পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৯৪ | হয় ত এই সময়ে সেগুলিরও একটা কিম্বারা পাওয়া প্রভৃতি বড় যাইবে। ২ । বুধ গ্রহ । আমাদের পরিজ্ঞাত গ্রহগুলির মধ্যে বুধই স্বর্ঘ্যের নিকটতম। ইহার স্বৰ্য্য-প্রদক্ষিণ-কাল প্রায় ৮৮ দিন বলিয়া স্থির আছে। প্রদক্ষিণ-কাল যেমন অল্প, উহার আকার এবং গুরুত্বও অতি সামান্ত । কিন্তু যে উপাদানে উহার নিৰ্ম্মাণ তাহার ঘনতা অত্যন্ত অধিক। এইজন্য আকারের অনুপাতে ইহার গুরুত্ব খুব অধিক হইয়। দাড়াইয়াছে। যাহা হউক এত নিকটে থাকা সত্ত্বেও আমরা আজও বুধ-সংক্রান্ত সকল সংবাদ সংগ্ৰহ করিতে পারি নাই। স্বৰ্য্যের কাছাকাছি থাকিয়া ভ্রমণ করাই ইহার একমাত্র কারণ। প্রখর স্বর্য্যালোকই পর্য্যবেক্ষণের সকল প্রয়াসকে ব্যর্থ করিয়া দেয়। সূৰ্য্য হইতে ২৭ অংশের অধিক দূরে বুধের কথনই উদয় হয় না। কাজেই দিগন্তে মেঘ বা কুয়াশা না থাকিলে কদাচিৎ উষা বা সন্ধ্যাকালে উহাকে আকাশের প্রাস্তে দেখা গিয়া থাকে। পৃথিবী যেমন প্রায় ২৩ অংশ কোণ উৎপন্ন করিয়া নিজের কক্ষাতলের উপর হেলিয়া আছে, বুধ সেই প্রকার কুড়ি অংশ কোণ করিয়া খাড়া আছে বলিয় স্থির হইয়াছে। গ্রহ উপগ্রহ মাত্রেরই প্রদক্ষিণ-গতি ছাড়া আর একটা গতি আছে। এই গতিতে ইহার লাটুর ষ্ঠায় নিজের অঙ্গের চারিদিকে অবিরাম ঘুরপাক দেয়। পৃথিবীর এই গতি আছে বলিয়াই দিবা রাত্রি হয়, এবং চন্দ্র স্বৰ্য গ্ৰহ নক্ষত্রের দৈনিক উদয়াস্ত দেখা যায়। মঙ্গল ও পৃথিবী প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা কালে এই আবৰ্ত্তন শেষ করে। বৃহস্পতি এক পূর্ণাবর্তনে প্রায় সাড়ে নয় ঘণ্টা এবং শনি দশ ঘণ্টা পনেরো মিনিট সময় অতিবাহন কবে । বুধ আমাদের এত নিকটে থাকিয়াও নিজের আবৰ্ত্তন-কালের পরিচয় প্রদান করে নাই । লাটুর গায়ে যদি কোন চিহ্ন অঙ্কিত রাখা যায়, তবে সেই চিহ্ন একবার ঘুরিয়া আসিতে কত সময় অতিবাহন করিল কেবল তাহাই স্থির করিয়া লাটুর আবর্তনকাল নিরূপণ করা যাইতে পারে। মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি - - ਾਂ - 鸚 প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৭ । [ ১০ম ভাগ *SumitaBot (আলাপ) ১৮:২৪, ২৫ মার্চ ২০১৬ (ইউটিসি). --ു বড় গ্রহের উপরে নানাপ্রকার চিহ্ন আবিষ্কৃত হইয়াছে। জ্যোতির্ষিগণ এই-সকল গ্রহের আবর্তনকাল চিহ্নের আবর্তন দেখিয়াই স্থির করিয়াছেন। বহুদিন হইল বিখ্যাত জ্যোতিষী সিয়াপেরেলি সাহেব অতি কষ্ট্রে বুধ পর্যবেক্ষণ করিয়া, উহার আবৰ্ত্তনকালের একটা মোটামুটি হিসাব দাড়করাইয়া ছিলেন। ইহাতে দেখা গিয়াছিল চন্দ্র যেমন পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করিবার সময় নিজেও একবার পাক খাইয়া লয়, বুদ্ধও সেইপ্রকার স্বৰ্য্য প্রদক্ষিণকালে কেবল একটিমাত্র আবর্তন শেষ করে। এই গণনা-ব্যাপারে এক সিয়াপেরেলি ছাড়া অপর কোনও জ্যোতিষী যোগদান করেন নাই। একজন জ্যোতিষীর গণনার ফলে সম্পূর্ণ বিশ্বাসস্থাপন যুক্তিসঙ্গত নয় বলিয়া, এপর্য্যস্ত কেহই এই আবিষ্কারটি সৰ্ব্বাস্ত:করণে স্বীকার করিয়া লইতে পারেন নাই। ফরনিয়ার ( Fournier ) নামক জনৈক ফরাসী জ্যোতিষী প্রায় হাজার গজ উচ্চস্থান হইতে পর্যবেক্ষণ করিয়া সময়ে সময়ে বুধগ্রহের যে কতকগুলি ছবি তুলিয়া রাখিয়াছিলেন, সম্প্রতি সেগুলিকে পরীক্ষা করিয়া এক আশ্চৰ্য্য ফল পাওয়া গিয়াছে। ছবি প্রস্তুতের তারিখ মিলাইয়া দেখা গিয়াছে, প্রথম ছবিতে বুধমণ্ডলের যে-সকল চিহ্ন প্রকাশ পাইয়াছিল ৮৮ দিন পরে উঠানো ছবিতে অবিকল সেইসকল চিহ্নই প্রকাশ হইয়া পড়িয়াছে। সুতরাং এখন - নিঃসন্দেহে বলা যাইতে পারে, আমাদের ক্ষুদ্র বুধগ্রহ স্বৰ্য্য প্রদক্ষিণ করিতে যেমন ৮৮ দিন অতিবাহন করে, ইহার এক পূর্ণাবর্তনের জন্যও ঠিক সেই সময় লাগে। ইউরেনস ও নেপচুন এই দুইটি বৃহৎ গ্রহের আবর্তনকাল আজও স্থির করা যায় নাই । ইহাদের প্রত্যেকেরই কতকগুলি চন্দ্ৰ আছে। কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, ঐ চন্দ্রগুলি পৃথিবী বৃহস্পতি বা মঙ্গলের চন্দ্রের ন্যায় পশ্চিম হইতে পূৰ্ব্ব দিকে ধাবমান হইয়া গ্রহ প্রদক্ষিণ করে না। ইহাদের প্রত্যেকেরই গতি পূৰ্ব্ব হইতে পশ্চিমদিকগামী। ইহ দেখিয়া জ্যোতিষিগণ অনুমান করিতেছেন, ইহাদের আশ্রিত গ্রহগুলির আবর্তন-গতিও সম্ভবতঃ সাধারণ গ্রহের গতির বিপরীত। বলা বাহুল্য এখনো এই কথাটির উপর বিশ্বাস স্থাপন করা চলে না। ইউরেন ও নেপচুনের । | - o | o ২য় সংখ্যা । ] আবৰ্ত্তনের দিক ও কাল এখনো অজ্ঞাত আছে। আকারে আমাদের পৃথিবী অপেক্ষ বহুগুণ বড় হইলেও ইছারা বহু দূরে অবস্থিত, সুতরাং আমরা যে শীঘ্র এই গ্রহযুগলের খুঁটিনাটি সকল সংবাদই জানিয়া ফেলিব তাহার আশা नांझे । ৩ । কেরোলাইন হার্সেল । জগদ্বিখ্যাত মহাপণ্ডিত হার্সেল সাহেবের ভগ্নী কেরোলিনের বিশেষ পরিচয় প্রদান নিম্প্রয়োজন। এই বিদুষী রমণী হাসেলের গবেষণা-কার্য্যে প্রধান সহায় ছিলেন। স্বহস্তে নিপুণতার সহিত নানা জ্যোতির্ষিক যন্ত্ৰ নিৰ্ম্মাণ করিয়া ইনি সৰ্ব্বদাই ভ্রাতার গবেষণাকার্য্যে সাহায্য করিতেন। জটিল হিসাবপত্রেও তিনি খুব অভ্যস্ত ছিলেন। আজকাল বৈজ্ঞানিক সাময়িক-পত্রগুলিতে ধূমকেতু সম্বন্ধে নানা আলোচনা পড়িলে, সেই রমণীর কথা মনে পড়িয়া যায়। এপর্য্যন্ত যতগুলি ধূমকেতুর আবিষ্কার হইয়াছে, তাছাদের মধ্যে আটটির নামকরণ কেরোলিন হাসেলের নামেই করিতে হইয়াছে। এই কয়েকটির আবিস্কত্রী একক डिनिहे । আজকাল যেমন অল্প ব্যয়ে দূরবীণ, প্রভৃতি জ্যোতির্ষিক যন্ত্র কিনিতে পারা যায়, হাসেলের সময় তাহ মোটেই মুলভ ছিল না। জ্যোতিষী একাধারে দক্ষ গণিতবিদ এবং চতুর শিল্পী না হইলে, গবেষণার কোন ফলই পাওয়া ঘাইত না । হার্সেল সাহেব যেমন যান্ত্রশিল্পী ছিলেন তেমনি গণিতবিদ ছিলেন। এই জন্তই নানা অক্ষয় কীৰ্ত্তির প্রতিষ্ঠা করিয়া তিনি চিরস্মরণীয় হইয়া রহিয়াছেন। ভ্রাতার সহিত জ্যোতির্ষিক-কাৰ্য্য করিয়া যে একটু অবকাশ পাইতেন কেরোলিন তাহ বৃথা ব্যয় করিতেন না। এক সময়ে এই অবকাশ যাপনের জন্য ধূমকেতুর পর্য্যবেক্ষণের উপযোগী একটা দূরবীণ নিৰ্ম্মাণে হাত দিবেন বলিয়া তাহার খেয়াল হইয়াছিল। ভ্রাতার অব্যবহার্য্য একটা নল বাগানের এক কোণে পড়িয়াছিল, তাহাতে স্বহস্তনিৰ্ম্মিত একথানি কুড়ি, ইঞ্চি বাসের দর্পণ লাগাইয়া, তিনি একটা দূরবীণ, খাড়া করিলেন। ভাঙা কলের পরিত্যক্ত চাকাকে ঘষিয়া মজিয়া সেই দূরবীণের খগোল 〉R পরম বিমোক্ষ । চক্র করা চুইল। তাছাড়া আর ঘাহা কিছু আবহুক, স্বহস্তে বাটালি করাত ধরিয়া কেরোলিন একে একে সকলই প্রস্তুত করিয়া ফেলিলেন। শেষে যখন এই যন্ত্রে আকাশ পর্য্যবেক্ষণ করা হইয়াছিল, কেরোলিন ইহার অত্যাশ্চর্য্য কাৰ্য্য দেখিয়া বিঘ্নিত হইয়াছিলেন। প্রায় পঞ্চাশ বৎসর ধরিয়া ঐ দূরবীণ দিয়া নান পৰ্য্যবেক্ষণ করিয়াছিলেন। একদিনের জন্যও তিনি এটিকে কাছা-ছাড়া করেন নাই, এবং কোন দিনই তাহার সংস্কারের প্রয়োজন হয় নাই। যে আটটি ধূমকেতু আজও কেরোলিনের . নামে বিখ্যাত, তিনি এই যন্ত্রটি দ্বারাই সেগুলির আবিষ্কার করিয়াছিলেন । - শ্রীজগদানন্দ রায়। পরম বিমোক্ষ। (বুদ্ধদেবের মত ; পালি হইতে অনূদিত )। মুক্তি কাহাকে বলে ? মুক্ত পুরুষের লক্ষণ কি ? বুদ্ধদেব বহুস্থলে এই সমুদয় প্রশ্নের উত্তর দিয়াছেন। মৃত্ত নিপাত নামক পালি গ্রন্থ হইতে আমরা নিয়ে এই ৷ সংক্রান্ত দুইটা পরিচ্ছেদ অনুবাদ করিয়া দিলাম। (>). তোদেয্য-মাণবক-পুচ্ছ । " আয়ুষ্মান তোদ্যে জিজ্ঞাসা করিলেন—“যাহাতে কামনা বাস করে না, যাহার তৃষ্ণা নাই, যিনি সন্দেহ উত্তীর্ণ হইয়াছেন, তাহার বিমোক্ষ কীৰ্দশ ?” ভগবান বলিলেন—“যাহাতে কামনা বাস করে না, যাহার তৃষ্ণা নাই, যিনি সন্দেছ উত্তীর্ণ হইয়াছেন, তাহার আর অন্য বিমোক্ষ নাই ( অর্থাৎ ইহাই তাহার পরম বিমোক্ষ )।” - গেদেগা জিজ্ঞাসা করিলেন—“তাহার কি বাসনা আছে কিংবা তিনি বাসনা-রহিত ? তিনি কি প্রাঙ্গ-কল্প, ন, তিনি প্রাজ্ঞ ? হে শাক্য ! মুনি কে ? ইছা যাহাতে আমি জানিতে পারি, হে সমস্ত চক্ষু ! তাহা আমাকে বলুন।”