পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

سbسb ইলুদিকে সঙ্গে ক’রে বাড়ী যাও। মেয়েদের সঙ্গে পুরুষমানুষ একজন পাহারা থাকা চাই কিনা ?” রাহু বীণার সঙ্গে মাত্র কয়েকমুহূৰ্ত্ত আগেই জাসিয়াছিল, মাটিতে পা ঠুকিয়া বলিল, “বা-রে, আমি একটাও ছবি দেখলাম না !” ঐঞ্জিলা বলিল, “আচ্ছা, আমি ছবি দেখিয়ে আনছি।” অত্যন্ত কাতর মুখ করিয়! রাহু তাহার সঙ্গে চলিয়া গেল । আর-একজন মামুষের মুখে কাতরত। বেশ স্পষ্ট হুইয়াই প্রকাশ পাইল, সে অজয় । ঐঞ্জিলা যে সকলের সঙ্গে মিলিয়। চা থাইতে নাচে আসিল না, এ জিনিষট। তাহার অসহ অহঙ্কারের মত হইয়া অজয়ের চোখে লাগিল। তাহার অহঙ্কার দিয়া অজয়ের আত্মাভিমানকে সে যেন আঘাত করিল । সিড়ি দিয়া নামিতে নামিতে অজয়ের মনে হইতে লাগিল, কোন পরাজয়ের অপমান শিরে বহিয়া সে যেন তাহার ঈপ্সিত স্বৰ্গ হইতে বিতাড়িত হইয়। ফিরিতেছে। দেশের অগ্রসর বা অনগ্রসর কোনও সমাজেরই স্ত্রীজাতি-সম্পর্কিত সামাজিক রীতিনীতিতে সে আদৌ অভ্যস্ত ছিল না তাই বীণার অদ্যকার ব্যবহারের মধ্যে যে একটি দারুণ দুঃসাহসের পরিচয় ছিল তাহা তাহার চোখে পড়িল না । মনে মনে অকারণেই ঐন্দ্রিলাকে সে অপরাধী করিতে লাগিল । এমন কি, কি-উপায়ে অদ্যকার অপমানের যথাযোগ্য প্রতিশোধ সে লইতে পারে, সে-সম্বন্ধেও নানাপ্রকার সম্ভব-অসম্ভব কল্পনা করিতে সে ক্রটি করিল না। পেয়ালাতে ধূমায়িত চা ঢালিতে ঢালিতে বীণা কহিল, “কি নিয়ে এত গল্প হচ্ছিল ?” সুভদ্র কছিল, “বৌদ্ধধৰ্ম্ম ।” বীণ। তাহার টলটলে স্কন্ধর ঠোঁটটিকে একটু উন্টাইল, তারপর চিনির পাত্র হইতে চিমটায় করিয়া ডেলা চিনি উঠাইতে উঠাইতে কহিল, “অজয়বাৰু, আশা করি বুদ্ধদেবের পন্থা অনুসরণ করবেন না ?” বিমান কহিল, “তার আণ্ড সম্ভাবনা ত কিছু দেখা যাচ্ছে না। বিপরীত লক্ষণগুলোই আজকাল বরং প্রবল ।” এস, এস, তোমাকে S99ళు অজয় কহিল, বুদ্ধদেবের পন্থা অনুসরণ “করলেই বা ক্ষতি কি ?” বীণা কহিল, “আপনার আছে, বুদ্ধদেবের ছিল না। জীবনের মধ্যে মজা যেটুকু সেটুকুকে উপভোগ করে নিয়ে, তারপর যখন সবদিক দিয়ে ঠেলা সামলাবার সময় তখন ছেলেপিলে ঘরসংসার স্ত্রীর কাধে ফেলে দিয়ে পিঠটান দেওয়া, এতে আর মুস্কিলটা কোনখানে ? বুদ্ধদেব চালাক লোক ছিলেন তা বলতে হবে ।” সে-রাত্রে অঙ্গয় বাড়ী ফিরিয়া বহুক্ষণ ছাতে গিয়৷ একাকী বসিয়া রহিল। ভাবিতে লাগিল, মৰ্ম্মাস্তিক আনন্দ-বেদনা-ভরা এমন পরিপূর্ণ সন্ধ্যা একটিও আর তাহার জীবনে আসিয়াছে কিনা, স্থির করিল আসে নাই । কিন্তু ক্রমে তাহার চিস্তাতে আনন্দকে ছাপাইয়। বেদনা বড় হইয়া উঠিতে লাগিল। প্রথমতঃ যাহাকে অত্যন্ত অভাবিত ভাবে কয়েক মুহূৰ্ত্তের জন্য কাছে পাইয়াছিল, জীবনের প্রতিটি মুহূৰ্ত্ত ভরিয়া তাহাকে কাছে না পাইবার বেদনা তাহার মনকে জুড়িয়া রহিল। কাল সকালে ঘুম ভাঙিয়া রাত্রিতে ঘুমে অচেতন হইয় পড়িবার পূৰ্ব্বে পধ্যপ্ত কি উপায়ে নয়নের জ্যোতিঃস্বরূপিণীকে জার-একবার এক মুহূর্ভের জন্য ছনয়ন ভরিয়া দেখিতে পাওয়া যায়, ইহাই ভাবিয়া তাহাকে অস্থির হইয়া থাকতে হইবে । অতঃপর, যাহা অস্তিত্বের সমস্ত শাক্ত দিয়া চাহিয়াও সে পাইবে না জানে, তাহা পাওয়ার অধিকার তাহার নাই, তাহাতে লোভ করা তাহার ধৃষ্টভা, নিজেকে এই নিদারুণ আঘাত দিয়া বেদনা পাইয়। অপর বেদনাকে সে ভুলিতে লাগিল। সে যে অষোগ্য, সে যে অকিঞ্চিৎকর তাহার জীবনে যে ঐশ্বৰ্য্য সে পাইতে লোভ করে তাহার বিনিময়ে কিছু যে তাহার দেওয়ার সাধা নাই, নিজের এই দীনতার অভিমানকে সারাক্ষণ সে মনের সম্মুখে ধরিয়া রহিল । মনে পড়িল, ঐন্দ্রিলাকে যে-কয়টি মূল্যবান মুহূৰ্ত্ত সে আজ কাছে পাইয়াছিল, একবারও দুই চোখ ভরিয়া তাহাকে সে দেখিয়া লয় নাই। তাহার কণ্ঠস্বরকে দুই কানে শুনিয়াছে, অস্তরের মধ্যে উপলব্ধি করে নাই। নিজের বিমুগ্ধ অস্তরের গ্ৰীতি-নিবেদনকে নিজের দুই