পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(Wilson), ott STScr goofs (Sir whitlaw Ainstie) সার উইলিয়াম ওসাউনেলী (Sir William O'shaughnessy) Grgits stín (Dr. Hoernle) প্রভৃতি বিখ্যাত ইউরোপীয় পণ্ডিতগণ সকলেই আয়ুৰ্ব্বেদের প্রাচীনত্ব স্বীকার ফরিয়াছেন। অপরদিকে হায়াস (Haas) প্রভৃতি পণ্ডিতগণকে বিপরীত মত অবলম্বন করিতে দেখা যায়। অধ্যাপক রায় মহাশয় তাহার প্রণীত হিন্দু রসায়নের ইতিহাসে হারাল প্রভৃতি বিপক্ষপক্ষীয়গণের বিদ্বেষভাবপ্রস্থত ভ্রম প্রদর্শন করাইয়া আয়ুৰ্ব্বেদের প্রাচীনত্ব অক্ষুণ্ণ রাখিয়াছেন। আমার ধারণা আয়ুৰ্ব্বেদের প্রথম উৎপত্তি অথৰ্ব্ববেদে । আমেরিকার বিখ্যাত সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত হুইটনি (Whitney) সাহেবের অথৰ্ব্ববেদের অনুবাদ পাঠ করিয়া ঐ ধারণা বদ্ধমূল হইয়াছে। অথৰ্ব্ববেদের মন্ত্ৰতন্ত্রের মধ্যে অনেক ভেষজের নাম ও তাছাদের রোগদূরীকরণের ক্ষমতা বেশ স্পষ্ট উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়।. মিশর দেশেও প্রাচীন রসায়নের (“কিমিয়া” বিদ্যা, যাহা হইতে "এলকেমি" (Alchemy) ও পরে কেমিষ্টা (Chemistry) নামের উৎপত্তি হইয়াছে) উৎপত্তি মন্ত্রতন্ত্র এবং যান্থবিজ্ঞার মধ্য দিয়া হইয়াছে। আয়ুৰ্ব্বেদের উৎপত্তি অথৰ্ব্ববেদে, • তাহার ক্রমৰিকাশ চরক, শুশ্ৰত প্রভৃতি গ্রন্থে। বাস্তবিক অথৰ্ব্ববেদের পরবর্তী এবং চরক প্রভৃতি গ্রন্থের পূর্ববর্তী সময়ের মধ্যে হারিত, ভেল, পরাশর, অগ্নিবেশ, জাতুকৰ্ণ প্রভৃতি মনীষিগণ আয়ুৰ্ব্বেদীয় গ্রন্থসকল প্রণয়ন করিয়াছিলেন। সেই সকল গ্রন্থ । অধিকাংশই এখন লুপ্ত। অষ্ট ভাগে বিভক্ত “আয়ুৰ্ব্বেদ” নামক গ্রন্থ চরক প্রভৃতির পূৰ্ব্বে রচিত হইয়াছিল রলিয়া যে প্রবাদ আছে + তাহা কাল্পনিক বলিয়া মনে হয় না। ইহার ষষ্ঠ অংশ ডাক্তার রাজেন্দ্রলাল মিত্র কৃত বিকানীর রাজ্যের রাজপাঠাগারে সংগৃহীত পাণ্ডুলিপি-তালিকাভূক্ত রহিয়াছেঃ • Co. Ray: History of Hindu Chemistry, vol. 1. p. iii.

  • Cf. 'অথৰ্ব্ব সৰ্ব্বশ্বমায়ুৰ্ব্বেদং"-ভাবপ্রকাশ পূ: ২ ( কালীশচন্দ্র সেন গুপ্তের সংস্করণ)।

+ Dr, Wise: Commentary on the Hindu System • ‘of Medicine, p. 2: - t শার্কে ***t«—Bikanir Catalogue, No. 1382. >R প্রবাসী--বৈশাখ, ১৩১৭। MMMMSMMMMMMMMM MMMMMMMMMSMMSMMSMMSMMSMSMSMSMMS [ ১০ম ভাগ । এবিষয়ের এখানে অবতারণা করা হইল মাত্র, অন্যত্র এবিষয়ের সবিশেষ আলোচনা করিবার ইচ্ছা রহিল। এই প্রাচীন আয়ুৰ্ব্বেদের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের সহিত ভারতে রসায়ন শাস্ত্রের উৎপত্তি ও উন্নতির ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ রহিয়াছে। ইউরোপে রসায়ন শাস্ত্রের বিকাশ দুইটী উপলক্ষ্য ধরিয়া হইয়াছে। প্রথম সীসক, লৌহ প্রভৃতি নিকৃষ্ট ধাতুকে স্বর্ণ, রৌপ্য প্রভৃতি মূল্যবান ধাতুতে পরিণত করিবার চেষ্টা, দ্বিতীয়, সৰ্ব্বরোগহর, জীবনীশক্তিবৰ্দ্ধনকারী ঔষধের (elixir of life) আবিষ্কার। ভারতে আয়ুৰ্ব্বেদকে মুখ্য উদেখা করিয়া রসায়ন শাস্ত্র পুষ্টিলাভ করিয়াছে। সেই জন্য দেখিতে পাই যে আয়ুৰ্ব্বেদের যত উন্নতি সাধিত হইয়াছে, রসায়ন শাস্ত্রও ততই উন্নত । হইয়াছে। যতদিন আয়ুৰ্ব্বেদে কেবলমাত্র ভেষজ ঔষধের ব্যবহার প্রচলিত ছিল, ততদিন পর্য্যন্ত রাসায়নিক প্রক্রিয়া সকল উদ্ভাবিত হয় নাই। ধাতুঘটিত ঔষধের বাহিক ও আভ্যন্তরিক প্রয়োগ সহকারে রাসায়নিক প্রক্রিয়াসকল আবিষ্কৃত হইতে লাগিল। চরক এবং শুশ্রীতে প্রধানতঃ ভেষজ ঔষধেরই বর্ণনা আছে, ধাতু ঘটিত ঔষধের ব্যবহার অতি অন্ন। যে সকল ধাতুঘটিত ঔষধ শুশ্ৰুত ব্যবহার করিয়াছেন, সেই সকলের মধ্যে ক্ষার দ্রব্যের প্রস্তুত প্রণালী বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তীক্ষ ক্ষার ও মৃদ্ধ ক্ষার (caustic and mild alkali) প্রস্তুত প্রণালী আধুনিক রসায়ন সম্মত। লবণ, ক্ষার, সোহাগা, স্বর্ণ, রৌপ্য, তাম্র, লৌহ প্রভৃতি ধাতু ও তাহদের সহজ প্রাপ্য কয়েকটি খনিজ পদার্থ (ore) স্থলে স্থলে ব্যবহৃত হইয়াছে। ধাতুর জারণ, মারণ প্রভৃতি রাসায়নিক প্রক্রিয়া বিশদভাবে তখন পর্য্যস্ত আবিষ্কৃত ও বর্ণিত হয় নাই। বাগভটের অষ্টাঙ্গহৃদয় চরক স্বশ্ৰত প্রভৃতি গ্রন্থের সার সংগ্ৰহ করিয়া রচিত, তাহাতে বিশেষ কোনও নূতন রাসায়নিক আবিষ্কার দৃষ্ট হয় না। চক্রপাণি দত্ত তাহার চক্রদত্ত সংগ্রহে সমান পরিমাণ পারদ ও গন্ধক মিশাইয়া কজলী বা রসপপট প্রস্তুত করিয়া ঔষধাৰ্থে ব্যবহার করিয়াছেন। তাহার

  • স্বতের উত্তর তন্ত্র অ্যায়ে ৰতি লোহ, রঙ্গ, সীল, তাম ও স্ববর্ণের “অয়স্কৃতি বিধি" ধাতুর জারণ ও মারণের পুৰ্ব্বাভাস বলিয়া গণ্য হইতে পারে ।

১ম সংখ্যা । ] . সময় হইতে পারদ ও অন্য অন্য ধাতুঘটিত ঔষধের ব্যবহার ক্রমশঃ প্রসিদ্ধিলাভ করিয়াছে। চক্রপাণি লৌহের মারণ বিধি লিখিয়া গিয়াছেন সত্য, কিন্তু অন্ত অন্ত ধাতুর মারুণ জারণ ও শোধন প্রণালী এবং উৰ্দ্ধপাতন, অধঃপাতন প্রভৃতি রাসায়নিক প্রক্রিয় তাহার পরে আবিষ্কৃত হইয়াছে বলিয়া বোধ হয়। তৎপররর্তী তান্ত্রিকগ্রন্থ সমূহে আমরা রসায়নের সমধিক উন্নতি দেখিতে পাই । দেহকে বলশালী ও নীরোগ করিবার জন্ত পারদকে ( রস ) কেন্দ্রীভূত করিয়া বিবিধ ধাতুঘটিত ঔষধ পরীক্ষিত ও ব্যবহৃত হইয়াছে। মুরার ব্যবহার ভারতে আবহমানকাল+ প্রচলিত ছিল, কিন্তু উহার স্রোত তান্ত্রিক প্রথার প্রচলনের সময়ে সমধিক প্রবাহিত হওয়াতে মুরাপ্রস্তুতপ্রণালীরও বিশেষ উন্নতি পরিলক্ষিত হয়। ধাতুর জারণ, মারণ, শোধন, উৰ্দ্ধপাতন, অধঃপাতন প্রভৃতি রাসায়নিক প্রক্রিয়াএবং গর্ভযন্ত্র, কোষ্টিযন্ত্র প্রভৃতি যন্ত্রের বর্ণনা বিশদভাবে এই সকল তান্ত্রিক ও তৎপরবর্তী সময়ের গ্রন্থে দৃষ্ট হয়। রসার্ণব, রসেন্দ্র চিন্তামণি, রস-রত্ন-সমুচ্চয় প্রভৃতি বহুগ্ৰন্থ এই শ্রেণীভূক্ত। শাঙ্গাধর আয়ুৰ্ব্বেদ ও রস চিকিৎসার সার সংগ্ৰহ করিয়া রচিত। আয়ুৰ্ব্বেদের বোধ হয় শেষ মৌলিক বৃহৎগ্রন্থ ভাবমিশ্রের ভাবপ্রকাশ। ডাক্তার ওয়াইজের মতে ভাবপ্রকাশ তিন শত বৎসর পূৰ্ব্বে রচিত। এই ভাবপ্রকাশে আমরা আয়ুৰ্ব্বেদ ও রসায়নের সার সমাবেশ দেখিতে পাই । তাহার পরবর্তী সময়ের গ্রন্থ সকলে মৌলিক গবেষণা বড় দৃষ্ট হয় না—উহারা সংগ্ৰহ মাত্র । বড়ই আশ্চর্য্যের বিষয় যে যে সময় হইতে ভারতে আয়ুৰ্ব্বেদ ও রসায়নের অবনতি আরম্ভ হইল সেই সময় হইতে ইউরোপে বৈজ্ঞানিক-গবেষণার নবযুগের স্বচন৷ হইল! ষোড়শ শতাব্দীর পূৰ্ব্বে অনেক বিষয়ে ভারতের রাসায়নিক জ্ঞান তাৎকালিক ইউরোপের রাসায়নিক জ্ঞান অপেক্ষা বহু উন্নত ছিল। একটি উদাহরণ দ্বারা তাহা স্পষ্টই বুঝা যাইবে। ইউরোপে প্যারাসেলস ( Paracelsus ) নামক বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক সৰ্ব্বপ্রথম ধাতুঘটিত ঔষধ t Rajendra Lall Mitra : Indo Aryans, Vol. I, pp. 389-421. - আয়ুৰ্ব্বেদ ও আধুনিক রসায়ন। ço ( internal use ) পুঞ্জা প্রচার করেন। किङ्क ভারতে তাহর প্রায় চারিশত বৎসর পূৰ্ব্বে চক্ৰপাণি কজ্জলি সেবনের ব্যবস্থা করিয়া গিয়াছেন। - স্বাধীন চিন্তাই মৌলিক গবেষণার প্রধান ভিত্তি।" ইউরোপের বৈজ্ঞানিক-গবেষণার মুহূত উন্নতি এবং ভারতে তাহার অবনতির কারণ অন্বেষণ করিলে দেখিতে পাই যে একদিকে স্বাধীন চিস্তার নব উন্মেষ ও অপরদিকে তাহার বিলোপ। ষোড়শ শতাব্দীতে মার্টিন লুথার ইউরোপের ধৰ্ম্ম জগতে যে স্বাধীন চিন্তার যুগ আনয়ন করিলেন তাহার স্পন্দনে সমগ্র ইউরোপ মুখরিত হইয়া উঠিল । সেই স্পন্দন সুস্থপ্ত ভ্রান্ত বিজ্ঞানান্বেষীর রুদ্ধ দ্বারেও সবলে আঘাত করিল। ফ্রেন্সিস বেকন ও cgątzé ( Rene Descartes ) estĒTA ČAstfā"Fotos* (School-men ) sa: রবার্ট রয়েল রাসায়নিকগণের ( alchemist ) ভ্রাস্ত ধারণার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করিয়া দিলেন। দুই এক শতাব্দীর মধ্যে এই স্বাধীন চিন্তার স্রোত বহুদিনের পুঞ্জীভূত ভ্রান্ত ধারণার স্তুপ কোথায় ভাসাইয়া লইয়া যাইল। রাসায়নিক জগতে রয়েল, প্ৰিষ্টলি, কেভেণ্ডিস, ল্যাভোয়াসিয়ে, সিল প্রভৃতি মনীষিগণ মৌলিক গবেষণায় অমর হইয়া গেলেন। অপরদিকে ভারতে স্বাধীন চিন্তার স্রোত রুদ্ধ হইয়া আসিল অধ্যাপক রায়মহাশয় ইহার কারণ অন্বেষণ করিতে গিয়া ভারতে বৌদ্ধধৰ্ম্ম উচ্ছেদের পর ব্রাহ্মণ্য ধৰ্ম্মের পুনঃ প্রতিষ্ঠার সহিত জাতিভেদ প্রথার পুনঃ সংস্থাপনাকে প্রধান কারণ বলিয়া নির্দেশ করিয়াছেন। - জাতিভেদ প্রথার সংস্থাপনের সহিত শিল্পকলা ইতর শ্রেণীর মধ্যে বংশপরম্পরায় স্থান লাভ করিল সত্য বটে কিন্তু উহা আয়ুৰ্ব্বেদ ও রসায়নের মৌলিক গবেষণার অবনতির প্রধান কারণ বলিয়া মনে হয় না, কারণ আয়ুৰ্ব্বেদ ব্যবসায়িগণ চিরকালই স্থপণ্ডিত ও বিদ্বান ছিলেন এবং এখনও তাছাদের মধ্যে অনেকেই সংস্কৃতজ্ঞ ও সুপণ্ডিত । আমার মনে হয় যে ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীর মধ্যে চরক, শুশ্রুত, বাগভট, চক্রপাণি দত্ত প্রভৃতি মনীষিগণের গ্রন্থাদি অতি প্রাচীন • Roy History of Hindu chemistry, vol. Io5ー17o. -