পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

У eb বেলঘরিয়ার উদ্যানেই মহাত্মা রামকৃষ্ণ পরমহংসের সঙ্গে কেশবচন্দ্রের প্রথম সাক্ষাৎ হয়। পরমহংস মহাশয় পরম উদারচিত্ত ভক্ত ও ভাবুক ; ভৃঙ্গ যেমন পুষ্পের স্বভ্রাণ পাষ্টয়া তাঙ্গর সন্ধান করিতে করিতে কুমুমোদ্ধানে গিয়া উপনীত হয়, তেমনি তিনি কেশবচন্দ্রের অন্তরস্থিত ভক্তিকুসুমের সুগন্ধ পাইয়া, তাহাকে খুজিতে খুজিতে এই বাগানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। বাগানে আসিয়া প্রথমেই কেশবচন্দ্রকে কহিলেন— “ওগো বাৰু, তোমরা নাকি ঈশ্বর দর্শন কর । সে দর্শন কি রকম, আমি জানিতে চাই।” কথায় বলে যে জহুরী, তাহার হীরা চিনিতে অধিক সময় লাগে না। পরমহংস মহাশয় নিজে প্রকৃত ভক্ত ; তাই অল্পায়াসেই কেশবচন্দ্রকে চিনিতে পারিলেন । এই যে শুভক্ষণে কেশবচন্দ্রের সঙ্গে তাহার আলাপ হইল, এই আলাপেই ক্রমে ক্রমে দুই ভক্তের মধ্যে সুমধুর প্রতির যোগ স্থাপিত হইল । - কেশবচন্দ্র ভক্তি-সাধনে অনেক দূর অগ্রসর হইয়া যোগ-সাধনে প্রবৃত্ত হইলেন । তিনি পৃথিবীতে সমন্বয়ের ধৰ্ম্মপ্রচার করিতে আসিয়াছিলেন ; এজন্ত আপনাকে ধৰ্ম্মের বিশেষ কোন গণ্ডীর মধ্যেই আবদ্ধ রাখেন নাই । তাছার আধ্যাত্মিক প্রতিভাও অসাধারণ । তিনি সেক্ট প্রতিভার জ্যোতিতে সাধনরাজ্যের সত্যসকল দর্শন করিতেন। তাই বৈষ্ণবদিগের মত শুধুই ভক্তি লষ্টয়া সস্তুষ্ট হইতে পারেন নাই । বায়ুম্পর্শে তটিনীর বারিরাশি যেমন চঞ্চল হইয়া উঠে, তেমনি ভক্তির সংস্পশে হৃদয় ভাবে উন্মত্ত হইয় উঠে। সুতরাং যোগ অবলম্বন পূৰ্ব্বক শাস্ত সমাহিত হওয়া প্রয়োজন। নচেৎ শাস্তম্ ঈশ্বরের সঙ্গে নিত্যযোগে যুক্ত হইয়া থাকা অসম্ভব ; ভাবের চঞ্চলতাই সাধককে ঈশ্বর হইতে দুরে এবং সত্যের আলোক হইতে অজ্ঞানতার মধ্যে লইয়া যায়। তজ্জন্ত কেশবচন্দ্র ভক্তির অমৃতত্বদের মধ্যে যোগের తాగా আরোহণ করিলেন এবং তাছার চিরবাঞ্ছিত অনস্ত পুরুষের দিকে অগ্রসর হইতে লাগিলেন । কেশবচন্দ্ৰ তাকার যোগ-সাধনঃসম্বন্ধে বলিয়াছেন— "ভক্তি যখন ৰাড়িতে লাগিল, তখন বুৰিলাম ভক্তিকে স্বামী که گی প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩১৭ [ ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড করিৰার জগু যোগ আবিষ্ঠক । ক্ষণস্থায়ী প্রমত্তত জগ্নিতে পারে বটে কিন্তু যোগ ৰ্যতীত তাহ চিরকাল থাকে না । ঈশ্বরে যদি বিশ্বাস থাকে, তৰে ঈশ্বরের সঙ্গে এক হওয়া আৰষ্ঠক * অনেকে কঠোর বোগের মধ্যে পড়িয়া অদ্বৈতৰাদ-সাগরে পড়িয়া গিয়াছেন । ভক্তির উচ্ছাসে পড়িয়া অনেকে কুসংস্কারে পতিত হইয়াছেন। আমি দুই দিক বাধিলাম। আমার ভক্তি যোগকে অবলম্বন করিয়া থাকিত ।” কেশবচন্দ্র ভক্তি ও যোগের সাধনায় কিরূপ সিদ্ধিলাভ করিলেন, সে বিষয়ে একটি কথা বলা আবশুক। স্বৰ্গীয় বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী ও সাধু অঘোরনাথ গুপ্ত ইহঁার দুষ্ট । বন্ধু । দুজনের নিবাসষ্ট শান্তিপুর । দুজনেই সংস্কৃত কলেজে অধ্যয়ন করিতেন । দুজনেই বিষয়সুখ পারে ঠেলিয়া ব্রাহ্মসমাজের প্রচার-ব্রত গ্রহণ করিয়াছিলেন। ইঙ্গর দুই বন্ধুষ্ট দুষ্ট সাধক ; শুধু সাধক বলি কেন ? ইঙ্গর ধৰ্ম্মরাজো দুষ্ট অসাধারণ ব্যক্তি ৷ ইছাদের জীবনের প্রভাবে ব্রাহ্মসমাজের কত পুরুষ ও নারী যে উন্নত ধৰ্ম্মলাভ করিয়াছেন, তাঙ্গ কে বলিলে ? কিন্তু এই দুই ধাৰ্ম্মিক পুরুষ কেশবচন্দ্রের শিষ্য হইয়া তাঙ্গার নিকট সাধন-তত্বের কেশবচন্দ্র ভক্ত বিজয়কৃষ্ণকে ভক্তিধৰ্ম্ম ও সাধু অঘোরনাথকে যোগধৰ্ম্ম শিক্ষা দিতেন । কেশবচন্দ্র স্বয়ং ভক্তি ও যোগ-সাধনায় সিদ্ধিলাভ না করিলে উপদেশ গ্রহণ করিতেন । এই দুই ক্তে জস্বী সাধক ব্যক্তি কৰ্থ নষ্ট তাঙ্কার নিকট মস্তক নত কবিয়া উপদেশ ওঙ্কণ করিতেন না ! বিজয়কৃষ্ণ ও অঘোরনাথের ভক্তি ও যোগ শিক্ষার সময়, কেশবচন্দ্র তাহাদের প্রতিদিনের কার্য্য সম্বন্ধে কতকগুলি নিয়ম করিয়া দিয়াছিলেন । র্তাহারা নিষ্ঠার সহিত সেই নিয়মগুলি প্রতিপালন করিতেন । নিয়মগুলি এই – প্রাতঃস্মরণ ২। প্রাতঃস্নান ৩ । নামশ্রবণ ৪ । নামগান ৫ । উপাসন ৬। বিবিধ গ্রন্থ হইতে উদ্ধত শ্লোকাদি পাঠ ৭। স্বহস্তে রন্ধন ৮। দরিদ্রকে অন্নদান ৯ । ভক্তসেবা ১০ । পশুপক্ষী-সেবা ১১। বৃক্ষলতা সেবা ১২। আকার ১৩ । প্রাতঃকালে পঠিত শ্লোকাদি পুনরাবৃত্তি । ১৪ । নিৰ্জ্জনে স্তব ও কীর্তন ১৬। সজনে প্রার্থনা ও কীর্তন ১৭ । ভক্তদিগের নিকট আশীৰ্ব্বাদ প্রার্থনা ১৮ । নির্জনে ধ্যান ও তপস্ত এবং দ্বিপ্রহর রাত্রিতে যোগাভ্যাস ।” কেশবচন্দ্র ভক্তি ও যোগের সাধনা করিতে করিতেই ভক্তশ্রেষ্ঠ শ্রীচৈতন্ত ও মহাযোগী স্ত্রীষ্টের সঙ্গে মহাভাবে

  • S

সংগ্ৰসঙ্গ ১৫ ।