পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পারস্য-ভ্ৰমণ ঐকেদারনাথ চট্টোপাধ্যায় ২২শে এপ্রিল দুইদল বেঁধে আমরা সিরাজ থেকে রওয়ানা হলাম। এবার সঙ্গে লোকজন চলল। কেননা একটানে এখান থেকে ইস্ফাহান যাওয়া শক্ত। পথের ব্যবস্থ৷ করবার জঙ্ক শিরাজের একজন রাজকৰ্ম্মচারী লোকজন সঙ্গে করে চললেন। আমি তার গাড়ীতেই উঠলাম। এই ভদ্রলোকের নীল চোখ, কাচা পাটের মত চুল এবং কবির অভ্যর্থনার জন্ত এসেছিলেন ; আবৃহাব কৈখসরু শাহ রোথ ( ইরাণমেজলিসের—অর্থাৎ পালামেণ্ট— তত্ত্বাবধায়ক এবং বর্তমান শাহের অতি বিশ্বস্ত রাজকৰ্ম্মচারী, ধৰ্ম্মে জরথুষ্ট ) সঙ্গে তার কনিষ্ঠ পুত্র শাহবেরাম ও শ্ৰীযুক্ত ফুকুঘি । এরা তিনজন, বোম্বাইয়ের পার্সীসম্প্রদায় ইরাণে, কারবার ইত্যাদির স্থযোগ অনুসন্ধান পার্সিপোলিস ৷ সন্মুখ হইতে সাধারণ দৃষ্ঠ । পিছনের পাহাড়ে সমাধি-গুহ। লম্বা লালমুখ আমার টিমথি ব্রীন নামে এক আইরিশ বন্ধুর কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিল। মনে পড়ল আইরিশদের মধ্যে কিম্বদন্তী আছে যে, তারা বছপূৰ্ব্বে ইরাণ বলে দেশে পাহাড়ের কোলে বাস করত। সেই ইরাণ থেকে ওদের দেশের নাম এরিণ হয়েছে এবং একথাও শুনেছিলাম যে, ওদের আদি ভাষায় ( গেলিক ) অনেক শব্দ আছে যা ইরাণে এখনও চলতি । ভাষাতত্ত্ববিদগণ বলবেন। শহরের বাইরে একবার দাড়ান হ’ল। অনেক গণ্যমান্য লোক এসে বিদায় নিলেন । এবার আমাদের দল বেশ ভারী। টেহেরাণ থেকে দুজন সন্ত্রাস্তলোক এ সকল প্রবাদের সত্য-মিথ্যা করতে কয়েকজন পাসাঁকে পাঠিয়েছিলেন তার একজন, ক্রযুক্ত মালানি—আমাদের আগের দল ত আছেই! এদেশের পথঘাটের গত পাচ বৎসরের মধ্যে অনেক উন্নতি হয়েছে। চার পাঁচ হাজার মাইল রাস্তা তৈরী হয়েছে, সেপাই পাহারায় যাতায়াতও নিরাপদ হয়েছে। কিন্তু এখনও বিদেশীর পক্ষে । অন্ততঃ এ অঞ্চলে ) পথচলা অতি দুরূহ ব্যাপার। রাস্তা প্রায় সবই কাচা এবং গাড়ি ভেঙ্গে-চুরে গেলে সাহায্য পাওয়াও মুস্কিল। উপরন্তু খাওয়া শোওয়া এবং অন্য সব ব্যাপারের ব্যবস্থা সরাই বা চাটতে ছাড়া অল্প কোথাও সাধারণ লোকের পক্ষে অসম্ভব এবং সে-সব জায়গায় সমস্ত বন্দোবস্তই একটু মধ্যযুগের মত।