পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থাকিতেন। পদার্থ বিস্তু, শরীরতত্ত্ব, প্রাণীব্লিন্স, এবং জীবনতত্ত্ব তিনি প্রথম প্রবর্তন করিয়াছিলেন। ווiwiיf**isr তিনি প্রথম প্রথম ছাত্রদিগকে আইসক্রেটসের স্থায় অলঙ্কার ও ভাষা শিক্ষা দিতেন। কোন একটী বিষয় স্থির করিয়া তৎসম্বন্ধে স্বয়ং বক্ততা করিতেন এবং ছাত্রদিগকে বক্ততা করিতে শিক্ষা দিতেন। কিন্তু পরে সোফিষ্টদিগের স্থায় স্বয়ং সৰ্ব্ববিদ্যাভূষিত হইয়া ছাত্রগণকে সৰ্ব্বতোমুখী ও সৰ্ব্বাঙ্গীন শিক্ষা প্রদান করিতেন। তাহার ছাত্রগণকে ল্যাবরেটরীতে এক্সপেরিমেন্ট করিতে হইত। বিশেষ কোন এক লক্ষ্যসাধনের জন্য তিনি শিক্ষা দিতেন না। ছাত্রগণ সৰ্ব্ববিধ শিক্ষালাভ করিয়া নিজ নিজ ব্যক্তিগত স্বার্থসাধনে প্রবৃত্ত হইতে পারিত। বিদ্যালয়ের পরিচালন । এক এক জন ছাত্রকে দশদিনের জন্ত বিদ্যালয়ের কৰ্ত্তা করিয়া দিতেন। তাহাকে বিদ্যালয়ের সৰ্ব্ববিধ কার্যের জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করিতে হইত। তিনি স্বয়ং প্রধান প্রধান কাৰ্য্যগুলি সম্পাদন করিতেন । অধ্যাপনার সময় । - তিনি দিনে দুইবার শিক্ষা দিতেন। প্রাতঃকালে তিনি উপযুক্ত উন্নত ছাত্রদিগকে সমবেত করিয়া কঠিন বিষয়ে বক্তৃতা দিতেন। প্রাহ্নে যে বক্তৃতা করিতেন তাহাতে সাধারণের উপযোগী করিয়া বিষয় স্থির করিতেন, এবং আলোচনা-প্রণালী অবলম্বন করিতেন । শিক্ষাবিজ্ঞানে প্লেটোর সহিত ঐকা । প্লেটোর স্থায় তিনিও তাহার শিক্ষাবিজ্ঞানে সঙ্গীত ও ব্যায়ামের প্রয়োজনীয়তা দেখাইয়াছেন। তাহার মতে— দাসগণ সজীব যন্ত্র মাত্র এবং যন্ত্ৰসকল প্রাণহীন দাস। সুতরাং তাহার বিবেচনায় দাসগণের কেবল মাত্র সেবাতেই অধিকার। এজন্য তাহার শিক্ষার ব্যবস্থায় দাসগণের কোন স্থান রাখেন নাই । প্লেটোর দ্যায় তিনিও মৃত্যুকালে তাহার বিদ্যালয়ের সম্পত্তি, স্বরচিত পুস্তকাবলী এবং গুরুর পদ থিয়োফ্রেষ্টাসকে দান করিয়া যান। প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৭ । । [ ১০ম ভাগ । নবানীতি শিক্ষা। জেনে ও এপিকুরাস। কেবলমাত্র নীতি ও ধৰ্ম্মশাস্ত্র শিক্ষা দিবার জন্ত কয়েকটা বিদ্যালয় স্থাপিত হইয়াছিল। এই সকল বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠাতাগণ নিজ নিজ দর্শনবাদ প্রচার করিতেন। নূতন নূতন সম্প্রদায়ের সৃষ্টি করিতেন। তন্মধ্যে দুইটী বিদ্যালয় প্রাধান্তলাভ করিয়াছিল। একটার প্রতিষ্ঠাতা জেনে ; ইহার ছাত্র ও শিষ্যগণকে ষ্টোয়িক বলা হইত। অপরটার প্রতিষ্ঠাতা এপিকুরাস। তৎকালীন সমাজে ইষ্ঠার বিশেষ প্রতিপত্তিলাভ করিয়াছিলেন । এবং বিদ্যালয়সমূহের পরবর্তী অবস্থ। । চতুর্থ শতাব্দীর শেষ ভাগে এবং তৃতীয় শতাব্দীর প্রথম ভাগে যতগুলি বিদ্যালয় স্থাপিত হইয়াছিল, সকলগুলিই প্রতিষ্ঠাতৃগণের মৃত্যুর পরেও বৰ্ত্তমান ছিল। এবং অনেক দিন পর্য্যস্ত একষ্ট স্থানে অবস্থিত থাকিয়া বিদ্বৎসমাজে জ্ঞানালোক প্রদান করত। গুরুর আসন কখনই শূন্ত থাকিত না। তোকেই নিজ নিজ উত্তরাধিকারী নিযুক্ত করিয়া যাইতেন। এবং ইষ্ঠার প্রতিষ্ঠাতৃগণের মত প্রচার করিতেন এবং ভাষ্য প্রস্তুত করিতেন। সকল বিদ্যালয়ই স্বাধীন ছিল – সরকারের কোনরূপ সাহায্য প্রাপ্ত হইত না। আদি গুরুগণ শিষ্যের নিকট হইতে বেতন গ্রহণ করিতেন না। নিজ নিজ বন্ধুগণের সাহায্যে বিদ্যালয় চালাইতেন। কিন্তু তাহাদের মৃত্যুর পরে বেতন গ্রহণ করিবার প্রথা প্রচলিত হইয়াছিল। পুস্তকের সাহায্যে শিক্ষণ । এইরূপ লব্ধপ্রতিষ্ঠ বিদ্যালয়ে চারিবৎসর কাল উচ্চ শিক্ষা লাভ করিবার সামর্থ্য অনেকেরই ছিল না। দরিদ্র ছাত্রের চতুর্দশ বৎসর বয়ঃক্রম পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা করিয়া সরকারের সমর-বিদ্যালয়ে প্রবিষ্ট হইবার কাল পর্যন্ত গৃহে বসিয়া পুস্তক পাঠ করিত। এই যুগে অনেক পুস্তক প্রকাশিত হইয়াছিল। দাসদিগের দ্বারা পুস্তক লিখাইয়া লওয়া হইত বলিয়া পুস্তকের মূল্য অতি সামান্ত ছিল। প্রায় সকলেই পুস্তক ক্রয় করিতে পারিত। এবং নানা বিষয়ে পুস্তক প্রকাশিত হইয়াছিল বলিয়া পুস্তকের সাহায্যে যথেষ্ট উচ্চ শিক্ষা লাভ হইত। কারণ কাব্য, ২য় সংখ্যা । ] সাহিত্য, গণিত, জ্যোতিষ, বিজ্ঞান, চিকিৎসা, কৃষি, সমর, পাকপ্রণালী, অলঙ্কার, পর্যটন, ভূগোল ও দর্শন প্রভৃতি সকল বিষয়েই উপযুক্ত পুস্তক পাওয়া ঘাইত। এবং পুস্তক এত অতি অধিক মাত্রায় প্রচলিত হইয়াছিল যে পুস্তকসকল শিক্ষকদিগের প্রতিদ্বন্দ্বী হইয়া পড়িয়াছিল। এইজন্য ইষ্ঠারা কিছু ছঃখিত ছিলেন। এবং আইসক্রেটসও এমন কি প্লেটোর পুস্তকের সাহায্যে যে শিক্ষালাভ হয়, তাহা দ্বারা কোন ফলই হয় না এই মত প্রচার করিতেন এবং বলিতেন যে সকলেরই গুরুর মুখে উপদেশ গ্রহণ করা কর্তৃবা। নিম্ন শিক্ষা -চিত্রবিদ্যার প্রবর্তন। পূৰ্ব্ব পুৰ্ব্ব কালের স্থায় এই যুগেও প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে ছাত্রদিগকে সাহিত্য সঙ্গীত এবং বায়াম শিক্ষা করিতে হইত। গণিত এবং ন্যায় সোফিষ্টদিগের যুগে প্রবর্তিত হইয়াছিল এবং এই সময়েও বর্তমান ছিল। স্তদ্ব্যতীত নূতন দুইটী বিদ্যার প্রচলন হইয়াছিল। চতুর্থ শতাব্দীর মধ্যভাগ হইতে কলাবিদ্যা বিদ্যালয়ের শিক্ষনীয় বিষয় হইয়াছিল। এবং সাহিত্যশিক্ষক, সঙ্গীতশিক্ষক ও বায়ামশিক্ষকের ন্যায় এই যুগে চিত্রশিক্ষক স্থানে স্থানে প্রতিষ্ঠালাভ করিয়াছিলেন। চিত্রবিদ্যালয়ে যাইয়া ছাত্রদিগকে কাষ্ঠের উপরে অঙ্গার দ্বাৰা অঙ্কন শিক্ষা করিতে হইত। কাগজ অথবা কাপড়ের উপর অঙ্কন শিক্ষা দেওয়া হইত না। রঙ্গের ব্যবহার প্রচলিত ছিল। সমরশিক্ষার ক্রমিক লোপ। যতদিন পর্য্যন্ত স্বাধীনতা ছিল ততদিন পর্য্যন্ত উপযুক্ত বয়ঃপ্রাপ্তি হইলেই প্রত্যেক স্বাধীন এথিনীয়কে স্বদেশ রক্ষা করিবার শিক্ষা করিতে হইত। অষ্টাদশ বর্ষ বয়সে তাহারা সাবালক হইত, এবং বিংশতি বর্ষ পর্য্যন্ত দুই বৎসর কাল যুদ্ধকাৰ্য্য, দুৰ্গরক্ষা, কষ্টস্বীকার, আইন শিক্ষা, অশ্বধাবন প্রভৃতি রণজীবনের অনুকূল শিক্ষা গ্ৰহণ না করিলে কেহই নাগরিকের অধিকার প্রাপ্ত হইত না । সরকার হইতে এই দুই বৎসরের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হইত। ইহাতে সাহিত্য ও সঙ্গীত পরিষ্কার করিয়া কেবলমাত্র বায়ামেরই চচ্চা করা হইত। কিন্তু যথন দেশ মাসিদনীয়দিগের হস্তগত হইয়াছিল তখন আর এরূপ বাবস্থার প্রয়োজন ছিল না। এবং কাহাকেই আইন দ্বারা বাধা প্রাচীন গ্রসের জাতীয় শিক্ষা। XAd) হইয়া এরূপ সামরিক শিক্ষা গ্রহণ করিতে হইত না । । সুতরাং এইযুগে সমর-বিদ্যালয় ক্রমশঃ লুপ্ত হইতে লাগিল । এবং ইহার সাহিত্য ও দর্শন প্রভৃতি চর্চার জন্ত প্রতিষ্ঠানের আকার ধারণ করিতে লাগিল। ধনী ও সন্ত্রান্ত বংশের । এথিনীয়ের এবং বিদেশীয় ছাত্রেরা এইরূপ বিশ্ববিদ্যালয়ে । শিক্ষা লাভের জন্ত স্বেচ্ছায় প্রবেশ করিতে লাগিল। ইউরোপে এথেন্সের দান : স্বরাজতন্ত্র ও ৰিজান। ডিমস্থিনিস, আলেকজান্দার ও এ্যারিষ্টটলের যুগে শিক্ষা সাধারণ রাষ্টীয় জীবন হইতে বিচুত হইয়াছিল। পেরিক্লাস । ও পর্য্যটক সোফিষ্টদিগের যুগের স্থায় এই যুগে সমাজের সাধারণ চিন্তা ও কৰ্ম্মশক্তি সমষ্টি হইতে কোন ব্যক্তির বিশিষ্টভাবে শিক্ষা লাভ হইত না । এক্ষণে জ্ঞানামুশীলন নিভৃত গৃহবাসী সুধীমণ্ডলীর মধ্যে আবদ্ধ ছিল; এবং চিন্তাসমূহ ইতস্তত: বিক্ষিপ্ত না থাকিস্থা ক্রমশঃ স্বসম্বদ্ধতা, ঐক্য ও সামঞ্জস্ত লাভ করিয়া দর্শনসমূহকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করিয়াছিল। এবং এই যুগের রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অবনত এথেন্সের গবেষণাই ইউরোপীয় দার্শনিক মতবাদসমূহের মূল প্রস্রবণ। ইউরোপীয় সভ্যতা যুগ-পরম্পরার ভিতর দিয়া যে কয়েকট ফল বিকাশ করিয়াছে তন্মধ্যে কৰ্ম্মজগতে স্বায়ত্তশাসন এবং চিন্তাজগতে যুক্তিমূলক বিজ্ঞান এই দুইট প্রধান। এই দুইটাই এথেন্সের দান। স্বাধীন অবস্থায় পেরিরীসের এথেন্স প্রজাতন্ত্র-শাসনের পরাকাষ্ঠা দেখাইয়াছিল, সেই সময়েই অন্ধবিশ্বাস বর্জন, জড়জগতের তত্ত্বনিৰ্দ্ধারণ, সংশয়বাদ এবং যুক্তির কার্যাও আরম্ভ হইয়াছিল বটে ; কিন্তু তাহার মৃত্যুর পর চতুর্থ শতাব্দীতেই প্রকৃত বিজ্ঞানশান্সের এইসকল উপাদানের চরমোৎকর্ষ সাধিত হইয়াছিল। এথেন্স বিশ্ববিদ্যালয়। স্বাধীনভাবে নিজ নিজ মতানুসারে পণ্ডিতেরা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। প্রত্যেক ব্যক্তিই নিজ প্রকৃতি ও প্রবৃত্তির উপযোগী শিক্ষালাভের স্বযোগ পাইয়াছিল। নানারকম চিন্তার উদ্রেক হইয়াছিল। বিছাকাঙ্গী, বিদ্যাদাতা, যে যেখানে থাকুন—সকলেই এথেন্সের অধিবাসী হইতে লাগিলেন। শিক্ষা সুচারুরূপে নিৰ্ব্বাহিত হইতে পারে এজন্য পণ্ডিতগণকে তাহীদের ধনবান বন্ধুগণ জমি,