পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হয়গ্রাহাত্মাণ গীত। Sa • এরূপ ব্যক্তিকেও শ্রেষ্ঠ যোগী বলা যায় না, কারণ উপায় তাহার জানা থাকিলেও তিনি এখনও আত্মোপলব্ধি করেন নাই ; তিনি এখনও সিদ্ধ বা মুক্ত নহেন । আত্মার উপলব্ধির জন্য যোগ প্রযুক্ত হইলে আত্মজ্ঞান বা ব্ৰহ্মজ্ঞান জন্মে। ৬১৮ শ্লোকে আছে যখন চিত্ত বহির্বস্তু হইতে নিরুদ্ধ হইয়া আত্মাতেই অবস্থান করে এবং যখন সমস্ত কামনা নিবৃত্ত হয় তখনই "যুক্ত’ অবস্থা বলা যায়। যুক্ত যোগীর সৰ্ব্বত্র সমদর্শন হয় । সৰ্ব্বত্র অর্থে মুক্তিক প্রস্তরাদি হইতে আরম্ভ করিয়া মনুষ্যাদি সমুদয় পদাৰ্থ । ৬২৯ শ্লোকে এই অবস্থার বর্ণনা আছে । যোগযুক্ত ও যুক্ত' যোগীতে পার্থক্য আছে । যুক্ত অবস্থাই মুক্ত অবস্থা, কারণ এই অবস্থায় সাধক সংসারবন্ধন হইতে মুক্ত হইয়া ব্রহ্মের সহিত যুক্ত' বা মিলিত হইয়া ধান। বিভূতি লাভের জন্ত বাথ না হইয়া যে যোগী আত্মজ্ঞান লাভ করিয়া সমদৃষ্টিসম্পন্ন হন তাহাকে ৬৩২ গ্লোকে ‘পরমযোগী বলা হইঠাছে । ৬৪৭ শ্লোকে বলা হইয়াছে ব্ৰহ্মপরায়ণ যোগী যখন ভগবানের ভজনায় রত থাকেন অর্থাৎ ভগবানের সহিত যুক্ত থাকেন তখন তাহাকে যুক্ততম বলা হয় । শ্বেতাশ্বতর উপনিষদের দ্বিতীয় অধ্যায়ে যোগ সাধনার উপদেশ আছে। ২১৪ শ্লোকে বলা হইয়াছে একমাত্র আত্মতত্ত্বদ্ৰষ্ট দেহী কৃতার্থ ও বিগতশোক হন । ২১৫ শ্লোকে বলা হইয়াছে “যুক্ত সাধক যখন দ্বীপতুল্য আত্মতত্ব দ্বারা ব্ৰহ্মতত্ত্ব দর্শন করেন তখন তিনি অজ, ধ্রুব, বিশুদ্ধ দেবকে জানিয়া সমস্ত বন্ধন হইতে মুক্ত হন । শ্বেতাশ্বতরও যুক্ত যোগীকে মুক্তপুরুষ বলিতেছেন । অতএব যুক্তাবস্থা যোগান্ধঢ়ের কামা ; তাহ রামমোহন কথিত যোগারূঢ়ের মধ্যমাবস্থ৷ व८६ ! ৬l১০—শমগুণসম্পন্ন যোগাক্কড় সাধক কি করিয়া যোগী যুঞ্জীত সততমাত্মানং রহসি স্থিত: | একাকী যতচিত্তারা নিরাশীরপরিগ্রন্থঃ ॥ ১০ গুচে দেশে প্রতিষ্ঠাপ্য স্থিরমাসন মাত্মনঃ। লাতুাচ্ছিতঃ নাতি নীচং চেলাজিনকুশোত্তরমূ। ১১ ওত্রৈকাগ্ৰং মনঃ কৃত্বা যতচিত্তেজিয়ক্ৰিয়ঃ। উপৰিস্তাসনে যুগ্র্যাদযোগমাত্মবিশুদ্ধয়ে ॥ ১২ ՀՎoան - - আত্মোপলব্ধির চেষ্টা করিবেন তাহার উপদেশ দিতেছেন । "যোগী সতত নির্জন স্থানে একাকী অবস্থান করিয়া দেহ ও মন সংযত করিয়া ফলাশাশূন্ত ও বিষয়ভোগে উদাসীন হইয়া নিজেকে যোগসাধনে নিয়োজিত করিবেন।” নির্জনস্থানে একাকী থাকিবার উপদেশের অর্থ এই যে, চিত্ত বিক্ষেপের কারণ থাকিবে না। যোগাভ্যাসের জন্য সংসার ত্যাগ করিয়া একাকী পৰ্ব্বতগুহায় যাইতে হইবে এমন উদ্দেশ্য নহে। সতত অর্থাৎ "সৰ্ব্বদা, ঘন ঘন ; নিরবচ্ছিন্ন এমন তাৎপৰ্য্য নয়” ( রাজশেখর ) । “যতচিত্তাত্মা’র আত্ম শব্দের অর্থ দেহ, কারণ পরবর্তী শ্লোকে চিত্ত ব্যতীত দেহকেও সংযত করিবার উপদেশ আছে । অথবা যতচিত্তাত্মা শব্দ ধৰ্ম্মাত্মা শব্দের অনুরূপ ও ইহার অর্থ যিনি সংযতচিত্ত । ৬l১১-১৫—“তিনি নিৰ্ম্মল স্থানে স্থির, অনতিউচ্চ, অনতিনীচ, কুশ, পশুচৰ্ম্ম ও বস্ত্র উপরি উপরি বিছাইয়া আপনার আসন স্থাপন করিবেন ; সেই আসনে উপবেশন করিয়৷ দেহ, মস্তক ও গ্রীধা ঋজু ও নিশ্চল রাখিয়৷ চতুদ্ধিকে অবলোকন না করিয়া স্বীয় নাসিকাগ্রে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখিয়া চিত্ত ও ইন্দ্রিয়ের ক্রিয়া সংযমিত করিয়া একাগ্রমনে আত্মবিশুদ্ধির জন্য যোগযুক্ত হইবেন। প্রশাস্তমনা, বিগতভয় অর্থাৎ সিদ্ধি সম্বন্ধে নির্ভয়, ব্ৰহ্মচৰ্য্য ব্ৰতধারী যোগী মনঃসংযম করিয়া মদগতচিত্ত ও মৎপরায়ণ হইয়া অর্থাৎ আত্মা বা ত্রহ্মে চিত্তনিবিষ্ট করিয়া ব্ৰহ্মপরায়ণ হইলে "যুক্ত হুইবেন। এই প্রকার সংযত চিত্ত যোগী সৰ্ব্বদ আপনাকে যুক্ত রাখিলে নিৰ্ব্বাণপরমা ব্ৰহ্মাশ্রিতা শাস্তি প্রাপ্ত হন।” পঞ্চম অধ্যায়ের শেষে বলা হইয়াছে যে, নিষ্কাম আত্মরতিসম্পন্ন কৰ্ম্মী, সৰ্ব্বভূতহিতে রত ঋষি কামক্রোধ বিযুক্ত প্রাণায়াম সাধক যতি, সংঘত মনোবুদ্ধি মুনি সকলেই ব্রহ্মনিৰ্ব্বাণ প্রাপ্ত হন। এখানে বলা হুইল সমং কারশিরোগ্রীবং ধারয়ন্নচলং স্থিরঃ। সংপ্ৰেক্ষ্য নাসিকাগ্ৰং স্বং দিশশ্চানবলোৰুরন। ১৩ প্রশ্বাস্তাত্মা বিগতভীব্ৰ চাঞ্জি ব্রতে স্থিত: মনঃ সংযম্য মচ্চিত্তো যুক্ত আগীত মৃৎপঃঃ । ১৪ যুঞ্জল্পেবং সদাত্মানং যোগী নিয়তমানসঃ। শান্তিং নিৰ্ব্বাণপরমাং মৎসংস্থামধিগচ্ছতি ॥ ১০