পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আগ্রহায়ণ शृंखलं ՋԳՑ বেণী মূল্যবান। ইহারা চতুষ্পার্থের এই অত্যন্ত সচেতন জাগ্ৰত অসীমতার বিপুল রহস্তে আবৃত হইয়া বসিয়৷ দুদণ্ডের জন্যও নিজেদের অন্তরের আগ্রহকে কোন অর্থহীনতার শূন্ত গহ্বরে ঢালিয়া দিতেছে, এই জিনিষটিকে অত্যন্ত অদ্ভূত অমার্জনীয় অপচয় বলিয়া হঠাৎ সে আজ ‘অনুভব করিল। তাহার মনে পড়িল, ছেলেবেলায় তাহার এক সহপাঠীকে অত্যন্ত অভিনিবেশ সহকারে সে একদিন বুঝাইতে ব্যাপৃত ছিল যে, অসীমতাকে ভাবা ধায় না ইহা সত্য নহে, সীমাকেই ভাব যায় না। তাহার বয়স A তখন আট বৎসরের বেশী নয়। কে একজন অপরিচিত ব্যক্তি পশ্চাৎ হইতে সব শুনিয়া সেদিন ভবিষ্যদ্বাণী ঠুকরিয়াছিলেন যে, কালে সে একজন খ্যাতিমান মাহুষ হইবে। আজ সে মৃতন করিয়া তাহার পরিচিত বন্ধুদের সঙ্গে তাহার স্বভাবের পার্থক্যকে অনুভব করিল। সে বুঝিতে পারিল, অসীমতীর সঙ্গে কোথাও কোনওরূপে যাহার যোগ নাই এমন কোনও বস্তুকে সমাদরে তাহার জীবনে সে আহ্বান করিতে পরিবে না। বাহিরের এই আকাশ, এই গ্রহচন্দ্রতার, এই রৌদ্র বৃষ্টি কুদ্ধাটিকা, যুগে যুগে সার্থকতা হইতে সার্থকতায় বিশ্বস্বষ্টির বিরামহীন এই জয়যাত্রা, এ-সমস্তের সঙ্গে তাহার স্থখদুঃখ যতদিন সম্বন্ধ-বিহীন থাকিবে ততদিন কিছু লইয়াই তাহার জীবনের অভাব মিটবে না। তাহার মনে হইল, তুচ্ছতা যেন তাহার সমস্ত দেহে মানির মত হইয়ালিপ্ত রহিয়াছে। ইচ্ছা করিতেছে বাহিরের অজস্র জ্যোতিঃবৃষ্টির মধ্যে বাহির হইয় পড়ে ও সেই মানিকে প্রক্ষালিত করিয়া লয়, তারপর নিজের সমস্ত দৈন্ত, সমস্ত ক্ষুদ্রতাকে হুলিয়া গিয়া প্রভাতের আকাশে দেবতার মত সাপে একবার মাথা তুলিয়া দাড়ায়। হঠাং রাস্তার দরজার কড়াটা রুদ্রতালে নড়িয়া উঠিল। প্রকৃতিস্থ মানুষ এত জোরে কড়া নাড়ে না। অত্যন্ত বিস্মিত হইয়া তর্ক থামাইয়া স্বভদ্র ব্যস্তভাবে }বৈকুণ্ঠনাথকে ডাকাডাকি করিতে লাগিল । বৈকুণ্ঠ বাজার হইতে ফিরে নাই, উপরে রান্নাঘরে পাশপাশি দুটি উচুনে ডাল ও ভাত চাপাইয়া দিয়া ছাতের আলিসায় ভর দিয়া উড়িয়া-ঠাকুর পাশের বাড়ীর আয়ার সঙ্গে বিশ্রম্ভীলাপে নিরত। নন্দ কখন বাড়ী ফিরিয়াছে, তিন বন্ধুর কেহই তাহা লক্ষ্য করে নাই । যাচ্ছি বলিয়া প্রায় ঝড়ের মত ছুটিয়া সে নীচে নামিয়া গেল । দরজা খুলিতে যে দুই মিনিট দেরি হইল তাহার মধ্যে আর পাচ-সাত বার কড়াটা সজোরে নড়িয়া উঠিল এবং প্রতিবারেই ধ্বনির পরিবর্ক্সে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ঠিকরিয়া বাহির হইল। একটু পরেই পাড়ার দুই-তিনটি ভদ্রবশেধারী ব্যক্তি এবং কয়েকজন সাঙ্গোপাঙ্গ সঙ্গে করিয়া পুলিশের একজন দারোগ। সিড়ি বাহিয়া উপরে উঠিলেন । নামধাম না জানাইয়া, অনুমতি না লইয়', তিনজন ভদ্রযুবকের পবিত্র পাঠাগার ও বিশ্রামকক্ষে একদল অপরিচিত মানুষ কি বলিয়া ঠেলাঠেলি করিয়া ঢুকিয়া পড়িতেছে, অজয় চমৎকৃত হইয়া ভাস্থাই ভাবিতেছে এমন সময় স্মিতহাস্যে সকলকে শিষ্ট-সম্ভাষণ করিয়া দারোগ তাহার ংifগমনের কারণ জ্ঞাপন করিলেন । জানা গেল, নন্দলাল “পোলিটিক্যাল সাসপেক্ট, সম্প্রতি পূৰ্ব্ববঙ্গের কোন গণ্ড গ্রামে একটা রাজনৈতিক ডাকাতি হইয়া ষাওয়াতে সে-সম্পর্কে তাহার খোজ পণ্ডিয়াছে । কলেজের কেহু তাহার বাড়ীর ঠিকান জানে না, গোয়েন্দার সাহায্যে তাহার আস্তান খুজিয়া বাহির করিয়া তাহারা আজ আসিয়াছেন, সঙ্গে অবগু থানাতল্লাসীর পরোয়ানা আছে। নন্দলালবাবু র্তাহীদের এত হায়রাণ করিয়াছেন যে সে-কথা আর বলিবার নহে। কথা শেষ করিয়া নিজে হইতেই একটি চৌকি লইয়া বসিয়া দারোগ এক প্লাদ জল চাহিয়৷ লইয়া খাইলেন । - পুলিশের সঙ্গে অজয়ের জীবনে এই প্রথম পরিচয় । দারোগা অতি মিষ্টভাষী, তাহার সঙ্গীদের ব্যবহারও কিছুমাত্র অশিষ্ট নহে ; তথাপি নিদারুণ অপমানের উত্তেজনায় অজয়ের কপালের শিরা দপদপ, করিতে লাগিল। নিজেকে সে বহুপ্রকারে বুঝাইতে চেষ্টা করিল, কাহাকেও সন্দেহ করা মাত্রই তাহাকে অপরাধী করা নহে, কিন্তু তাহার অবাধ্য মন কিছুতেই বুঝিল না। তাহার বুকের মধ্যে টিপঢিপ করিতে লাগিল, পাঞ্জরের কাছে কি-রকম একটা ব্যথা, সমস্ত শরীর কঁপিতে লাগিল--অভঙ্গ-লেরল--