পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] উমারাণী সপ্রতিভ মুখে ঘাড় নাড়িয়া জানাইল তাহার কোন আপত্তি নাই । ভদ্রের শেষ, ম্যালেরিয়ার সময়, তবে এখনও খুব বেশী আরম্ভ হয় নাই, বাড়ী বাড়ী লাথামুড়ি দেওয়া সুরু হইতে এখনও দেরী আছে । উমারাণীর হার্টুনির বেগ নিস্তেজ হইয়া পড়িতে থাকে, ক্রমে সে মাঝে মাঝে পথের ধারে বসিতে লাগিল, মাঝে মাঝে হাই তুলিতে লাগিল । তাহার মাম বলিল— কি হয়েচে খুকু, রদুর বড় বেশী, আর বেশী নেই চলে।-- বন্ধুর বাড়ি পৌছিবার পূৰ্ব্বেই উমারাণী বলিল— মামা আমার শীত লাগচে– —শীত কি রে ? ভাদ্রমাসে এই গরমে শীত ? ৪ কিছু না, চলো— খুকী আর কিছু না বলিয়া বেশ চলিল বটে, কিন্তু খানিকদূর গিয়া তাহার মনে হুইল শীত একটু বেশী বেশীই করিতেছে। শুধু শীত নয়, তৃষ্ণাও পাইয়াছে। সে সাহসে ভর করিয়া বলিল –মামী, আমি জল খাবো— -- বড় বিপদ দেখচি, আচ্ছা আগে চলো গিয়ে পৌছুই—থেও এখন জল— গন্তব্যস্থানে পৌছিয়া উমারাণীর মাম তাহার কথা ভুলিয়াই গেল । অনেকদিন পরে পুরাতন বন্ধুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, গল্পগুজব ও হাসিঠাট্রায় মসগুল হইয়া উমারাণীর সুখদুঃখের দিকে চাহিবার অবকাশ পাইল না । উমারাণী দু-একবার কি বলিল, আলাপের গোলমালে সে কথা কেহ কানে তুলিল না । খানিকক্ষণ পরে তাহার মামা ফিরিয়া দেখিল সে গুটিমুটি হইয়া রৌদ্রে বসিয়া আছে, মামার প্রশ্নের উত্তরে বলিল—জল খাবে। মামা, জল তেষ্ট পেয়েচে— —দেখি ? তাই তো রে, গা যে বড় গরম—উ:, পুব জর হয়েচে—যে ম্যালেরিয়ার জায়গা -আয় চল ওদের ঘরে শুইয়ে রাখি গে—ওঠ – উমারাণীকে জল খাওয়াইয়া বিছানায় শোয়াইয়া দিয়া মামা পুনরায় পাড়ার দিকে বাহির হইল। স্নানাহার বন্ধুদের বাড়িতেই সম্পন্ন হইল, ক্রমে দুপুর গড়াইয়া গেল, মুখুয্যে পাড়ার হাফ-আখড়াই-এর ঘরে গ্রামের নিষ্কৰ্ম্ম৷ খুকীর কাও し”●> ছোকৃরার দল একে একে আসিয়া পৌছিল, প্রকাণ্ড কের্টুলিতে চায়ের জল চড়িল, গল্পে গল্পে বেলা একেবারেই গেল পড়িয়া । এতক্ষণে হঠাৎ খুকীর কথা মনে পড়িয়া গেল তাহার মামার । সে বলিল—ওই যাঃ, তোমরা বোসো ভাই, খুৰ্কীটার অসুখ হয়েচে ব’লে ভঙ্গলদের বাইরের ঘরে শুইয়ে রেখে এসেচি অনেকক্ষণ, দেখে আসি দাড়াও -- ভম্বলদের বাড়ির বাহিরের উঠানে গোয়ালের কাছে আসিতে ভস্বলের বড়ছেলে টোনা বলিল—খুকু কোথায় কাক ? খুকীর মাম। বিস্ময়ের মরে বলিল—কেন, সে তোদের বাইরের ঘরে শুয়ে নেই ? —ম! কাক, সে ত অনেকক্ষণ আপনার কাছে যাবে ব’লে বেরিয়েচে—তখন খুব রদ,র—উঠে কাদতে লাগলে, বললে মামার কাছে যাবোঁ—শুনলে না, তখুনি সেই রদ,রে আপনাকে খু এতে বেরুলো— —সে কি রে! আমি কোথায় আছি তা সে জানবে কেমন কোরে ? -- আর তোরা বা ছেলেমানুষকে ছেড়ে দিলি কি ব’লে ?...বেশ লোক তো ! ..আর এ মেয়ে নিয়েও হয়েচে – মামা অত্যন্ত ব্যস্ত ও উদ্বিগ্নভাবে পুনরায় পাড়ার দিকে ফিরিল । পরিচিত স্থানগুলাতে খোজা শেষ হইল, কোথাও সে নাই, কোন পথ দিয়। কখন চলিয়া গিয়াছিল কাহারও চোখে পড়ে নাই, কেবল মতি মুখুয্যের ছেলে বলিল, অনেকক্ষণ আগে একটি অপরিচিত ছোট খুকীকে চড় চড়ে রৌদ্রে টলিতে টলিতে ভম্বলদের বাড়ির উঠানের আগল পার হইয়া আসিতে দেখিয়াছিল বটে, খুর্কীকে সে চেনে না, ভাবিয়াছিল ভম্বলদের বাড়িতে কোনো কুটুম্ব হয়ত আসিয়া থাকিবে, তাহাদের মেয়ে । অবশেষে তাহাকে পাওয়া গেল গ্রামের বাহিরের পথে । মামাকে খুজিতে বাহির হইয়া পথ হারাইয়৷ ঘুরিতে ঘুরিতে নিরুপায় অবস্থায় পথের উপর বসিয়৷ কাদিতেছিল, বৃদ্ধ হারণ সরকার দেখিতে পাইয়া লইয়া আসেন । জিজ্ঞাসা করিয়া জানা গেল, সে সারাদিন কিছুই খায় নাই,-থাইবার মধ্যে দুপুরবেলা ভস্থলদের বাড়ীর কোন্‌