পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

e ډا ولڼ নিষেধ ছিল। ফরিয়াদীদের একে একে রাজার নিকট নিয়ে যাওয়া হ’ত, এবং তাদের বক্তব্য কৰ্ম্মচারীরা বাদশাহকে জানাত। মোকদ্দমা শুনানীর পর উলেমার সাহায্যে বাদশাহ নিজে রায় দিতেন। দূরদেশ থেকে কোনো বিচারপ্রার্থী এলে পরে জামিন তদন্তের ভার প্রাদেশিক কৰ্ত্তার উপর পড়ত ; হয় তিনি নিজেই বিচার করতেন,নয় বাদী ও ফরিয়াদীকে বাদশাহের কাছে আবার পাঠিয়ে দিতেন । ফরাসী পরিব্রাজক বাণিয়ে বলেন যে, সপ্তাহের এক নির্দিষ্ট দিনে সম্রাট র্তার গরীব প্রজাদের দশটি করে আবেদন নির্জনে শুনতেন । এগুলো সাধারণতঃ কোনো সৎব্যক্তি বা বড়লোক কর্তৃক রাজার নিকট দাখিল হ’ত । চুরি বা ডাকাতির মামলায় চোর বা ডাকাতের প্রাণদণ্ড হ’ত এবং প্রাদেশিক কৰ্ত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির ক্ষতিপূরণ করতে হ’ত। পাঠান-সম্রাট শের শাহের আমলেও এই আইনই বাহাল ছিল । গ্রামে কোনো চুরি বা খুন-খারাপি হলে ও অপরাধী ধরা না পড়লে, সমস্ত গ্রামকেই এর জন্য দায়ী করা হত। অপরাধী সনাক্ত না হ’লে গ্রামের মোড়লকে হয় কয়েদ না হয় অন্ত কোন শাস্তি দেওয়ারই রীতি ছিল । পূৰ্ব্বে একবার বলা হয়েছে যে, বাদশাহ ছাড়া ‘সদর’এর উপরও দেওয়ানি মামলা বিচারের ভার ছিল । কিন্তু একটি কথা মনে রাখতে হবে যে, বিশেষ বিশেষ দেওয়ানি মামলা ছাড়া তিনি ( সদর ) সকলপ্রকার মামলার বিচার করতে পেতেন না। প্রত্যেক প্রদেশে একটি করে সদর নিযুক্ত ছিল এবং সবগুলি সদরের উপর একটি শ্রেষ্ঠ সদর বা ‘সদর-উস্-সদূর থাকত ; এই শ্রেষ্ঠ সদরই স্থানবিশেষে ‘সদর-ই-জহা’ বা ‘সদর-ই-কুল’ ব’লে অভিহিত হতেন। ধৰ্ম্মপরায়ণ ব্যক্তি, পণ্ডিত বা ফকির কর্তৃক প্রাপ্ত সরকারী বৃত্তি বা নিষ্কর জমিগুলির যথারীতি ব্যবস্থার প্রতি দৃষ্টি রাখতে হ’ত এই সদরদের । তিনি ছিলেন সরকারী ভিক্ষাবিতরণ-কৰ্ত্তা, সুতরাং বুঝতে পারা যাচ্ছে যে, সদরের ক্ষমতা নিতাস্ত অল্প ছিল না, এবং ইচ্ছা করলে তারা অসৎ উপায়ে অনেক রোজগার করতে পারতেন। সেইজন্য এই কাৰ্য্যে চরিত্রবান লোককে বাহাল করা হ’ত । শুনতে পাওয়া যায়, আকবরের সময়ে এই কৰ্ম্মচারীরা নাকি যথেচ্ছাচারী ছিলেন ও উৎকোচ-গ্রহণে কোনো দ্বিধা বোধ করতেন না। ’ ফৌজদারী আদালতখানার দণ্ডমুণ্ডের কৰ্ত্ত ছিলেন কাজী সাহেব এবং তার কাজ ছিল ঘটনা শুনানীর পর মুফতির সহায়তায় নিজের রায় প্রকাশ করা। মুফতির কাজটি যে কি তা বোঝাতে হ’লে বলতে হবে যে, আজকালকার অ্যাডভোকেট জেনারেল মহাশয়কে যে কাজ করতে হয়, তাকে অনেকটা তাই করতে হ’ত । অর্থাৎ সাক্ষীসাবুদ নেওয়ার পর ঘটনার সারমর্ম পেশ করে কোন আইনটা ঘটনাপ্রসঙ্গে কতদূর খাটতে পারে বা কোন দণ্ড অপরাধীকে দিতে পারা যায় এই বিষয়ে কাজী সাহেবকে পরামর্শ দেওয়া। এইখানেই মুফতি কাজে রেহাই পেতেন। কিন্তু এই কাজে পারদর্শিতালাভের জন্য মুফতি মহাশয়কে চব্বিশ ঘণ্টাই আইনের বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকতে হ’ত ; কোথায় কোন মামলায় কি রায় দেওয়া হয়েছে, সেট। তাকে কণ্ঠস্থ রাখতে হ’ত ; আইনের মারপ্যাচের মধ্যেই তিনি দিন কাটাতেন । নজিরের বিরুদ্ধে কাজী কোনো রায় দিলে, মুফতি অতি নম্রতা সহকারে বিচারককে বলতেন যে, এই জাতীয় ঘটনায় পূৰ্ব্বে অমুক সাজা দেওয়া হয়েছে আর তার নজির অমুক জায়গায় আছে ; তিনি এই বইটি পড়ে নিজের রায় দিলে ভাল হয়, ইত্যাদি । তখন কাজী সাহেব মুফতির বক্তব্য অনুযায়ী নিজের বিচারাজ্ঞা দিতেন। কাজীদের যে খুবই আইনজ্ঞ হতে হ’ত এমন নয়, কারণ র্তার কাজ থেকে বোঝা যাচ্চে যে র্তাদের আইন জ্ঞানের ততটা দরকার হ’ত না, যতটা দরকার হ’ত সাধারণ বুদ্ধির ও আরবী ভাষায় বুৎপত্তির। তবে সাধারণতঃ এই চাকরীর জন্য আবেদনকারীদের আইনজ্ঞানের প্রতি যে একেবারেই লক্ষ্য রাখা হ’ত না এমন নয়, কিন্তু সেই সঙ্গে তাদের সত্যনিষ্ঠ নিরপেক্ষতা প্রভৃতি সদগুণের প্রতি বেশী লক্ষ্য রাখা হ’ত । মুসলমান আইনে নিরক্ষর ব্যক্তিকে কাজীর পদে বাহাল করার রীতি দেখতে পাওয়া যায়, কারণ কাজীর কার্ষ্য মাত্র অন্যের পরামর্শ অনুসারে নিজের বিধান দেওয়া । প্রজার স্বাভাবিক অধিকার বজায় রাখবার জন্যই এই পদের