পাতা:প্রবাসী (ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৯৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রবাসী—আশ্বিন, ১৩৩৭ [ ৩০শ ভাগ, ১ম খণ্ড তাহার সভাপতি মুফতী কিফায়েংউল্লা এবং স্পাদক মৌলানা আহমদ সাইয়েদ ভূতপূৰ্ব্ব সভাপতি ডাঃ আনসারীকে জানাইয়াছিলেন যে, তাহার কংগ্রেস কাৰ্য্যনিৰ্ব্বাঙ্গক কমিটিতে কাজ করিতে প্রস্তুত আছেন । কিন্তু তখন সকল নূতন সভ্যের নিয়োগ হইয়া গিয়াছিল। এইজন্য ডাঃ অনদারী বলেন, তাহারা ইহার পরের কমিটিতে সভ্য নিযুক্ত হইবেন । অতএব, মুসলমান ভারতীয়দের রাজনীতি অন্যান্য ভারতীয়দের রাজনীতি হইতে সম্পূর্ণ পৃথক, ইহ সত্য নহে । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দুমুসলমান ছাত্র ঢাকা-হলের বাৰ্ষিক পত্র “শতদলে’র ভূমিকায় প্রভোষ্ট শীঘুক্ত জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ লিখিয়াছেন – “এই বৎসরের তার একটি ঘটনাও বিশেষ উল্লেখযোগ্য । গত জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারী মাসের দাঙ্গায় সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দুমুসলমান ছাত্রের একযোগে তিনরাত্রি শহরে শাস্তিরক্ষায় সাহায্য করেছিলেন । বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দুমুসলমান ছাত্রদের মধ্যে কোনও মনোমালিন্য ছিল না। এতে অাশা হয় যে, সুশিক্ষার গুণে ও পরম্পরকে বন্ধুভাবে জানবার হযোগ পেলে আমাদের দেশের এই কলঙ্ক শীঘ্রই দূরীভূত হবে।” শ্ৰীযুক্ত খামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অজিতনাথ ভট্টাচার্য্যের পৈশাচিকভাবে প্রাণবধের বৃত্তান্ত সকলের গোচর করেন। এই অজিতনাথের মৃত্যুর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দুমুসলমান ছাত্রেরা সম্মিলিতভাবে সাত দিন অনধ্যায়ের সঙ্কল্প করে । ভারতবর্ষে সত্যাগ্রহের অবস্থা ভারত-গবন্মেটি প্রতি সপ্তাহে অহিংস আইনলঙ্ঘন প্রচেষ্টার অবস্থা সম্বন্ধে একটি মন্তব্য প্রকাশ করেন । এই মন্তব্যগুলি পরে পরে সাজাইয় পড়িলে দেখা যাইবে, সত্যাগ্রহ প্রচেষ্টা ভারত-সরকারের মতে ক্রমশঃ দুর্বল হইতেছে। এইরূপ মন্তব্য প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই অন্ত কতকগুলি সরকারী জ্ঞাপনী ছাপা হইতেছে যাহা হইতে জানা যায়, কোন-না-কোন অর্ডিন্যান্স নূতন নূতন জেলায় জারী ও প্রয়োগ করা হইতেছে। অর্ডিন্যান্সগুলি সত্যাগ্ৰহপ্রচেষ্টার প্রাণবধ করিবার জন্য প্রণীত হইয়াছে । সুতরাং নূতন নূতন স্থানে কোন-না-কোন অর্ডিন্যান্স প্রয়োগ করার মানে সেই সব জায়গায় সত্যা গ্রহ বাচিয়া আছে এবং তাহাকে পিষিয়া ফেলা দরকার । তাহ হইলে কতকগুলি প্রশ্ন উঠিতেছে —(১) যে-সব নুতন জায়গায় কোন অর্ডিন্যান্স জারী হইতেছে, সেখানে আগে সত্যা গ্রহ ছিল কি না? (২) যদি ছিল, তাহ হইলে আগেই সেখানে অর্ডিন্যান্স প্রযুক্ত হয় নাই কেন ? (৩) যদি আগেই ছিল না, এখন সত্যাগ্ৰহ নুতন করিয়া সেখানে দেখা দিতেছে, তাহা হইলে ইহা সত্য কি না, যে, সত্যাগ্ৰহ সব জায়গায় মরিতেছে না, কোথাও কোথাও রক্তবীজের মত গজাইতেছে ? (৪) যদি আগে সেই সব জায়গায় ছিল, তাহা হইলে আগেই তথায় অর্ডিন্যান্স জারী না করিয়া এখন জারী করিবার কারণ কি এই, যে, এখন সেখানে সত্যাগ্ৰহ প্রবলতর হইতেছে ? (৫) যদি এই অনুমান সত্য হয়, তাহা হইলে বলিতে হইবে কি, যে, অনেক জায়গায় সত্যাগ্ৰহ প্রবলতর হইতেছে ? (৬) যদি এই অনুমান সত্য না হয়, যদি ইহাই সত্য হয়, যে, ঐসব জায়গায় আগে হইতে সত্যা গ্রহ ছিল ও আগে প্রবল ছিল, এখন দুৰ্ব্বল ও ম্রিয়মাণ হইতেছে, তাহ হইলে ম্ৰিয়মাণের, অৰ্দ্ধমৃতের, উপর অর্ডিন্যান্সঅক্স প্রয়োগের প্রয়োজন কি ? যাহা নিজেই মরিতেছে, তাহাকে খোচাইয়া কতকটা জীবিতবং করিয়৷ তুলিবার আবশ্ব)ক কি ? অথবা ইহার মধ্যে গুঢ় রাজনৈতিক বিচক্ষণত থাকিতেও পারে । সত্যা গ্রহ যখন যেখানে প্রবল থাকে তখন তাহাকে তথায় আঘাত করিলে প্রতিক্রিয়াবশতঃ তথায় কৰ্ম্মীদের মধ্যে নূতন উৎসাহের সঞ্চার হইতে পারে এবং নৃতন কৰ্ম্মীও জুটিতে পারে। কিন্তু যখন উহ! কোথাও খুব দুৰ্ব্বল হইয়া পড়ে, তখন আঘাত করিলে জীবনীশক্তির হ্রাসবশতঃ কোন প্রতিক্রিয় হয় না, তখন উহার মরণ নিশ্চিত । এইরূপ ভাবিয়া কি গবন্মেণ্ট নূতন নূতন জায়গায় কোন-না-কোন অর্ডিন্যান্স প্রয়োগ করিতেছেন ?