পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

აჯ g বৈকাল ੋ निष्ठाना রহিল। ফ্র্যাঙ্ক সমস্ত দিন তাহার কথা আলোচনা করিয়া মনে মনে খুব হাসিলেন। বার্ট যখন পুলিশের কথা শুনিল তখন চটিয়া আগুন ! ক্লাবে ডিনারের সময় সে সকলকার কাছে মুখখানি বিমৰ্ষ করি বলিল তার এক আত্মীয়ের মৃত্যুর জন্য তাহাকে লণ্ডন ছাড়িয়া যাইতে হইয়াছিল--চিঠির কি গোলমালে ফ্রাঙ্ক সে খপর পান নাই। ফ্রাঙ্ক বার্টির কানের কাছে মুখ লইয়া গিয়া বিশেষ আগ্রহের সহিত চুপি চুপি জিজ্ঞাসা করিলেন “কোথায় গিয়েছিলে ?” বাট নিতান্ত ভালো মানুষের মতো মুখ করিয়া ফ্রাঙ্গকে বলিল—“বিশেষ কোথাও নয়!” বলিয়া একটা অয়েষ্টার মুখের কাছে তুলিয়া ধরিল , তার সে সম্বন্ধে আর কোনো উচ্চবাচ্য না করিয়া দিব্য আরামের সঙ্গে আরো বারোটা অয়েষ্টার গলাধঃকরণ করিয়া ফেলিল । (ক্রমশঃ) শ্ৰীমণিলাল গঙ্গোপাধ্যায়। স্যাময়োজি । খৃষ্টাব্দ ত্রয়োদশ এবং চতুর্দশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে জাপানে হোজো রাজবংশ রাজত্ব করেন তাহার কামকুরাধিপতি বলিয়া খ্যাত ছিলেন। স্যাময়োজি তোকিয়োরি এই হোজো বংশের পঞ্চম রাজা। তিনি প্রজাদের মঙ্গলের জন্য তাহার সকল সময় এবং ক্ষমতা সমর্পণ করিয়াছিলেন। জাপানীরা তাহার বৃদ্ধি এবং বিজ্ঞতার নিদর্শন স্বরূপ একটি কাহিনী বলিয়া থাকে। রাজা হইবার কয়েক বৎসর পরে তিনি দেখিলেন যে গুহার চারিদিকে সৰ্ব্বদাই পরিষদরা থাকিয় তাহার সুতি গান করে—এই দেখিয়৷ তাছার বড়ই ভয় হইল যে পাছে তিনি রাজকাৰ্য্যে অমনোযোগী হইয়া পড়েন। সেইজন্য তিনি প্রচার করিয়া দিলেন যে রাজা মারা গিয়াছেন। যথাসময়ে একটি শূন্য কবরসিন্দুক সমাধিস্থলে পাঠাইয়া দেওয়া হইল। অপুর দিকে স্যামরোজি মস্তক মুণ্ডন করিয়া দৌদ্ধ ভিক্ষুর বেশে জাপানের যে বাটটি প্রদেশ আছে তাহা aমণ কৰিবাৰ জন্য বাহির হইলেন। একদিন শীতকালে প্রবাসী-বৈশাখ, ১৩১৭ । [ ১০ম ভাগ । সন্ধ্যার সময়ে তিনি সানো নামে এক ক্ষুদ্র গ্রামের নিকট আসিয়া উপস্থিত হইলেন ; তখন তুষার ভীষণভাবে পড়িতেছিল, এবং রাত্রির অন্ধকারও ঘনাইয়া আসিতেছিল ; স্তাময়োজি আশ্রমের জন্য ব্যাকুল হইয়া চারিদিকে তাকাইতে লাগিলেন। অদূরে একটি ক্ষুদ্র শৈলের তলদেশে এক কৃষকের ক্ষুদ্র গৃহ দেখিয়া তিনি নিশ্চিন্ত হইলেন। দ্বারে উপস্থিত হইয়া ধীরে ধীরে আঘাত করিতে করিতে ভাবিলেন অবশুই কোনো কৃষক রমণী তাহাকে এই দুর্যোগের সময়ে অভ্যর্থনা করিয়া ভিতরে গ্রহণ করিবে। কিন্তু দ্বার উন্মুক্ত হইলে তিনি আশ্চৰ্য্য হইয়া দেখিলেন যে একটি স্বন্দরী শিক্ষিতা স্ত্রীলোক দাড়াইয়া আছে, স্তাময়োজি, রাত্রের মত তাহার নিকটে আশ্রয় চাহিলেন ; মহিলাটি অতিশয় দুঃখের সহিত বলিলেন "আমার স্বামী গৃহে নাই, আমি কেবল একলা আছি, আমি আপনাকে ভিতরে গ্রহণ করিতে পারিলাম না। সেজন্য আমি বড়ই দুঃখিত ; তিনি যদি এখানে থাকিতেন তাহা হইলে আপনাকে একবারও আশ্রয়ের জন্য অনুরোধ করিতে হঠত না ; যাই হোক নিকটেই গ্রাম ; কেবল এক মাইলের পথ, সেখানে বেশ ভাল সরাই আছে, আপনি আশ্রয় পাইবেন ।" কেবলমাত্র এক মাইল। এই ভীষণ তুষার ঝটিকায় আধ মাইল যাওয়াও যে শক্ত । কিন্তু স্ত্রীলোকটির অপ্রতিভ ও বিষঃ মুখ দেপিয়া তিনি আর সেখানে কাল বিলম্ব না করিয়া দ্রুতপদে বাহির হইয়া পড়িলেন। কিছুদূর অগ্রসর হইতেই ঝটিকা এমনি প্রচণ্ড ভাবে বহিতে লাগিল যে তিনি কয়েকপদ অগ্রসর হইতে না হইতে একেবারে থামিয়া পড়িলেন ; শরীরে সামর্থ্য নাই, মনেও বল নাই । তিনি হতাশ হইয়া ভাবিতে লাগিলেন–বুঝি এই স্থানেই আমার শেষ হয়, কামকুর আমি আর ফিরিয়া যাইতে পারিলাম না। হঠাৎ এই সময়ে দূরে তিনি একটি শব্দ শুনিতে পাইলেন এবং ক্রমেই শব্দ নিকটতর হইলে তাহার যেন বোধ হইল, তাহাকে কে ডাকিতেছে। সেই জন্য তিনি চীৎকার করিয়া বলিলেন, “কেহে-আমাকে ডাকিতেছ নাকি ?” এই কথা বলিতে বলিতে তিনি দেখিতে পাইলেন একটি অপরিচিত লোক আসিয়া দলিল,--“আঙ্কে, ষ্টা, আমি | ১ম সংখ্যা । ] আপনাকে খুজিতে আসিয়াছি ; বাড়ীতে আসিয়া দেখিলাম আমার স্ত্রী অতিথিকে গৃহে স্থান দিতে পারেননি বলিয়া অতিশয় বিষঃমুখে বসিয়া আছেন ; আপনি তাহাকে ক্ষম করিবেন, এবং ক্ষমার নিদর্শন স্বরূপ অনুগ্রহ করিয়া আমাদের গৃহে ফিরিয়া চলুন। আমরা অত্যন্ত গরীব লোক আমাদের বাড়ীটি নিতান্ত ছোট, কিন্তু যাইহোক আমরা আপনাকে যেমন করিয়া হোক আশ্রয় দিব।” স্যাময়োজি এই লোকটির ভদ্রতা দেখিয় তাহাকে আন্তরিক ধন্যবাদ প্রদান করিলেন এবং তাহার গৃহে আসিলেন । গৃহস্বামীর পত্নী অতিথির নিকট আসিয়া অতি বিনীত হইয় বার বার ক্ষমা প্রার্থনা করিলেন, এবং তাহার স্বামী আসন আনিয়া তাহাকে গৃহমধ্যে প্রবেশ করিতে অনুরোধ করিলেন ; স্যাময়োজি হাত পা ধুইয় মাথার টুপিটি খুলিয়া ঘরের মধ্যে প্রবেশ করিলেন । ইতিমধ্যে,কৃষকপত্নী আহার প্রস্তুত করিয়া আনিয়া দিলেন এবং স্যাময়োজি আহার করিয়া এমনি পরিতৃপ্ত হইলেন যে তাহার মনে হইল পূৰ্ব্বে সেরূপ কখনো হন নি। আহারের পর তাহারা তিন জনে আগুনের পাশে বসিয়া কথাবৰ্ত্তা আরম্ভ করিলেন। বাহিরে বাতাস ভীষণ গর্জন করিতে লাগিল, শীতও বাড়িল অপরদিকে জালানির কাঠও ফুরাইল । গৃহস্বামী বলিলেন, “আজকার ন্যায় শীতের রাত্রে অতিথিসৎকারের জন্ত ভাল জালানি কাঠের প্রয়োজন বড়ই ।” এই বলিয়া তিনি ঘর হইতে বাহির হইয়া অতি অল্প সময়ের মধ্যে কতকগুলি চারা গাছ একটি ঝুড়ি করিয়া আনিয়া উপস্থিত হইলেন ;- একটি পাইন, একটি প্লাম, এবং একটি চেরি গাছ । স্যাময়োজি বলিলেন, “মহাশয় আপনি আমার জন্য এই সকল সুন্দর গাছগুলি নষ্ট করিবেন না ; আমার বড়ই কষ্ট হইতেছে আপনি কেন আমার জন্য এত ক্ষতি স্বীকার &করিতেছেন।" - যাই হোক গৃহস্বামী স্যামফুেজির কথা না শুনিয়া গাছগুলি মট্‌ মটু করিয়া . আগুনে দিলেন। ঠাণ্ড ঘর গরম श्ध्ना डेठेिल । তিনি বলিলেন, “আমি এই সুন্দর চারা গাছগুলি বড় ভালবাসি। কিন্তু গৃহের অতিথির সেবাৰ জন্য এগুলি সংকলন ও সমালোচন—স্যাময়োঞ্জি । این নষ্ট করাতেই আমার আনন্দৰ্ণ দেখুন পাইনগুলি কি চমৎকার জলিতেছে।” এই কথা বলিয়া তিনি বসিয়া পুনৰ্ব্বার কথাবার্তা আরম্ভ করিলেন এবং বর্তমান রাজা এবং রাজশাসন সংক্রান্ত নানাবিধ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন। স্যাময়োজির প্রথম হইতেই সন্দেহ হইয়াছিল যে এই স্বামী স্ত্রী যথার্থ কৃষক নয় এবং তাহার পর তাহাদের কার্য, ব্যবহার, কথাবাৰ্ত্ত সমস্ত হইতেই তাহার এই বিশ্বাস আরও দৃঢ়তর হইয়া দাড়াইল । অবশেষে তিনি গৃহস্বামীকে জিজ্ঞাসা করিলেন “আমার এই প্রশ্নের বাচালতা ক্ষমা করিবেন, দেখুন আপনাদের ব্যবহার এবং কথাবার্তা শুনিয়া আমার মনে হইতেছে যে আপনার যথার্থ কৃষক নন, অনুগ্রহ করিয়া আপনার নাম বলুন, এবং কেনই বা এই জনশূন্য প্রান্তরে বাস করিতেছেন তাহাও বলুন।” গৃহস্বামী একটু হাসিয়া বলিলেন, “আপনি ঠিকই বলিয়াছেন, কিন্তু আমায় ক্ষমা করিবেন আমি নামটি বলিতে পারির না।” সাময়োজিও ছাড়ার পাত্র নহে ; অবশেষে গৃহস্বামীকে বাধা হইয়া নাম প্রকাশ করিতে হইল। তিনি বলিলেন, “আপনি ঠিক বলেছিলেন, “আমি কৃষক নাই –আমি একজন সামুরাই, আমার নাম গেঞ্জিমল নে জে সুনিয়ো ।” “কি ! আপনি গেঞ্জিমল মুনিয়ে সেই বিখ্যাত সামুরাই ? কি আশ্চৰ্য্য আপনি এই সহরের বাহিরে দূর প্রান্তরে নির্জনে বাস করিতেছেন।” “আমি আর সত্যকথা গোপন রাথিৰ বলিতেছি। আমার এক দুষ্ট ভাইপো আছে ; যখন যুদ্ধ করিতে দূরে” গিয়াছিলাম, তখন সে বিষয়-সম্পত্তি অধিকার করিয়া বসিয়াছিল ; ফিরিয়া দেখি, আমি একেবারে পথের ফকির।” স্যাময়োজি তাহার আরও নিকটে আসিয়া বলিলেন, “সত্যই এ অত্যন্ত দুঃখের বিষয় ; কিন্তু আপনি রাজাকে এ বিষয় জানান নি কেন ? তিনি অবশুই এ যথাবিহিত বিধান করিতেন ।" কেন । আমি আমার আসিয়া বিষয়ে