পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

boసిe প্রবাসী—আশ্বিন, ১৩৩৭ কে ? বাবা ত তার ব্যবসা ছেড়ে একদিনের জন্যেও ** চান না, তিনি আবার যাবেন বেড়াতে ” দেবকুমার বলিল, “না হয় একলাই যাবেন। আর আপনার বাবা ছাড়া নিয়ে যাবার অন্ত লোক ও কেউ জুটে যাওয়া বিচিত্র নয়।” মায়ার গালের কাছটা একটু লাল হইয়া উঠিল। সে বলিল, “অনেক ত ঘোরা হ’ল, এখন একটু বসা যাক, চেয়ার দিয়ে গিয়েছে।” দেবকুমার বলিল, “আমি যাচ্ছি না একেই, তার উপর আপনি আমায় আরও প্রশ্রয় দিচ্ছেন। এরকম করলে আমি রোজ এসে উৎপাত করব।” মায়া বলিল, “ভালই ত, আমি তাতে মোটেই দুঃখিত হব না।” দেবকুমার বলিল, “দেখুন একথাটা আমি কিন্তু seriously-ই নিলাম, আপনি যদিও খুব সম্ভব ভদ্রতা করে বলেছেন ।” o মায়। লজ্জিত হইয়া ভাবিল, ঠিক এমনভাবে কথাটা না বলিলেও হইত। কিন্তু বলিয়াছে যখন তখন ফিরান আর যায় না। মনের ভিতর কে যেন তাহাকে এই কথাট বলাইতেই চাহিতেছিল। দেবকুমার আসিলে সে যে খুশি হয়, তাহ দেবকুমার জানিলে দুঃখটা কি ? কৃষ্ণপক্ষের রাত্রি, অন্ধকার হইয়া আসিল । এদিকটা সব সময়েই নীরব, এখন যেন নীরবতাটা আরও গভীরতর হইয়া আসিল । মামুষের নিঃশ্বাসের শব্দও যেন স্পষ্ট হইয়া কানে বাজিতে লাগিল । দেবকুমার বলিল, “চা থেতে এসে ত রাত হয়ে গেল । অন্ত মানুষ হ’লে মনে করত যে, রাত্রের থাওয়াটাও খেয়ে যাবার মতলব । আপনি অবশু তা মনে করছেন না ?” মায়া বলিল, “না, জাহাজে আপনার খাওয়ার নমুনা ত দেখেছি, কাজেই অত পেটুক আপনাকে মনে হচ্ছে না।” দেবকুমার নিতান্ত অনিচ্ছাসত্বেই উঠিয়া দাড়াইল । বলিল, “আপনার বাবা বাড়ী এসে আমাকে বসে থাকতে দেখলে নিশ্চয়ই পাগল মনে করবেন। আপনি কি শহরের দিকে একেবারেই ধান না ?” মায়া বলিল, “যাই বই কি ? বন্ধুবান্ধবের বাড়ী যাই,

  • সিনেমায় যাই, ভাল opera কি ballet এলে তাতেও

शाहे ।” দেবকুমার খুব উৎসাহিত হইয়া বলিল, “একটা খুব ভাল Russian ballet এসেছে, যাবেন ? বলেন ত টিকিট করে রাখি।” মায়া বলিল,“বাবার সময় হবে কি না তাত জানি না। র্তাকে জিগগেষ করে জানাব।” দেবকুমার একটু দমিয়া গেল, বলিল, তা ঠিক, আমারই ভুল হয়েছিল । ওদেশে ত বাপ-মার অনুমতি নেওয়া জিনিষটা একটা প্রাগৈতিহাসিক কাণ্ড হয়ে দাড়িয়েছে, এখানে যে তা মোটেই নয়, তা মনে ছিল না। আমি টেলিফোন নিয়েছি, আমার রুম্-এ । আমায়, তাহ’লে কাল দয়া করে জানাবেন।” মায়া বলিল, “আচ্ছা, বাবার এসবে এখনও ডৎসাহ আছে, সময় থাকলে তিনি কখনও না বলবেন না।” দেবকুমার বলিল, “আপনাকে এতক্ষণ জালানোর শাস্তিস্বরূপ এরপর আমায় হেঁটে রেজুন ফিরতে হবে বোধ হয় । এ দেশে গাড়ী ট্যাক্সি কিছুই পাওয়া যায় না ত ?” মায়া বলিল, “আমার গাড়ীতে যান, আমি ড্রাইভারকে বলেই রেখেছি। এদিকে মোটর-বস ট্রাম সবই আছে, কিন্তু তাতে যাবার কিছু দরকার নেই।” দেবকুমার বলিল, “আপত্তি করা উচিত ছিল, কিন্তু. করব না। আপনার ড্রাইভার যদিও মনে মনে আমাকে খুব গাল দেবে।” * মায়া বলিল, “গাল দেবার জন্তে ত তাকে রাখা হয়নি, কাজ করবার জন্যে রাখা হয়েছে। তা ছাড়া বিকেলের দিকে আমাদের বাড়ী অতিথি অভ্যাগত কেউ এলের্তাদের যে আমরা বাড়ী পৌছে দিতে বলব, তা তাদের জানাই আছে।” দেবকুমার এবং মায়া দুইজনেই গাড়ী-বারান্দার দিকে অগ্রসর হইল। দেবকুমার নীচু গলায় বলিল, “আমি যদি কবি হতাম, তাহলে এই রাত্রিটার বিষয়ে একটা কবিতা লিখতাম। কিন্তু লে ক্ষমতাটা নেই। আমার দিক দিয়ে তাতে ক্ষতি নেই, কারণ অনুভূতির মধ্যে