের নতুন টুপী—মুখে ভদ্রজনোচিত স্মিতহাস্য । “মাপ করবেন—ভারি একটা ভুল হয়ে গেছে—টুপী বদলাবদলি হয়ে গিয়েছিল ও আপনারই ? মাপ করবেন...” পরে দরোয়ানকে ডাকিয়া বলিল, “আরে জিনিষ-পত্তর সামলাও না কেন ? চোখ থাকে কোথায়--- দাও, ঐ নেকড়ার টুপীটা আমায় দাও। আচ্ছা আসি, আপনারা আমায় মাপ করলেন তো ?” হাসিমুখে অভিবাদন করে চোরের সর্দার তাড়াতাড়ি রাস্তায় নেমে পড়ল । *

  • রুশ-সাহিত্যিক A, L. Kuprin রচিত গল্পের অনুবাদ ।