পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৩৮ উন্নত, সে উৎস মুখে হ’তেছে বধিত ফন্তু চু্যতাঙ্কুর চুর্ণ, করিয়া ব্যথিত ধরণীর পাণ্ডু গও । আচ্ছন্ন আবিরে অশোক কিংশুক তরু । মদমত্ত ফিরে চঞ্চল দক্ষিণ বায়ু “ঙ্গেরী হায়” রবে, উড়ায়ে বাসস্তী বাস । শ্রাস্তু অলি সবে গুঞ্জরে সখেদে কারে খুজি বৃথা বনে। ঙ্গেরে শুধু ফন্তু চিহ্ন ; দিগঙ্গনা গণে “চোখ গেল” “চোখ গেল” করি “উহু” “উছ” কুস্কুম আঘাতে কার কাদে মুহু মুহু । চায়া-ওন্না আমি যখন জাপানে যা-তোক-একটা-কিছু শিখিবার জন্ত যাত্রা করিয়াছিলাম তখন আমার হিতৈষী অভিভাবকগণ অনেক কিছু আশা করিয়াছিলেন ; আমিও নিজে নিজের সাফল্যের প্রতি যে বিশেষ আস্থাবান ছিলাম তাঙ্গা বলাই বাহুল্য । একদিন প্রত্যুষে ইডেন গার্ডেনের ঘাট হইতে যখন জাহাজে চড়িলাম তখন সেই প্রভাতেরই কনক রৌদ্রের মত আমার ভবিষ্যৎ বড় সুন্দর বড় উজ্জল দেখাইতেছিল। আগাগোড়া শুধু সফলত, শুধু জয় । তাই যখন বন্ধুজনের বিরহবেদন পাথেয় লইয়া জাহাজ কোন সেই অচেনা অজানা মুদুরের উদ্দেশে যাত্র মুরু করিল, তখনে আমার মুথ নিম্প্রভ হইয়া গেল না । কত অপূৰ্ব্ব দেশ, বিচিত্র মানব, চমৎকার দৃশু দেখিতে দেখিতে, সাগরবক্ষে নাচিতে নাচিতে আমার আশার নন্দন জাপানের দিকে অগ্রসর হইতে লাগিলাম । একদিন যখন দূর হইতে জাপানী নাবিকের স্বদেশের অয়শ্চক্রনিভ তটরেখা দেখিয়া সমস্বরে “বানজাই” বলিয়া হর্ষধ্বনি করিয়া উঠিল, তখন আমার চিত্ত প্রথম-প্রণয়সম্ভাষণ-ভীরু নবোঢ়া বধুর মত চঞ্চল হষ্টয়া উঠিল। আমাদের জাহাজ জাপানের য়োকোহামা বন্দরে গিয়া লাগিল। আমি সেখানেই নামিলাম। এই সহরে দুদিন বিশ্রাম করিয়া তারপর ট্রেনে তোকিয়ে যাইব । প্রবাসী—চৈত্র, ১৩১৭ [ ১০ম ভাগ, ২য় খণ্ড একটি হোটেলে আশ্রয় ঠিক করিয়াই সহর দেখিতে বাহির হইয়া পড়িলাম । সমস্ত দেশটা যেন স্বপ্নের মত, মায়ার মত, কল্পনার মত ; বাড়ীগুলি যেন ছবি, মানুষগুলি যেন পুতুল, কারবার যেন কলের। রাস্তায় আবর্জন নাই, গোলমাল নাই, গাড়ীঘোড়ার হুড়াহুড়ি নাই। পথিকেরা শাস্ত, মানুষটানা রিকশা গাড়ীগুলিও নিঃশব্দ ; সমস্ত সহরটি যেন তন্দ্রবেশে আচ্ছন্ন, এমনি একটা মোহময় স্তব্ধতা সৰ্ব্বত্র বিরাজিত । যাহা দেখি তাহাই আমার চক্ষে নুতন ঠেকে। আমার কাজ ছিল না, চাথিয় চাথিয়া সমস্ত খুঁটিনাটি দেখিয়া লইতেছিলাম । দোকানগুলি ফিটফাট, শিল্পকচার লীলানিকেতন । এক একটা দোকানের কাছে অবাক হইয়া দাড়াইয়া থাকিতে ইচ্ছা করিতেছিল । যে দোকানগুলি দ্রব্যসম্ভারে পরিপূর্ণ সেগুলিও সুন্দর, আবার যেগুলি রিক্ত সেগুলিও চমৎকার,—তাহাদের শুষ্ঠত মনকে শাস্তি দেয়, কিন্তু চক্ষুকে পীড়া দেয় না । এমনি একখানি আসবাবহীন দোকানের সম্মুখে দাড়াইয় অবাক হইয় তাহার রিক্ত সৌন্দৰ্য্য দেখিতেছি, এমন সময় আমায় চমকিত করিয়া কাহার মধুসম্ভাষণ আমাকে অভিনন্দন করিল—দান্না মুকায়রু ! ( আসিতে আজ্ঞা হোক মহাশয় ! ) আমি চেতন! পাইয়া দেখিলাম আমি একটা চায়ের দোকানের সামনে দাড়াইয়া আছি । একটি তরুণী তাহার হাত দুখানি দুষ্ট উরুর উপর রাথিয় একটু নত হইয়। আমাকে দোকানে অভ্যর্থনা করিতেছে—দাল্লা মুকায়রু ! সে স্বরে কী ভব্যতা, কী বিনয় । অভ্যর্থনার সে কী সরস ভঙ্গী ! আমার কোনো পুরুষে চায়ের ধার ধারে না, তবু এমন তরুণীর এমন আহবান আমি প্রত্যাখ্যান করিতে পারিলাম না। চায়াতে (চায়ের দোকানে) প্রবেশ করিলাম । তরুণী চায়া-ওয়া ( চা-ওয়ালী ) অমনি আমার সম্মুখে আসিয়া দুষ্ট উরুতে হাত রাখিয়া ঈষৎ অবনত হইয় দাড়াইল ; তারপর সরলভাবে দাড়াইয়! একখানি চেয়ার