পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“ সত্যম শিবম সুন্দরম ৷ ” “ নায়মাত্মা বলহীনেন লভ্যঃ ১০ম ভাগ ২য় খণ্ড মাতৃশ্ৰাদ্ধ আমি কোনো ইংরেজি বইয়ে পড়েছি, যে, ঈশ্বরকে যে পিতা বলা হয়ে থাকে সে একটা রূপক মাত্র। অর্থাৎ পৃথিবীতে পিতার সঙ্গে সন্তানের যে রক্ষণ পালনের সম্বন্ধ ঈশ্বরের সঙ্গে জীবের সেই সম্বন্ধ আছে বলেই এই সাদৃশু অবলম্বনে তাকে পিতা বলা হয় । কিন্তু একথা আমরা মানিনে । আমরা তাকে রূপকের ভাষায় পিতা বলিনে। আমরা বলি পিতামাতার মধ্যে তিনিই সত্য পিতা মাতা । তিনিই আমাদের অনন্ত পিতামাতা, সেই জন্যেই মানুষ তার পৃথিবীর পিতামাতাকে চিরকাল পেয়ে আসচে। মানুষ যে পিতৃহীন হয়ে মাতৃহীন হয়ে পৃথিবীতে আসে না তার একমাত্র কারণ, বিশ্বের অনন্ত পিতামাতা চিরদিন মামুষের পিতা মাতার মধ্যে আপনাকে প্রকাশ করে আসচেন। পিতার মধ্যে পিতারূপে যে সত্য সে তিনি, মাতার মধ্যে মাতারূপে যে সত্য সে তিনি । পিতামাতাকে যদি প্রাকৃতিক দিক্‌ থেকে দেখাই সত্য দেখা হত, অর্থাৎ আমাদের মর্ত্যজীবনেব প্রাকৃতিক কারণ মাত্র যদি তারা হতেন, তাহলে এই পিতামাতা সম্ভাষণকে আমরা ভুলেও অনন্তের সঙ্গে জড়িত করতুম না। কিন্তু iানুষ পিতামাতার মধ্যে প্রাকৃতিক কারণের চেয়ে ঢের বড় ইনিকে অনুভব করেছে—পিতামাতার মধ্যে এমন একটি দার্থের পরিচয় পেয়েছে যা অন্তরীন, যা চিরন্তন, যা বিশেষ কাত্তিক, ১৩১৭ ১ম সংখ্যা পিতামাতার সমস্ত ব্যক্তিগত সীমাকে ছাড়িয়ে গেছে ; পিতামাতার মধ্যে এমন একটা কিছু পেয়েছে, যাতে দাড়িয়ে উঠে চন্দ্ৰস্থৰ্য্য-গ্ৰহতারাকে যিনি অনাদি-অনন্তকাল নিয়মিত করচেন সেই পরম শক্তিকে সম্বোধন কবে বলে উঠেছে পিতানোহসি—তুমি আমাদের পিতা। একথা যে নিতান্তই হাস্ত্যকর প্রলাপবাক্য এবং স্পৰ্দ্ধার কথা হত যদি এ কেবলমাত্রই রূপক হত। কিন্তু মানুষ এক জায়গায় পিতামাতাকে বিশেষ ভাবে অনন্তের মধ্যে দেখেছে, এবং অনন্তকে বিশেষ ভাবে পিতামাতার মধ্যে দেখেছে, সেই জন্যেই এমন দৃঢ় কণ্ঠে এতবড় অভিমানের সঙ্গে বলতে পেরেছে “পিতা- ৷ নোহসি।” মানুষ পিতামাতার মধ্য থেকে যে অমৃতের ধারা লাভ করেছে সেইটেকে অনুসরণ করতে গিয়ে দেখেছে কোথাও তার সীমা নেই, দেখেছে যেখান থেকে স্বৰ্য্যনক্ষত্র তাদের নিঃশেষঙ্গীন আলোক পাচ্চে, জীবজন্তু যেখান থেকে অবসানহীন প্রাণের স্রোতে ভেসে চলে আজ পর্য্যন্ত কোনো শেষে গিয়ে পৌছল না, সেই জগতের অনাদি আদি প্রস্রবণ হতেই ঐ অমৃতধারা প্রবাহিত হয়ে আস্চে ; অনন্ত ঐখানে আমাদের কাছে যেমূনি ধরা পড়ে গেছেন অমনি আমরা সেই দিকেই মুখ তুলে বলে উঠেছি “পিতানোহসি”—বলেছি, যাকেই পিতা বলে ডাকিনা কেন, তুমিই আমাদের পিতা। . তুমি যে আমাদেরই, অনন্তকে এমন কথা বলতে শিখুলুম এইখান থেকেই। তোমার বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অসংখা