পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অগ্রহায়ণ অতএব কেবলমাত্র আত্মার দ্বারাই আত্মাকে দেখা যায়। আত্মা আনন্দস্বরূপ এজন্ত আত্মোপলব্ধিতে আত্যস্তিক মুখ অনুভূত হয় অথবা স্থখ অনুভূত হয় বলা ঠিক নহে, কারণ আত্মাই মুখ ইহা অনুভবের জন্ত কোন ইঞ্জিয়ের আবশ্বকতা নাই এজন্য ইহাকে অতীন্দ্রিয় বলা হইয়াছে। অপরে এই স্বগের ধারণা কেবল বুদ্ধিদ্বারাই করিতে পারেন এজন্য ইহাকে বুদ্ধিগ্রাহ বলা হইয়াছে। আত্মজ্ঞানের উদয়ে বুদ্ধিরূপ পৃথক সম্ভাও থাকে না অতএব বুদ্ধিগ্রাহ অর্থে আত্মজ্ঞানীর বুদ্ধিগ্রাহ নহে। এই আত্যন্তিক স্বথ অর্থাং আত্মা কেবল আত্মার দ্বারাই উপভোগ্য। বুদ্ধি প্রভৃতি কোন সজ্ঞ। তাহাকে প্রকাশ করিতে পারে না। ৬২৩—“পূৰ্ব্বশ্লোক বাণত সেই দু:খসংযোগ বিয়োগকে অর্থাৎ ধে অবস্থায় দু:খসংযোগ হইতে মুক্তি গুয় সেই অবস্থাকে যোগ বলিয়া জানিবে । এই যোগ নির্দেশূন্য চিত্তে অর্থাং নৈরাশ্যশূন্ত হইয়া বা ঔংস্থক্যসহকারে নিশ্চয় আচরণীয়।” পূৰ্ব্বশ্লোকসমূহে ধোগাচরণের ও যুক্তাবস্থার বিবরণ আছে ও এই শ্লোকে যোগ আচরণীয় বলিয়া পুনরায় ৬। ২৪-২৬ শ্লোকে যোগের উপদেশ দেওয়া হইয়াছে। এই পুনরুক্তির কারণ কি ? শঙ্কর বলেন, যোগের ফলকথন প্রস্তাব শেযপূৰ্ব্বক আবার ত"র আরম্ভ করিয়া, যোগের কস্ট্রব্যতা বিষয়ে উপদেশ প্রদান করিতেছেন, নিশ্চয় ও নিৰ্ব্বেদ্যভাব এই দুইটি বস্তুতে যোগের সাধনত আছে ইহাই প্রতিপাদন করিবার জন্ত এই পুনরারম্ভ করা হইয়াছে ( প্রমথনাথ তর্কভূষণ ) । এই যুক্তির সার্থকভা দেখা যায় না, কারণ কেবল যে যোগসাধনার কথার পুনরুক্তি আছে তাহী নহে, ৬২৭-২৯ ঞ্জেকে পুনরায় যুক্তাবস্থার বর্ণনা আছে ও যুক্তের মাস্তিক স্থখ ও সমদর্শন লাঙ হয় ইঙ্গাও পুনরায় বলা ইষ্টগছে। আমার মতে শ্ৰীকৃষ্ণ প্রথমে যোগসাধনার তং বিদ্যা ঃখ সংযোগৰিয়োগং যোগসংজ্ঞিত । স নিশ্চয়েন যোক্তব্যে যোগোহনির্মিচেতসা ॥ ২৩ সংকল্প প্রভবান কামাং স্ত্যজ সৰ্ব্বানশেষতঃ। মনসৈৱেশ্রিয়গ্ৰামং বিনিয়ম সমস্তুত ॥ ২৪ শনৈ: শনৈকৃপরমে বুদ্ধা ধৃতিগৃহীতয়া। আত্মসংস্থং মনঃ কৃত্বা ন কিঞ্চিদপি চিন্তুয়েৎ ॥ ২৪ যতো যতো নিশ্চলতি মনশ্চঞ্চলমস্থিরমূ। ততস্ততে নিয়ম্যৈতদাৰুদ্ধেৰ বশং নয়েৎ ॥ ২৬ গীতা See এক প্রকার উপায় বলিয়া পুনরায় অন্য প্রকার উপায় নির্দেশ করিতে ছন । এই উপায়ে আসন ইত্যাদি কোন শারীরিক প্রক্রিয়ার আবশুকতা নাই। প্রথমোক্ত সাধনাকে শারীরিক যোগ বলিলে দ্বিতীয় উপায়কে মানসিক যোগ বলা যায়। এই মানসিক যোগের ফলও শারীরিক যোগের অনুরূপ এজন্ত ফল নিৰ্দ্দেশে পুনরুক্তি আসিয়াছে । ৬। ২৪-১৯—“ফলাশাসস্থত সমস্ত কামনা নিঃশেষে বর্জন করিয়া মনের দ্বারা সৰ্ব্ববিযয় হইতে ইন্দ্রিয়গ্রামকে নিবৃত্ত করিয়া ধৈর্য্যসহকারে বুদ্ধিদ্বারা ক্রমে ক্রমে উপরতি অবলম্বন করিবে এবং মনকে আত্মায় নিরুদ্ধ করিয়া কোন বহিবিষয়ের চিন্তা করিবে না। চঞ্চল ও অস্থির মন যে-যে বিষয়ে ধাবিত হইবার চেষ্টা করিবে তাহাকে সেইসেই বিষয় হইতে নিবৃত্ত করিয়া আপনার বশে আনিবে। এইরূপে র্যাহার রজোগুণ ( অর্থাৎ প্রকৃতির যে গুণের দ্বারা মন বহিবিষয়ে ধাবমান হইয়া ক্রিয়াশীল হয় ) প্রশমিত হইয়াছে ও র্যাহার চিত্ত শাস্ত হইয়াছে ও যিনি ব্ৰহ্মভূত অর্থাৎ ব্রগেস্থিত হইয়া পাপশূন্ত হইয়াছেন তাহার উত্তম বা শ্রেষ্ঠ স্থখ লাভ হয়। এই প্রকারে সর্বদ আত্মাতে যুক্ত হইয় যোগ বিগতপাপ হইয়া অনায়াসে ব্রহ্মসংস্পর্শরূপ আত্যপ্তিক সুখ উপভোগ ধরেন । তিনি যোগদ্বারা আত্মার সহিত যুক্ত হওয়ায় সৰ্ব্বভূতে আপনাকে এবং আপনাতে সৰ্ব্বভূতকে দেখিয়া সমদর্শী হন ।” শারীরিক যোগের সহিত মানসিক যোগের পার্থক্য এই যে, ইহাতে কোন আসন করিতে হয় না এবং নাসাগ্রে দৃষ্টি মিবদ্ধও করিতে হয় না এবং প্রাণায়ামেরও আবশ্যকতা নাই, যন্ত্র তত্র এই যোগ প্রযোজ্য। শ্ৰীকৃষ্ণ বলিলেন, মানসিক ধোগ দ্বারাও ব্রহ্মনিৰ্ব্বাণ, আত্যপ্তিক মুখ ও সমদর্শন লাভ হয় । প্রশান্ত মনসং হেনং যোগিনং স্বধমুত্তমম্। উপৈতি শান্তরজসং ব্ৰহ্মভূতমকল্মষমূ৷ ২৭ গুঞ্জল্পেবং সদাত্মানং যোগী বিগতকল্মষ: | ইখেন ব্রহ্মসংস্পৰ্শমত্যন্তং মুখমণ্ডুতে ॥ ২৮ সৰ্ব্বভুতস্থমাস্থানং সৰ্ব্বভূতানি চাম্বনি । ঈক্ষতে যোগযুক্তাক্ষ্মা সৰ্ব্বত্র সমৃদশনঃ । ২৯