পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] জোর গলায় বলা যায়। তারপর তখন ভিন্ন আদালতে দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলা বিচারের কোনো বাধাবাধি নিয়ম দেখা যেত না । বাদশাহ নিজে ও র্তার ‘সদর’ দেওয়ানী মামলা বিচার করতেন । এ ছাড়া বাদশাহকে যে ফৌজদারী মামলা বিচার করতে হত না তাও নয়। আর কাজীর কাজ ছিল প্রধানতঃ ফৌজদারী মামলা নিয়েই থাকা । অবশু সময়ে সময়ে ইহারও ব্যতিক্রম হত । একাধিক ইউরোপীয় ভ্রমণকারী ভারতবর্ষে বেড়াতে বা বাণিজ্য উপলক্ষ্যে এসে দিল্লী ব| আগ্রায় বাদশাহী বিচার কিরূপ চলত তা নিজেদের ভ্রমণ-কাহিনীতে লিখে গেছেন। বাদশাহের দরবার সাধারণতঃ "কোর্ট অফ witàst"&ass of Io. HMC court of first instance 8 ছিল । কতকগুলো বাছা মোকদম ছাড়া তিনি সবগুলোর বিচার করতেন না। আকবরের সময়ে সম্রাটের বিচারের কোন নিদিষ্ট দিন ধায্য ছিল না ; যেদিন তিনি বিচার করবেন বলে স্থির করতেন, সেদিন নাকাড়া বাজিয়ে লোকদের জানান হ’ত । কেহ কেহ বলেন যে, , জাহাঙ্গীরের রাজত্ব সময়ে রাজপ্রাসাদের বারান্দার সহিত একটি লোহার শিকল টাঙান থাকত। প্রজাবৰ্গ নিজেদের আর্জি বা প্রার্থনাপত্র তা’তে বেঁধে দিত। পরে বাদশাহ সেগুলো নিজে দেখে যথাকর্তব্য করতেন। ফিঞ্চ সাহেব ( ১৬১১ খৃ: ) জাহাঙ্গীরের সময়ে কেমন ক’রে বিচার-কাৰ্য্য চ’লত তা বলে গেছেন। চারিটি তোরণবিশিষ্ট আগ্রা-দুর্গের পশ্চিমদিকেরটির নাম ছিল কাছারি ফটক ; কারণ এখানে বসিতেন কাজীসাহেব, আর ছিল বাদশাহের উজীরের কাছারি বাড়ী। উজীর সাহেব রোজ সকালে তিন ঘণ্টা করে বিচারাসনে বসে খাজনা, বৃত্তি, ঋণ ও জমিজমা সংক্রাস্ত যাবতীয় মামলার বিচার করতেন। প্রায় পাচ বছর পর টেরি সাহেব দেখেন যে, সম্রাট নিজে তার দরবারের সন্নিহিত স্থানসমূহে সঙ্ঘটিত ব্যাপারের ςτΓ<ττ] CW«{στει ; secundum allegata 8 probatâ সম্পৰ্কীয় মামলার বিচার তিনি নিজেই করতেন । বিচারকাৰ্য্য যেমন তাড়াতাড়ি শেষ হ’ত, তেমনি হ’ত প্রাণ বাদশাহী বিচার পদ্ধতি ও দণ্ডনীতি ৬৬৯ দণ্ডের আজ্ঞাপ্রদান । দরবারের বাইরে প্রাদেশিক কৰ্ত্তারাও রাজার পদাঙ্ক অনুসরণ করতে কক্ষর করতেন না । কোনে আইনের বই ছিল না, বাদশাহ বা তার প্রতিনিধির ইচ্ছাই ছিল তখনকার আইন। ডচ কৰ্ম্মচারী ফ্রানসিস্কো পেলসায়ের্ট (১৬২১ খৃঃ) বলেন যে, জাহাঙ্গীর রাজ্য নিয়ে বড়-একটা মাথা ঘামাতেন না, কেবল শিকার নিয়েই থাকতেন ব্যস্ত। দরবারে কোনো প্রার্থী উপস্থিত হ’লে তার যা বলবার ছিল সব শুনে বাদশাহ উত্তরে ‘ই’ বানা কিছুই না ব’লে তার শু্যালক আসফ থাকে যথাবিহিত করতে বলতেন, আর র্থ সাহেব তার ভগ্নী নূরজাহানের পরামর্শ ব্যতিরেকে কিছুই করতেন না। প্রত্যেক শহরেই একটি ক’রে কাছারি ছিল, যেখানে সপ্তাহে চারিদিন ক’রে গভর্ণর, দেওয়ান, বক্সী, কোতওয়াল এবং কাজী একত্রে বসে মামলার বিচার করতেন। চুরি, খুন প্রভৃতি মামলার বিচার কৰ্ত্তে হ’ত গভর্ণরকে। আসামী গরীব হ’লে তাকে বধ্যভূমিতে নিয়ে যাওয়া হ’ত ! অন্যান্য অপরাধে অপরাধীর সম্পত্তি বাজোয়াপ্ত করা হ’ত ; বিবাহবন্ধনচ্ছেদ, ঝগড়া, লড়াই, ভয়প্রদর্শন প্রভৃতি মোকদ্দমা কোতওয়াল বা কাজী বিচার করতেন। পেলসায়েট তার “Remonstrantie"tws ziwitte roze faTs বিচারকদের কষাঘাত করতে ক্রটি করেননি ; তারা যে কিরূপ লোভী ছিল ও আসামীর নিকট হ’তে অর্থগ্রহণে কিরূপ ক্ষিপ্ৰহস্ত ছিল তা তিনি ব’লে গেছেন। তাদের লুব্ধ চাহনি ও তাদের লোলুপ মুখবিবর আসামীর মনে সদাই আতঙ্কের স্বষ্টি করত। শাজাহান বা ঔরংজীবের আমলের বিচার-প্রণালীও যে পাওয়া যায় না এমন নয়। প্রতি বুধবার সকাল আটটার সময় সম্রাট দেওয়ানী খাসে আসন গ্রহণ করতেন এবং বেলা এগারটা পৰ্য্যন্ত বিচার-কার্য্যে নিযুক্ত থাকতেন। র্তাদের চারিদিকে আদালতের বড় বড় কৰ্ম্মচারী, যেমন যাজকীয় বিধিবেত্ত কাজী, চিরপ্রচলিত প্রথারূপ আইন*tio (Common Law) oitatofi Alfo, মুফতি, ঈশ্বরতত্ত্বজ্ঞ উলেমা, নজিরজ্ঞ আইনবেত্তা, এবং কোতওয়াল বা নগররক্ষক প্রভৃতি স্ব স্ব স্থানে উপবিষ্ট থাকৃত। বিশেষ দরকার ছাড়া অন্য কোনো কৰ্ম্মচারীর সেখানে প্রবেশ