পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SS8 —চালের কারবার উঠে গেল ? আমি তাই ভাবচি, বুঝলে কি-না ? —কে বললে ? খুব জোর চলচে। এখন তোমার সঙ্গে যে কথাটা আছে তাই হোক । কানাই কথায় যোগ দিল না । সে তীব্র নয়নে মাঝে মাঝে বনবিহারীকে দেখিতেছিল। গঙ্গাধর বলিল, তুমি আমাদের কিছু বল নি, কানাইবাবুকেও কিছু বল নি । —শুধু হাতে কি বলতে আছে, বুঝলে কি-না? গঙ্গাধরের বেশ এখন অন্ত রকম। কোটের উপর বুকে চাদর আঁটা। বুকের ভিতরকার পকেট হইতে পকেট-বুক বাহির করিয়া দু-খান পাচ শো টাকার নোট বনবিহারীর সম্মুখে রাখিল —আমরা যা জানতে চাই বলতে পারলে এ টাকা তুমি এখনই নিয়ে যেতে পার । কানাই দেখিল বনবিহারীর ছোট চক্ষু লোভে জলিয়া উঠিল, ক্ষুধার সময় বস্ত পণ্ড যেমন স্থঙ্কনী লেহন করে জিহার অগ্রভাগ দিয়া সেইরূপ ওষ্ঠপ্রান্ত লেহন করিল। বলিল, কারা মোটরে পুড়ে গিয়েছিল তাই qfars 5te ? —আরও অনেক কথা । এক কথায় কি হাজার টাকা পাওয়া যায় ? তোমার মনে পড়ে আমাকে আর আমার সঙ্গীকে বলেছিলে মোটরে এক জন স্ত্রীলোক ছিল ? —তা হতে পারে । সব কথা কি মনে থাকে, বুঝলে কি-না ? —ক’জন লোক ছিল ? —তা আমি ঠিক বলতে পারি নে। সে স্ত্রীলোকটি নাকি রক্ষে পায়। আমার কতক শোনা কথা, বুঝলে कि-नां ? —সে স্ত্রীলোককে তুমি দেখেচ ? —দু-একবার অমনি দেখে থাকব। বড়ঘরের মেয়ে, ভাল ক’রে কেমন ক’রে দেখব, বুঝলে কি-না ? —কোন ঘরের মেয়ে ? কোন গ্রামে বাড়ি ? বনবিহারী মুস্কিলে পড়িল । যদি সত্য কথা বলিয়া ফেলে তাহা হইলে জিলোচনকে হাতছাড়া করিতে হয়, S99ళేు আবার নৌকা ডুবিয়া যাওয়া যে মিথ্যা কথা তাঁহাই বা সে কেমন করিয়া প্রমাণ করিবে ? অপর পক্ষে, এই যে হাজার টাকা বনবিহারীর সম্মুখে পড়িয়া রহিয়াছে ইহাও যে সহজে পাওয়া যাইবে তাহার কোন আশা নাই। পূর প্রমাণ না পাইলে ইহারা টাকা দিবে না। বনবিহারী একটু ইতস্ততঃ করিয়া বলিল, বসীরহাটে এক ঘর জমিদার অাছে তাদের বউ । —সে ত সহজেই জানতে পারা যাবে। যদি রক্ষে পেয়ে থাকে তাহ’লে সে স্ত্রীলোকটি কোথায় আছে বলতে পার ? —নিজের বাড়ি ফিরে গিয়ে থাকবে। বুঝলে কি না ? 酸 —তাহলে আর খোজ করবার আবশুক কি ? আমরাই বা কাউকে টাকা দিতে গেলাম কেন ? —কোথায় আছে তা আমি বলতে পারলাম না । সে যে বেঁচে আছে ওটা আমার শোনা কথা, বুঝলে কি-না ? —আচ্ছ, তামাচরণকে তুমি ত চেন, একবার তাকে বিলক্ষণ প্রহারও দিয়েছিলে। ষে মোটরখানা পুড়ে যায় সেটা কি শুামাচরণ চালাচ্ছিল ? —কে বললে ? তাহ’লে সে সব কথা বলত । যে মোটর চালাচ্ছিল সেও বোধ হয় পুড়ে মরেচে। বুঝলে কি-না ? —তাত মনে হয় না। এখানা চিনতে পার ? গঙ্গাধর সেই ময়লা মোট রুমালখানা বাহির করিয়া বনবিহারীকে দেখাইল । রুমালের কোণে চিহ্ন দেখাইল । বলিল, যে মোটর চালাচ্ছিল তার এই রুমাল। সে পুড়ে মরে নি, মোটর থেকে পালিয়েছিল, তাড়াতাড়িতে এই রুমালখানা ফেলে গিয়েছিল। বনবিহারীর মনে বড় ভয় হইল। ইহারা বড় সহজ লোক নয়, সন্ধান করিয়া নিশ্চয় কিছু জানিতে পারিয়াছে। টাকার লোভে শেষে কি বনবিহারী নিজের পা ফঁাদে দিৰে ? তাহার এখানে আসাই ভুল হইয়াছিল। সে বলিল, খামাচরণের কথা জামি কিছু জানি নে। আমি এখন চললাম । -