পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ৷ উপর হুকুম চালাইতেন, আমি চাকরের মত র্তাহার হকুমে খাটিয়াছি, টাকার অনাটন হইলে নিজের উপার্জনের টাকা দিয়া সংসার চালাইয়াছি।-বাড়ীতে একটা গোমস্ত মুহুরী রাখিলে তাহাকে শালিয়ানা কত টাকা দিতে হয় ?” হারাণ বলিল, “বাবা মরিয়াছেন তাই আজ আপনি নিজমূৰ্ত্তি ধরিয়াছেন । আমার পিতার স্বোপার্জিত সম্পত্তিতে আপনার কোন অধিকার নাই, আমি সমস্ত দখল করিব, আপনার ইচ্ছা হয় আপনি ( Partition Suit ) ‘পার্টিশন স্কুট করিতে পারেন।” মুকুন্দ বলিলেন, “আমি তোমাকে কোলে পিঠে লষ্টয়া মানুষ করিয়াছিলাম, তুমি তাহার উপযুক্ত পুরস্কার দিতে বসিয়াছ, কলির ধৰ্ম্ম কি না ?” হারাণ বলিল, “আপনি আমাকে একটু স্নেহ করিতেন এই হেতুবাদে আমার পৈত্রিক সম্পত্তি অধিকার করিতে চান, চমৎকার যুক্তি বটে ! এমন স্নেহ প্রকাশের কোনও আবগুক ছিল না। আপনি বিশ বাইশ বৎসর ধরিয়া যাক উপার্জন করিয়াছেন—সে সমস্ত টাকাষ্ট জমাষ্টয়াছেন ; কাকী মা শুনিয়াছি আট দশ হাজার টাকা লষ্টয়া মহাজনী করিতেছেন, আমি কি সে টাকাৰ ভাগ চাহিতেছি, না, ভাগ চাহিলেই তা দিবেন ? কুড়ি টাকার চাকরী করিয়া আজকাল সংসার প্রতিপালন করা যায় না, কাকী মা কি বাপের বাড়ী হইতে টাকা আনিয়াছিলেন ?” “তোমার মত অকৃতজ্ঞের আর মুখ দর্শন করিব না”— বলিয়া মুকুন্দচন্দ্র সক্রোধে তামাক টানিতে লাগিলেন। (8) মহা সমারোছে একটা প্রকাও বাটোয়ারার মামলার আয়োজন চলিতে লাগিল। গ্রামে হরিশ্চন্দ্রের হিতাকাজী বন্ধুর অভাব ছিল না। তাছারা মজুমদারদের গৃহ-বিবাদ মিটাটবার জন্ত চেষ্টা করিতে লাগিলেন। তাহারা মুকুন্দকে বুঝাইয়া বলিলেন, “তোমাদের যাহা কিছু আছে, তাঙ্গ সমস্তই তোমার দাদার উপার্জিত এ কথা আমরা সকলেই জানি, ধৰ্ম্মের দিক চাহিয়া কথা বলিতে হয়। কিন্তু তোমরা দুই ভাই চিরদিন একায়ে ছিলে, যাহা কিছু আছে তাহার দশ আনা অংশ হারাণকে ছাড়িয়া দাও।”— র্তাহার হারাণকে বলিলেন, “সম্পত্তি তোমার পিতার মেহের বন্ধন S)〉○ স্বোপার্জিত তাহা আমরা জানি, কিন্তু তোমার বাবা ও কাকা বরাবর একান্নে ছিলেন, মুকুন্দও দশ টাকা উপার্জন করিয়াছেন, তোমাদের সংসারের উন্নতির জন্ত ভূতের মত খাটিয়াছেন, র্তাঙ্কাকে একেবারে বঞ্চিত করিলে বড় অদ্যায় হইবে ; যদি তোমার কাক মামলা করেন তাঙ্কা হইলে আৰ্দ্ধেক সম্পত্তি তাঙ্কাকে ছাড়িয়া দিতে হইবে। অনর্থক কতকগুলা টাকা মামলায় নষ্ট করিবে কেন ? আমরা তোমার কাকাকে বলিয়াছি তিনি স্থাবরান্থাবর সম্পত্তির দশ আন অংশ তোমাকে দিবেন, তিনি ছয় ভাগ পাইবেন । বাটোয়ারী-মামলা হাতীর থৌবাক, মামলা করিলে শেষে তোমাদের দুজনকেই পথে দাড়াইতে হইবে।” গ্রামের বুদ্ধ রায় মহাশয়কে হরিশ্চন্দ্র মুরুবী মনে করিতেন, কখন তাঙ্গর কথার অন্যথাচরণ করিতেন না, কারণে তাঙ্গ জানিত ; সে তাঙ্গার সৎপরামর্শ অগ্রাহ করিতে পারিল না । মধ্যস্তগণের আপোষে সমস্ত সম্পত্তির ভাগ বাটোয়ারা চইয়া ,গল । কিন্তু ঘরের পাশে তিন কাঠা জমি লষ্টয়া উভয়ের মধ্যে বিশেষ বিরোধ রহিয়া গেল । এই তিন কাঠা জমি কাকার ভাগে পড়িয়াছিল, কিন্তু তাছা না পাইলে হারাণের অত্যন্ত অস্ববিধা হয়, সেটজষ্ঠ তাঙ্গ ছাড়িয়া দিবার জন্য তারাণ কাকাকে অত্যন্ত পীড়াপীড়ি করিয়া ধরিল ; এই প্রসঙ্গে তাঙ্কাদের যে কথাবার্তা হইয়াছিল, পাঠক গল্পারম্ভে তাহ জানিতে পারিয়াছেন। হারাণ পাছে জোর করিয়া জমিটুকু দখল করে এই ভয়ে মুকুন্দ সেই দিন রাত্রেই মজুর দিয়া জমিটুকু ঘিরিয়া লইলেন, এবং তাচাতে কতকগুলি সরিষা ছড়াইয়া প্রবেশস্বারে তালা চাবি লাগাইলেন । হারাণ বলিল, “উনি ভিটায় শরষে বুনিলেন, আমি ঘুঘু না চরাষ্টয়া ছাড়িব না।”—সেই দিন কষ্টতে খুড়া ভাইপোতে মুখ দর্শন বন্ধ হইল ; বলা বাহুল্য হাড়ি পূৰ্ব্বেষ্ট পৃথক হইয়াছিল।. এবার কথা পৰ্যন্ত বন্ধ হইল। ( t ) কিন্তু এক বাড়ীতে বাস করিয়া এ ভাবে কালযাপন করা বড় কষ্টকর ; তথাপি উভয়ের দিন কাটিতে লাগিল, কিন্তু সংসারে অশাস্তির সীমা রহিল না, এই তিন কাঠ w