পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] পিছনে অহুবাদকগণের আচারজাত অনুভূতির কোনও দাবি আছে কি না ; এই অনুবাদের পিছনে আমাদের আটত্রিশ বৎসরের আচরণের চেষ্টার দাবি আছে। এইজন্য আমার একান্ত আগ্রহ যে, আমার যে-সকল গুজরাতী ভ্রাতা ও ভগিনীরা ধৰ্ম্মজীবন অভ্যাস করিতে ইচ্ছা করেন, র্তাহারা এই অহুবাদ পাঠ ও বিচার করিয়া তস্থার শক্তিলাভ করেন। এই অতুবাদে আমার সঙ্গীগণের পরিশ্রম রহিয়াছে। আমার সংস্কৃত জ্ঞান অত্যন্ত অপূর্ণ হওয়ার জন্য শব্দের অর্থ সম্বন্ধে আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস না থাকায় এই অহুবাদ বিনোবা, কাকা কালেলকার, মহাদেব দেশাই এবং কিশোরলাল মশরুবালা দেখিয়া দিয়াছেন । R এইবার গীতার অর্থের বিষয় বলিব । খৃষ্টাব্দে যখন প্রথম গীতা দেখিলাম তখনই আমার মনে হইয়াছিল যে, ইহা ঐতিহাসিক গ্রন্থ নহে, বরং ইহাতে ভৌতিক যুদ্ধের বর্ণনাচ্ছলে প্রত্যেক মামুষের হৃদয়ে নিরস্তর যে দ্বন্দ্বযুদ্ধ চলিতেছে তাহারই বর্ণনা আছে। অস্তরের যুদ্ধকে সরস করিয়া দেখাইবার জন্য এখানে মানুষ যোদ্ধার কল্পনা করা হইয়াছে। এই প্রথম উপলব্ধি ধৰ্ম্ম সম্বন্ধে এবং গীতা সম্বন্ধে বিশেষভাবে বিচার করার পর দৃঢ়তর হইয়াছে। তাহ ছাড়া মহাভারত পাঠ করার পর এই বিচার আরও দৃঢ় হইয়াছে। আধুনিক অর্থে মহাভারতকে ইতিহাস বলিয়া অামি গণনা করি না। তাহার বিশেষ প্রমাণ আদিপর্বেই আছে। গ্রন্থোক্ত পাত্ৰগণের অমানুষী এবং অতিমাতুৰী উৎপত্তি বর্ণনা করিয়া ব্যাসদেব রাজাপ্রজার ঐতিহাসিকতার উচ্ছেদসাধন করিয়াছেন। মূলে র্তাহারা ঐতিহাসিক ব্যক্তি হইতে পারেন, কিন্তু মহাভারতে ব্যাসদেব তাহাদের অবতারণা করিয়াছেন ধর্মের তত্ত্ব প্রতিপাদন করিবার জন্যই। মহাভারতকার ত ভৌতিক যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা প্রমাণ করিলেন না, বরং প্রমাণ করিলেন তাহার ব্যর্থতা । তিনি বিজেতাকে কাদাইলেন, তাহাদের >brbヤ - ケs অনাসক্তিযোগ निञ्च चन्नङात्र कब्रांश्न ७दश् छूःथ झांज़ा श्राद्र किहूई বাকি রাখিলেন না । গীত। এই মহামস্ত্রের শিরোমণি । তাহার দ্বিতীয় অধ্যায়ে ভৌতিক যুদ্ধ ব্যবহার শিখাইবার ছলে স্থিতপ্রজ্ঞের বর্ণনা-লক্ষণ শিক্ষা দেওয়া হইয়াছে । আমার ত মনে হয় ভৌতিক যুদ্ধের সঙ্গে স্থিতপ্রজ্ঞের কোন সম্বন্ধ নাই, একথা তাহার লক্ষণের মধ্যেই রহিয়াছে। সামান্ত একটা পারিবারিক বিবাদের যোগ্যতা-অযোগ্যতা নির্ণয় করিবার জন্য গীতার ন্যায় গ্রন্থের রচনা সম্ভব বলিয়া মনে হয় না । গীতার শ্ৰীকৃষ্ণ মূৰ্ত্তিমান শুদ্ধ ও পূর্ণজ্ঞান কিন্তু কাল্পনিক । এখানে কৃষ্ণ নামক অবতারকে অস্বীকার করা হইতেছে না। শুধু ইহাই বলা হইতেছে যে, পূর্ণ কৃষ্ণ কাল্পনিক। পূর্ণাবতারের কল্পনা পরে করা হইয়াছে। অবতার কথার অর্থ শরীরধারী পুরুষবিশেষ । জীবমাত্রেই ঈশ্বরের অবতার, কিন্তু লৌকিক ভাষায় আমরা সকলকে অরতার বলি না। যে পুরুষ র্তাহার যুগে সর্বশ্রেষ্ঠ ধৰ্ম্মভাবপূর্ণ, উত্তরকালের জনসাধারণ র্তাহাকেই অবতাররূপে পূজা করে । ইহাতে আমি কোন দোষ দেখি না । ইহা দ্বারা ঈশ্বরের মহত্বকে ক্ষুঃ করা হয় না, সত্যকেও আঘাত করা হয় না। “আদম ভগবান নহেন, কিন্তু তিনি ঈশ্বরের জ্যোতি হইতে স্বতন্ত্রও নহেন।” যাহার মধ্যে সেই যুগে সৰ্ব্বাপেক্ষ অধিক ধৰ্ম্মভাব জাগ্রত হইয়াছে, তিনিই বিশেষ অবতার। এইরূপ দৃষ্টি দিয়া দেখিলে শ্ৰীকৃষ্ণরূপী পূর্ণাবতার আজও হিন্দুধৰ্ম্মসাম্রাজ্যে একচ্ছত্রাধিপত্য করিতেছেন । ইহার মধ্যেই মানুষের প্রিয়তম এবং চরমতম আকাজক্ষার স্বচনা রহিয়াছে। ঈশ্বরত্বে পৌছিতে না পারিলে মানুষের আশা মিটে না, শাস্তি মিলে না । ঈশ্বরত্ব লাভ করিবার চেষ্টাই একমাত্র সত্য পুরুষার্থ। ইহাই আত্মদর্শন। এই আত্মদর্শনই সকল ধৰ্ম্মগ্রন্থের এবং গীতারও উপপাদ্য বিষয় । কিন্তু গীতাকার এই বিষয় প্রতিপাদন করিবার জন্য গীত রচনা করেন নাই। গীতার উদ্দেশ্য আত্মার্থীকে আত্মদৰ্শন