পাতা:প্রবাসী (দশম ভাগ, প্রথম খণ্ড).pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bペ স্বৰ্য্যবিম্বের উপর ধূমকেতুর পথ। লক্ষ করিতে পারিব না, কিন্তু রশ্মিনিৰ্ব্বাচন যন্ত্রে তাহ ধরা পড়িবে। সৌর বর্ণচ্চত্রের কোন অংশ হইতে কোন বর্ণরশ্মি অপহৃত হইল স্থির করিতে পারিলে, ধূমকেতুর গঠনেপাদন নির্ণয় করা কঠিন হইবেন । যুরোপে উপগ্রহণ দৃষ্ট হইবেন। কাজেই যুরোপীয় পণ্ডিতদিগের মধ্যে কেহই এই পর্যবেক্ষণ ব্যাপারে যোগ দিতে পরিবেন না। আমাদের মাম্রাজ অঞ্চলের একটি বেশ ভাল মানমন্দির (solar Physics Observatory at Kadaikanol) attg | El grşı কলিকাতার প্রেসিডেন্সি এবং সেণ্ট জেভিয়ারস্ কলেজেও বড় দূরবীণ, এবং বর্ণচ্ছত্র প্রহণোপযোগী যন্ত্ৰ (spectroheliagraph) আছে শুনিয়াছি এই সকল মানমন্দিরের সুযোগ্য জ্যোতিষিগণ উপগ্রহণ কালে কি আবিষ্কার করেন, তাহা জানিবার জন্য সমগ্র জগx উদগীব হইয়া থাকিবে। আমরা পূৰ্ব্বে এই সম্বন্ধীয় এক প্রবন্ধে বলিয়াছিলাম, ১৯শে মে তারিখে ধূমকেতুর পুচ্ছ দেড় কোটি মাইল দীর্ঘ হইলে আমাদের পৃথিবীকে পুচ্ছাঘাত সহা করিতে হইবে। অতি ক্ষুদ্র ধূমকেতুরও পুচ্ছ ইহা অপেক্ষ অনেক বড় হইয়া থাকে। স্বতরাং ১৭ই, ১৮ই এবং ১৯শে মে তারিখে সম্ভবতঃ পৃথিবীকে হালির ধূমকেতুর পুচ্ছাভ্যন্তরে প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩১৭ --- ১০ম ভাগ : বাস করিতে হইবে। গত ১৮৬১ সালে পৃথিবী আর একটি ধূমকেতুর পুঞ্জ তাড়না সহ্য করিয়াছিল। বলা বাহুলা ইহাতে পৃথিবীর অনুমাত্র ক্ষতি হয় নাই । আকাশটা কেবল একপ্রকার भू५ श्रांtशाएउ श्%९ श्रांtशाकिठ श्म পড়িয়াছিল মাত্র । এবারও হয় য় ঐ প্রকার কিছু একটা দেখা যাইতে পারে । এইজন্য ১৭ই মে হইতে আরম্ভ করিয়া পরবর্তী তিন দিবস আকাশের অবস্থা বিশেষরূপে পৰ্য্যবেক্ষণ করিবার জন্য জ্যোতিষিগণ সকলকেই অনুরোধ করিয়াছেন। ধূমকেতুর পুঞ্জ অতি লঘু বাষ্প দ্বারা গঠিত হইলেও, তাহার নানা অংশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উল্কাপিণ্ড পরিব্যাপ্ত থাকা বিচিত্র নয়। হয় ত ঐ তিন রাতিতে উদ্ধাবৰ্ষণের প্রাচুর্য্যও লক্ষিত হইতে পারে। প্রায়-দুই হাজার বৎসর সৌর জগতে বিচরণ করিয়াও ! হালির ধূমকেতু যখন অদ্যাপি ধ্বংস প্রাপ্ত হয় নাই, তথন মনে হয় উহার দেহ কেবল বাপ দ্বারা কখনই গঠিত নয়। ২। নক্ষত্রপুঞ্জের গতি । পৃথিবী যেমন হুর্য্যের চারিদিকে ঘুরিয়া বেড়াইতেছে, স্বৰ্য্যও সেইপ্রকার তাহার গ্রহউপগ্রহগুলি দ্বারা পরিবৃত্ত থাকিয়া আর কোন এক মহা স্বর্যোর উদ্দেশে ছুটিয়া চলিয়াছে। জ্যোতিষ্কগুলির মধ্যে কেহই স্থির হইয়া দাড়াইয়া নাই, সকলেই অবিরাম ছুটাছুটি করিতেছে। পদার্থের যে সকল অতি সূক্ষ্ম অংশকে বৈজ্ঞানিকগণ অণু বা পরমাণু নাম দিয়াছেন, সেগুলি ও নিশ্চল নয় । ইহার আকারে খুবই ক্ষুদ্র, এবং যে স্থানটুকুতে আবদ্ধ থাকে তাহাও খুব সংকীর্ণ। তথাপি এই ক্ষুদ্র গণ্ডীর ভিতর থাকিয়াও তাহারা দিবারাত্র প্রচণ্ডবেগে চলাফেরা করে। " আকাশের নক্ষত্রগুলিকে আমরা সাধারণতঃ নিশ্চল । বলিয়া ধরিয়া লই, কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে তাহাদের কেহই । ১ম সংখ্যা । ] নিশ্চল নয়। প্রত্যেকেই এক এক নির্দিষ্ট দিক্‌ লক্ষ করিয়া ভীমবেগে ছুটিতেছে। নক্ষত্রগুলি আমাদের পৃথিবী হইতে বহুদূরে অবস্থিত, এইজন্যই দুই চারি শর্ত বংসরে তাহাদের যে স্থানচ্যুতি ঘটে তাহ আমরা ভাল যন্ধের সাহায্যেও ধরিতে পারি না । কেবল এই কারণেই দূরবর্তী নক্ষত্রগুলিকে নিশ্চয় তারকা (Fixed stars) নামে অভিহিত করিয়া থাকি । অধ্যাপক বস্ (Prof. Boss) বৃষরাশির কতকগুলি তারকার গতি নিৰ্দ্ধারণের জন্ত কয়েক বৎসর পরিশ্রম করিয়াছিলেন। এই তারকাপুঞ্জ পৃথিবী হইতে এত দূরে অবস্থিত যে, সেগুলির আলোক পৃথিবীতে আসিয়া উপস্থিত ইষ্টতে প্রায় একশত কুড়ি বৎসর অতিবাহন করে। এই নক্ষত্রগুলি সমান্তরাল গতিতে যে ক্রমেই পৃথিবী হইতে দূরে যাইতেছে, বস্ সাহেব তাহার অনেক প্রমাণ পাইয়াছেন! বৃষরাশিতে যে কৃত্তিকা (Pleides) নামক নক্ষত্রপুঞ্জ আছে পাঠক হয় ত তাহ দেখিয়া থাকবেন। খালি চোথে ইহাতে ছয় সাতটি বেশ উজ্জ্বল নক্ষত্র গায়ে গায়ে অবস্থিত দেখা গিয়া থাকে চলিত কথায় অনেকে উহাকে “সাত-ভাই” বা “সাত-বোন” বলিয়া থাকেন। বস্ সাহেব বলিতেছেন, আর কয়েক সহস্ৰ বৎসর পরে, তাহার পর্য্যবেক্ষিত তারকাপুঞ্জটি ঐ কৃত্তিকারই মত এক জমাট নক্ষত্রপুঞ্জ হইয়া দাড়াইবে । এই শ্রেণীর নক্ষত্রগুলি পরম্পর সমান্তরাল পথে চলে কেন, তাহদের গন্তব্য স্থানই বা কোথায়, এই সকল প্রশ্নের আশু স্বমীমাংসার এখন কোন সম্ভাবনা দেখা যাইতেছে না। ডাক্তার লুডেনসডর্ফ সপ্তর্ষি মণ্ডলের কতকগুলি নক্ষত্রে ঐ প্রকার সমান্তরাল গতির লক্ষণ বহুকাল পূৰ্ব্বে দেখিতে পাইয়াছিলেন। কালপুরুষের (Orion ) কয়েকটি নক্ষত্র এবং পারমুস রাশির কয়েকটি তারকার মধ্যেও ঐ প্রকার গতি দেখা গিয়াছে। নক্ষত্র পর্যবেক্ষণের উপযোগী নানা স্বন্দর যন্ত্রের উদ্ভাবনের পর হইতে এই শ্রেণীর সমান্তরাল গতিশীল অনেক নক্ষত্রের আবিষ্কার হইয়া পড়িতেছে। ৩ । শুক্র গ্রহ । শুক্রগ্রহের পরিভ্রমণ-পথ অর্থাৎ কক্ষ ( Orbit) অামাদের পৃথিবীর কক্ষারই ভিতরে অবস্থিত । পৃথিবী ও শুক্রের - - --- জ্যোতির্ষিক যৎকিঞ্চিং । , শুক্র অবস্থিত। তারা" হইয়া দেখা দেয়, এবং তার পর কিছুদিন স্বর্যের br○ মধ্যে আর কোন গ্রহ নাই । কাজেই শুক্র আমাদের প্রতিবেশী। পৃথিবীর এক ধারে মঙ্গল এবং অপর ধারে এই গ্রহটিই—কথন সন্ধ্যাগগনে “সাজের আলোকের মধ্যে লুক্কায়িত থাকিয়া পূৰ্ব্বাকাশে “পোয়াতে তারা" হইয়া উদয় হয়। আজকাল পাঠক প্রত্যুষে—শুক্র গ্রহকে পূৰ্ব্বাকাশে উদিত দেখিতে পাইবেন। আমাদের এত নিকটে পাকিয়াও শুক্রগ্রহ অস্থাপি তাহার সকল পরিচয় আমাদিগকে দেয় নাই। শুক্রের অক্ষ ( axis) তাহার কক্ষার সমতলে কতটা হেলিয়া আছে, তাহা আজও নিঃসন্দেহে স্থির করা যায় নাই। আমাদের পৃথিবী যেমন প্রায় চব্বিশ ঘণ্টায় নিজের অক্ষের চারিদিকে আবর্তন করে, শুক্র কতকালে সেই আদৰ্ত্তন কাৰ্য্য শেষ করে তাহাও অদ্যাপি ঠিক জানা যায় নাই। ফ্রাগ্‌-ইফ মানমন্দিরের প্রসিদ্ধ জ্যোতিৰী লরেল সাহেবের নাম আজকাল কাঠারো নিকট অবিদিত থাকিতে পারে না । মঙ্গল গ্রহের উপর যে সকল কৃষ্ণ রেখা দেখা যায়, সেগুলিকে মঙ্গলবাদী জীবের স্বহস্ত নিৰ্ম্মিত থাল বলিয়া প্রমাণ করিবার জন্ত ঘোর বিতর্কের হুচনা করিয়াছেন। সম্প্রতি এই লয়েল সাহেবই শুক্রের গতিবিধিতে আমাদের চন্দ্রের গতির সাদৃশ্ব দেখিতে পাইয়াছেন। পাঠক অবশুই অবগত আছেন, আমাদের পৃথিবী যেমন ২৪ ঘণ্টায় নিজের অক্ষের চারিদিকে ঘোরে, চন্দ্র সে প্রকার ঘন ঘন আবর্তন করে না । পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করিতে উহার যে সময় লাগে, চাদ ঠিক সেই সময়েই নিজের চারিদিকে নিজে একমাত্র পাক দেয়। কাজেই চাদের কেবল সেই শশাঙ্কিত একটা দিকই পৃথিবীর দিকে উন্মুক্ত থাকিয়া যায়। লয়েল সাহেব গণনা করিয়া বলিতেছেন, শুক্র ঠিক চাদের মত সমগ্ৰ সূৰ্য্য প্রদক্ষিণ কালে নিজের চারিদিকে নিজে একবার ঘুরিয়া আসে। কাজেই উহারও একটা নির্দিষ্ট অংশ গৰ্ব্বদা স্বর্যের দিকে উন্মুক্ত থাকে। বৃহৎ দূরবীক্ষণ দ্বারা শুক্রমণ্ডলের ছবি প্রস্তুত করিয়া, লয়েল সাহেব তাহার সিদ্ধান্তের প্রত্যক্ষ প্রমাণও সংগ্ৰহ করিয়াছেন। - পূৰ্ব্বে জ্যোতিষিগণ শুক্রের আবর্তনকাল ২৩ ঘণ্ট