কাত্তিক সাধারণ মেয়ে লিজি তাকে খুব আস্তে আস্তে বললে, “এই সেদিন তুমি এসেচ, ছদিন পরে যাবে চলে, ঝিনুকের ছুটি খোলা, মাঝখানটুকু ভরা থাকৃ একটি নিরেট অশ্রুবিন্দু দিয়ে,— স্থলভ মূল্যহীন।” কথা বলবার কী অসামান্য ভঙ্গী । সেই সঙ্গে নরেশ লিখেচে “কথাগুলি যদি বা বানানো হয় দোষ কী, কিন্তু চমৎকার,— হীরে-বসানো সোনার ফুল কি সত্য ?” বুঝতেই পারচ, একটা তুলনার সঙ্কেত ওর চিঠিতে অদৃশ্য র্কাটার মতো আমার বুকের কাছে বিধিয়ে দিয়ে জানায়— আমি অত্যন্ত সাধারণ মেয়ে । মূল্যবানকে পুরো মূল্য চুকিয়ে দিই এমন ধন নেই আমার হাতে। ওগো না হয় তাই হোলো, না হয় ঋণী রইলেম চিরজীবন। পায়ে পড়ি তোমার, একটা গল্প লেখে তুমি, শরৎবাবু, নিতান্তই সাধারণ মেয়ের গল্প,— যে তুর্ভাগিনীকে দূরের থেকে পাল্লা দিতে হয় অস্তুত পাচ সাতজন অসামান্তার সঙ্গে,— অর্থাৎ সপ্তরথিনীর মার। বুঝে নিয়েচি, আমার কপাল ভেঙেচে,— হার হয়েচে আমার । কিন্তু তুমি যার কথা লিখবে, তাকে জিতিয়ে দিও আমার হয়ে, পড়তে পড়তে বুক যেন ওঠে ফুলে। ফুল চন্দন পড়ুক তোমার কলমের মুখে।
পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।