পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৭৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१२.8 সে এখন থাকৃত আর তার সঙ্গে মিহিরদার ঘুমের কম্পিটিশন হত, তাহ’লে কে জিতত বল ত । আমি বলব ?—মিহির-দা। আমি আবার অঙ্ক কষতে বসলাম । চারটে বাজে, আমার খিদে পেয়েছে । ঝি ত আসেনি। খাবার আনবে কে ? ভাবতে ভাবতেই ঝি এল । ৪ অনেকদিন বাচবে, ন মা ? আমি টাকা দিলাম, ও খাবার নিয়ে এল। কিচ্ছ ভেবো না, মা, মুখুয্যেদের দোকান থেকেই এনেছে । আমার পাওয়া শেষ হ’ল । জলের গ্লাস নিয়ে এসে ঝি জিজ্ঞেস করলে, “খোকাবাবু, দুধ ত ছান হয়ে রয়েছে, কিন্তু ওটাকে চিনি দিয়ে ঘন করলে কে ?’ আমি বললাম, সহমা । বুঝলাম যে লীলা ওটা একসময় দিয়ে গিয়েছে । বিষ্টকে জিজ্ঞেস গেলাম যে, ওঁর। কথন ভাসান দেখতে যাবে। মিহির-দা ঘুমোচ্ছেম। বেলা সাড়ে পাচটা,বাড়ী ফিরে এলাম, মিহির-দ। খবরের কাগজ পড়ছেন । লছমী সিং এখন ও ফেরেনি। সন্ধ্যে ছ’ট, মিহির-দা ভাসান দেখতে বার হলেন। একটু পরেই বিষ্ট, লীলা, খুকু, বিশু, কচি ওরা সব হুড় মুড়, করে লাইব্রেরী-ঘরে এসে ঢুকুল, সব কটাতেই একসঙ্গে চীৎকার করে উঠল, “খোক, শীগগির কর, বাব! করতে fাড়িয়ে রয়েছেন, আমরা ভাসান দেপতে যাব । আমি দেখলাম, লছমী সিংয়ের জন্তে বসে থাকৃলে চলবে না। চটপট করে কাপড়, জাম, জুতে। পরে বিষ্টদের সঙ্গে ঠাকুর দেখতে বেরোলাম, গেটে তিনটে তাল দিয়ে । বেরোবার আগে একবার বৈঠকখান|ঘরটার ভিতরে ঢুকতেই দেখতে পেলাম, একটা কাচের প্লাসে আধ গ্লাস জল, সেটা মেঝেতে পড়ে গ্রয়েছ,— মিহির-দ৷ জল থেয়ে রেখে গিয়েছেন বোধ হয় । তক্তপোষগুলোর ওপর আর মেঝের উপর কতকগুলো বাংলা খবরের কাগজ ছড়ান। ঘরের কোণে সেই যে মান্ধাতার আমলের টেবিলটা আছে, তার ওপরে পাত খবরের কাগজগুলোতে অনেক পান আর চুনের দাগ। বাংলা খবরের কাগজগুলো ‘হোয়াটনট’টার নীচের তাকট থেকে পড়ি-পড়ি’ কবৃছে । [ ৩eশ ভাগ, ১ম খণ্ড কতকগুলো জুতোর পাটি ঘরময় ছড়ান। মিহিরদা’র বড় দামী ভাঙা আয়নাটার খোজ নেই, বোধ হয় তক্তপোষের তলায় পড়ে গিয়েছিল । কোঁচটার ওপর কতকগুলো মোজ৷ গেঞ্জির খালি বাক্স ছড়ান । মিহির-দ। কিন্তু একটু অপরিস্কার আছেন, না মা ? আমরা ভাসান দেখতে গেলাম। যখন বাড়ী ফিরে এলাম, তখন সাড়ে আটটা হ’বে । দরজার তালা সবেমাত্র খুলেছি, এমন সময় মিহিরদা' এসে বললেন, “খোকা, তুমি এই আসছ ? আমি অনেকক্ষণ এসেছি, দরজায় তাল। দিয়ে গিয়েছিলে, তাই ধীরেশবাবুদের বৈঠকখানায় ব’সে গল্প করছিলাম। কাপড় জমা ছেড়েই তাড়াতাড়ি সইমাকে বিজয়ার প্রণাম করতে ছুটলাম। ধানিকক্ষণ হুটোপটি করলাম। বাড়া ফিরে এসে শুনলাম যে, পিসিমা খাবার পাঠিয়ে দিয়েছেন । আবার একটু খাবার থেলাম । তারপরে এই ভেবে রান্নাঘরে ঢুকলাম যে, জাল দেওয়া দুধটুকু পাব । কিন্তু দেখলাম যে কড়াইট বেশ পরিষ্কার, আর তার ভিতর জল ঢাল রয়েছে। মিহিরদী’ খেয়ে গেছেন নিশ্চয়! আমার বেশ হাসি পেল । মিহির-দ। কিন্তু বেশ লোভী আছেন, না ? 'লছ মা সিং বাইরে থেকে ৬াক দিল, “খোকাবাবু আমি বারান্দায়ু বেরিয়ে হিন্দীতে বললাম, লছমী সিং, তোমায় ন৷ আমি সন্ধ্যের আগে ফিরতে বলেছিলাম । লছমী সিং অনেক কাকুতি মিনতি করে বলতে লাগল যে অনেকদিন পরে তার কোন এক ‘দেশক। আদমী’র সঙ্গে না কি দেপ, সে কিছুতেই ছাড়তে চায় না, তাই দেরী হ’য়ে গিয়েছে। তার অন্যায় হয়েছে, এমন আর কোন দিন হবে না, এইবারটা খোকাবাবু তাকে মাফ করুন। লছমী সিং চলে গেল। আমি হাত পা ধুয়ে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম । বিজয়ার দিন সকালবেল ত তোমরা গিয়েছ, এই ত সেদিনকার সমস্ত খবর। তুমি আমায় বলেছিলে ত সমস্ত দিনের সব কথা লিখতে । ঠিক তাই লিখেছি । কিচ্ছটি যে বাদ দিয়েছি সে কথা আর কাউকে বলতে হয় না । কিন্তু চিঠিটা কত বড় হ’য়েছে দেখেছ, মা ? —তোমরা কেমন আছ ? আমি ভাল আছি। তুমি