পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] কাহাকেও রঙ্গমঞ্চে দেখা গেল না, তরুণী কাদায় অrছাড় খাইল না, বা গাড়ী চাপা পড়িবারও কোনো লক্ষণ দেখাইল না । মঙজীর দিকে মাঝে মাঝে তাকাইয় দেখিত বটে, তবে সে দৃষ্টির ভিতর বিশেষ কোনো ভাব প্রকাশ পাইত না । মঙজী কিন্তু দমিবার ছেলে নয় । তাহার মনে দৃঢ় ধারণ হইল, তরুণীর নিশ্চয়ই কোনে প্রেমাম্পদ আছে, ন হইলে এই বয়সের মেয়ে দিনের পর দিন কাহারও দিকে তাকায় না, সোজ। গিয়। গাড়ীতে উঠিয়া বসে, ইহা কেমন যেন অস্বাভাবিক । নিজের কাল্পনিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে খুজিয়া বাহির করিতে সে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হইল । একবার খুজিয়া বাহির করিতে পারিলে হয়, তাহাকে কি আর সে আস্ত রাখিবে ? বৰ্ম্ম যুবকের পক্ষে ছোরা চালান কিছুই নৃতন ব্যাপার নয়, প্রণয়ের প্রতিদ্বন্দ্বীকে বঁচিতে দেওয়াই যেন তাহদের লজ্জার বিষয় । তরুণীর প্রণয়ীটি যে কে, তাহা গলিতে বসিয়। বুঝিবার কোন উপায় ছিল না, কারণ বাড়ীতে কেহই আসিক না । মঙজী স্থির বুঝিল, তরুণী সকালে এবং বিকালে যখন মোটর চড়িয়া বেড়াইতে বাহির হয়, তখনই দেখা সাক্ষাতের কাজটা সারিয়া আসে । আচ্ছা, তাহাকে ফাকি দেওয়া এত সহজ ব্যাপার নয়, ট্যাক্সি চড়িয়া পিছন পিছন দুই দিন ঘুরিলেই সব সন্ধান জানা যাইবে । অবশ্য পয়সা খরচ হইবে, বেশ কিছু। তাহার মত দরিদ্রের পক্ষে এতখানি দেওয়া শক্ত, তবু না দিলে যখন নয়, তখন সে দিবেই । যুবতীকে পাইবার জন্য সে প্রাণও দিতে পারিত, টাকা ত তুচ্ছ জিনিষ । মঙজী বিধবা মাতার সহিত দোতলা একটি ছোট ফ্ল্যাটে বাস করে । একটি মাত্র ঘর, পিছনে রান্নাঘর, স্বানের ঘর প্রভৃতি। সামনের ঘরখানি দিনের বেলা বসিবার ঘররূপে এবং রাত্রে শয়নকক্ষরূপে ব্যবহৃত হয় । মঙজীর মেজাজে সাহেবীআনাটা বড় বেশী, বন্ধুবান্ধব আসিয়া যে শুইবার খাট ভিন্ন আর বসিবার কোনে আসন পাইবে না, ইহা ভাবিতেই তাহার মাথা গরম হইয়া উঠিত। কাজেই বৃদ্ধ মাতাকে বাধ্য হইয়া বাক্স প্যাটুর সব রান্নাঘরে এবং এখানে ওখানে লুকাইয়। রূপের ফাদ bペ> রাথিতে হইত। আবার প্রতি রাত্রে চেয়ার টেবিল সরাইয়া, কোণে গাদা করিয়া রাথিয়া, বিছান। পাতিতে হইত। এই বাড়ীটাতে বধু লইয়া আসিবার কথা মনে হইলেই মঙজীর মন দমিয়া যাইত । এমন আবহাওয়ায় কি কথনে প্রেম স্ফূৰ্ত্তি পাইতে পারে ? তবে মনে এ সত্ত্বেনা ও ছিল যে, তাহার আকাঙ্ক্ষিত বন্ধটিকে যদি সে ঘরে আনিতে পারে, তাহ হইলে সঙ্গে সঙ্গে একটি ভারি রকম টাকার বস্তাও অসিয়া পড়িবে এবং তখন পছন্দমত বাড়ী জোগাড় কর কিছুমাত্র শক্ত হইবে না । সকাল বেল চ খাইয়া, ঘরের সামনের তিনহাত ছোট বারান্দাটিতে বসিয়া মঙজী নান। কথা ভাবিতেছিল । সেদিন কি একট। বৰ্ম্ম পৰ্ব্ব উপলক্ষ্যে ছুটি, অপিস যাইবার নাই । থানিক পরে স্নানাহার করিয়া, বন্ধুদের সঙ্গে আডড দিতে বাহির হইলেই চলিবে, এখন বসিয়া বসিয়া সে কল্পনাকে লাগাম ছাড়িয়া দিতে ছিল । হঠাৎ একটা ট্যাক্সি আসিয়া সামনের তেতলা বাড়ীর সম্মুখে আসিয় দাড়াইল । মঙজী চমকিত হইয়া উঠিল। আজ হঠাৎ ট্যাক্সি কেন ? নিজেদের গাড়ী কি হইল ? তাড়াতাড়ি চটিজোড়া পায়ে দিয়া সে রাস্তায় নামিয়া আসিল । এবাড়ীতে কে আসিল, কে কোথায় গেল, কোনো খবর সে পারতপক্ষে জানিতে ক্রটি করিত नीं । বেশীক্ষণ অপেক্ষা করিতে হইল না। যুবতী মা সান নয়নমনোহর পোষাকে রূপের দীপ্তি ছড়াইতে ছড়াইতে নামিয়া আসিয়। ট্যাক্সিতে চড়িয়া বসিল । গাড়ীটা ছাড়িবার জন্য ষ্টার্ট দিতেছে দেখিয়া মঙজীর একেবারে মাথা গরম হইয়া উঠিল । এইরূপ একাকী যাওয়া যখন হইতেছে, তখন নিশ্চয়ই ইহার ভিতর কোনো অভিসন্ধি আছে। অন্যদিন মায়ের সঙ্গে বাড়ীর গাড়ীতে যায়, আজ ট্যাক্সিতে একল। যাইবার মানে ? অবশুই মাকে লুকাইয়া কোনো নিষিদ্ধ স্থানে যাইবার উদ্দেশু। মঙজী তৎক্ষণাৎ স্থির করিয়া ফেলিল, সে পিছু লইবে । কপাল তাহার ভাল ছিল, গলির মোড়ে আর একট তড়িা