পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩১৭ সমস্ত ইন্দ্রিয় যেখানে শুষ্ঠতার সাক্ষ্য দিচ্চে সেখানে যখন বলি মা আছেন তখন তাকেই যথার্থ বলে শ্রদ্ধা । নিজে যতক্ষণ পাহার দিচ্চি ততক্ষণ যাকে বিশ্বাস করি তাকে কি শ্রদ্ধা করি ? গোচরে এবং অগোচরেও যার উপর আমার বিশ্বাস অটল তারই উপর আমার শ্রদ্ধা । মৃত্যুর অন্ধকারময় অন্তরালেও যাকে আমার সমস্ত চিত্ত সত্য বলে উপলব্ধি করচে, তাকেই ত যথার্থ আমি সত্য বলে শ্রদ্ধা করি । সেইশ্রদ্ধাই প্রকাশ করার দিন শ্রীদ্ধের দিন । জীবিতকালে যখন বলেছি, মা তুমি আছ--তার চেয়ে ঢের পরিপূর্ণ করে বলা, আজকের বলা—যে, মা তুমি আছ। তার মধ্যে আর একটি গভীরতর শ্রদ্ধার কথা আছে— “পিতানোহসি।” তে আমার অনন্ত পিতামাতা তুমি আছ, তাই আমার মাকে কোনো দিন হারাবার জো নেই। যে দিন বিশ্বব্যাপী অমৃতের প্রতি এই শ্রদ্ধা সমুজ্জ্বল হয়ে ওঠবার দিন—সেই দিনকণরই আনন্দমন্ত্র হচ্চে :– মধুবাত ঋতীয়তে মধুক্ষরস্তি সিন্ধবঃ মাধবীন? সত্ত্বোষধীঃ । মধু নক্তম্ উতোষসঃ মধুমৎ পার্থিবং রজঃ মধু ষ্ঠেীরস্তু ন পিতা। মধু মাগ্লোবনস্পতিঃ মধুমান অস্তু স্বর্যাঃ মাধবীর্গাবো ভবস্তু ন: | এই আনন্দমন্ত্রের দ্বারা পৃথিবীর ধূলি থেকে আকাশের স্বৰ্য্য পৰ্য্যন্ত সমস্তকে অমৃতে অভিষিক্ত করে মধুময় করে দেখবার দিন এই শ্রাদ্ধের দিন। সত্যং—তিনি সত্য, অতএব সমস্ত র্তার মধ্যে সত্য এই শ্রদ্ধা যে দিন পূর্ণভাবে বিকশিত হয়ে ওঠে সেই দিনই আমরা বলতে পারি আননাং—তিনি আনন্দ এবং তার মধ্যেই সমস্ত আনন্দে পরিপূর্ণ। মাতার ঐরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড লঙ্কায় বৌদ্ধ বিচার (মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিত শ্ৰীযুক্ত সতীশচন্দ্র বিদ্যাভূষণ, এম-এ, পি-এইচ, ডি, কর্তৃক বিবৃত বিবরণ হইতে ) গত বৎসর শ্রাবণের প্রথমে আমরা কলিকা তা হক্টতে লঙ্ক যাত্রা করি। রেলপথে তুতিকোরিন গিয়া তারপর জাহাজে যাইতে হয় । তুতিকোরিনে যাত্রীদের থাকিলাব জন্ত একটি বৃহৎ ধৰ্ম্মশালা আছে। এই ধৰ্ম্মশালায় যাঙ্কার ইচ্ছা সেই থাকিতে পায় । ধৰ্ম্মশালার দ্বার কোন সময়েই রুদ্ধ করিবার নিয়ম নাই । আমাদের সঙ্গে অনেক জিনিস পত্র, আহারের জন্ত চাউল, দাইল প্রভৃতিও ছিল । বাক্সগুলি ষ্টেশনমাষ্টারের জিন্মায় রাখিয়া অত্যাবগুক ও মূল্যবান জিনিসগুলি লইয়! আমরা ধৰ্ম্মশালায় আশ্রয় লইলাম। আমাদের ধৰ্ম্মশালাটি একটি প্রকাগু অট্টালিকা, এক কালে শত শত লোক আক্তার বিশ্রাম করিতে পাবে । বাড়ীটির এক অংশ আর্য্যাবর্ত ও অপর অংশ দাক্ষিণাত্যের অধিবাসীদের জন্ত নির্দিষ্ট। আর্য্যাবর্তের অংশে বহু সাধু সন্ন্যাসীর সমাগম দেখিয়া আমাদের অসুবিধার আশঙ্কায় আমরা সপরিবারে দাক্ষিণাত্য-বিভাগেরই একটি প্রকাণ্ড ঘর অধিকার করিয়া রহিলাম। আগন্তুকগণ কে, কোথা হইতে আসিতেছে, কয় দিন থাকিবে এ-সকল জিজ্ঞাসা করা নিষিদ্ধ, তবে আহাৰ্য্য প্রভৃতি সংগ্রহের জন্ত কয়জন” এইমাত্র জিজ্ঞাসা করিবার জন্য একজন লোক আসিল । আমাদের আহারীয় সঙ্গেই ছিল, কেবল জ্বালানি কাষ্ঠ লইতে হইল । সন্ধ্যার পর একটু অস্থবিধা হইল। রাজ্যের যত দোকানী, পসারী, পথিক, সকলে আসিয়া সেই ধৰ্ম্মশালায় আশ্রয় লইল। পূর্বেই বলিয়াছি দ্বার রুদ্ধ করিবার নিয়ম নাই, সুতরাং বিশেষ সতর্কভাবে কতকটা বিনিদ্র অবস্থাতেই রাত্রি যাপন করিতে হইল । পরদিন একখানি ষ্টীমলঞ্চে চড়িয়া আমরা সিংহলাভিমুখে রওয়ান হইলাম। সেই বিশাল বারিধিবক্ষে কদলী পত্রের মত লঞ্চখানি কম্পিতকলেবরে কেলিতে দুলিতে অগ্রসর হইতে লাগিল। মল্লার উপসাগর একেষ্ট বিশেষ চঞ্চল, তাহাতে আৰার মৌসুমীর সময় ; প্রতিমুহূর্তেই ভয় হইতে