१० প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩৭ SAASAASAASAAMAMAAASAASAASAAAS AMMM MAMAAA AAAA AAAA AAAAMAAAA ভিতর একটি ছোট বাসাবাড়ী, আরও দুই-তিনজন লোক আছে, স্ত্রীলোক কেহ নাই। যে কালীচরণকে ডাকিয়া আনিয়াছিল সে বলিল,—দেখ, আমরা এই চারজন মেসে আছি, বেশী কাজকৰ্ম্ম নেই, তোমাকে খাওয়া পরা আর পাচ টাকা মাইনে দেব। কি বল ? কালীচরণ যেন হাত বাড়াইয়া স্বৰ্গ পাইল । বাড়ীতে মাসে মাসে পাচ টাকা পাঠাইতে পারিলে আর ভাবনা কি ? ঘরে তাহার স্ত্রী আর একটি ছোট মেয়ে। স্ত্রী হাটের দিন লাউ, কুমড়া, পটল বেচিয়া কিছু পায়। ঘরে চরকায় স্থত কাটিয়া তাতিকে বিক্রয় করে, কুড়েঘরের পাশে ফালির মতন এতটুকু জমি তাহাতে ঝিঙ্গে, ধুতুল, লাউ, কুমড়া, লঙ্কা আজায়, চাষীদের ধান কাটা হইলে ধানের বোঝা বহন করিয়া কিছু ধান পায়, টেশকেলে টেকিতে পাড় দিয়া কিছু চাল পায়, ডাল ভাঙিয়া মাসকলাইয়ের খোসা খুদ পায়। আহলাদে আটখানা হইয়া কালীচরণ বলিল,—যে আজ্ঞে, ঐ মাইনেই আমার কবুল । কালীচরণের চাকরী হইল। মনিবেরা তাহাকে এক জোড় কাপড় আর একখানা গামছা কিনিয়া দিল । সে বাড়ীর কাজকৰ্ম্ম করে, বাজার-হাট করে, ফাই-ফরমাস খাটে। সকাল বেলা বাজার করিবার সময় মেসের একজন বাবু তাহার সঙ্গে যায়, বাজারে ঢুকিতেই তাহার হাতে একখানা দশ টাকার নোট দিয়া বলে,—আলুর দোকানে এই নোট খানা ভাঙিয়ে তুমি বাজার কর ত, আমি একটা কাজ সেরে আসি। কালীচরণ নোট ভাঙাইয়া বাজার করে কিন্তু বাবুর আর দেখা নাই। বাজার করিয়া কালীচরণ বাড়ী ফিরিয়া যাইত। বাজারের পয়সা হইতে চুরী করা তাহাকে দিয়া হইত না, তার একটা পাড়াগেয়ে কুসংস্কার ছিল যে, মাথার উপর ধৰ্ম্ম আছেন, অধৰ্ম্মের পয়সা ভোগে আসে না। বাবুরা রোজ এক বাজারে যাইত না, কালীচরণকে সাত বাজার ঘুরিতে হইত, আর প্রতিদিন তাহাকে একখানা নূতন খসখসে নোট ভাঙাইতে হইত। খুচরা টাকা চাহিলে বাবুরা বলিত, তাহাদের নিজের অন্য খরচ আছে, দশ টাকার কমে হয় না। বাবুরা পালা করিয়া কালীচরণের সঙ্গে যাইত, এক বাজার ছাড়িয়া অন্য বাজারে [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড ്~~ക്ഷ-ാ ঘুরিত, কিন্তু নোট ভাঙাইবার বেলা কালীচরণ এক, কোন বাবুর টিকিট পর্য্যন্ত দেখা যাইত না। কালীচরণের ক্রমে উন্নতি হইতে লাগিল। শুধু গায় নিতান্ত অসভ্য দেখায় বলিয়া বাবুরা তাহাকে পিরাণ কিনিয়া দিল, পায়ের জন্য পুরাতন জুতা দিল। সেই সঙ্গে বাজারের মাত্রাও বাড়িতে লাগিল। কোন দিন এক বাবু তাহার হাতে চারিখানা নোট গুজিয়া দিয়া, কাপড়ের দোকান দেখাইয়া দিয়া বলিত, ‘কালীচরণ, দশ টাকা জোড়া দু-জোড়া লালপেড়ে আর দু-জোড়া কালা পেড়ে দেশী ধুতি কিনে তুমি এই সামনের মোড়ে গিয়ে দাড়াও আমি এই এলাম বলে।’ কালীচরণ কাপড় কিনিয়া মোড়ে আসিয়া দেখে বাবুর কোন চিহ্ন নাই। সে ধুতি কয়জোড়া বগল দাব করিয়া বাসায় ফিরিয়া আসে । © একদিন একটা দোকানে কালীচরণ বাবুর হুকুম-মত কতকগুলা জিনিষ খরিদ করিয়া পাচখানা নোট বাহির করিয়া দিল। বাবু তাহাকে বলিয়াছিল, একজনের সঙ্গে দেখা করে আমি এখনি আসচি। দোকানদার নোট পাচখানা হাতে করিয়া কালীচরণের মুখের দিকে চাহিয়া কহিল, ‘দোকানে রেজকি নেই, আমি একখান নোট ভাঙিয়ে আনি । দোকানের পিছনে এক পোদারের দোকান। দোকানদার পোদারকে বলিল,—এ গুলো একবার দেখ দেখি, আমার যেন কি রকম, কি রকম ঠেক্চে। পোদার নোটগুলা হাতে করিয়া, উন্টাইয়া-পাণ্টাইয়া ঠাহর করিয়া দেখিল । বলিল,—এ জাল। বাজারে কিছুদিন থেকে জাল নোট চলচে, শোন নি ? —শুনেচি বই কি। তাই ত আমার সন্দ হ’ল। দোকানদার দোকানে ফিরিল না। মোড়ে গিয়া পাহারাওয়ালাকে ডাকিয়া আনিল। কালীচরণের বাবু মোড়ের কাছে দাড়াইয়া সিগারেট টানিতেছিল। দোকানদার পাহারাওয়ালাকে সঙ্গে করিয়া দোকানে লইয়। যাইতেছে দেখিয়া বাবু একটা ট্যাক্সি ডাকিয়া ভো করিয়া, চলিয়া গেল । কালীচরণ দোকানে নিশ্চিস্ত হইয়া বসিয়া আছে।
পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।