পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8১২ "প্রবাসী দেখে শুনে বসাতে। কোথায় জরুরী খুব কাজ ছিল। কারও কিছু অসুবিধা হয়নি অবিপ্তি।" "না, না, আপনি রয়েছেন, অসুবিধ। কেন হতে যাবে।” বলিয়া স্থলতা বীণার পশ্চাৎ পশ্চাৎ উপরে গিয়া উঠিলেন। মেয়ের বীণার চতুর্দিকে গোল হইয়৷ ঘিরিয়া আসিলে বীণা বলিল, “না, এই ক্লাবের চাদার টাকাটা এরপর অৰ্দ্ধেক আমাকে হিসেব ক’রে নিয়ে নিতে হবে। আমাকে নিয়ে ভিড় করবার জন্তেই কি তোরা ক্লাবে আসিস্ ?” রমাপ্রসাদ তাছার নিজের ধরণে রসিকতা করিবার চেষ্টা করিয়া কছিল, "চাদ যা আদায় হয়, তা শুনলে আপনার আর তাতে ভাগ বসাতে ইচ্ছে করবে না। দেখবেন একবার হিসেবটা ?” বীণা বলিল, “রক্ষা কর বাবা, বাড়ীতে বাজারের হিসেব রোজ দেখতে হয়, সেই দুঃখ ভুলতে ক্লাবে আসি, এখানেও যদি তাই করতে হয় ত এরপর দেশ ছেড়ে পালাতে হবে। আপনার ভয় নেই, চাদার টাকা পরিমাণে খুব বাড়লেও আমি সত্যিই তাতে ভাগ বসাব না। স্বভত্রবাৰু আজ আসেননি বুঝি ?” বলিতে বলিতেই স্বভদ্ৰ আসিয়া পৌছিল। কিন্তু বীণার উৎসুক দৃষ্টি তাহার দিক্ হইতে যেন প্রতিহত হইয়া ফিরিয়া আসিল । সে আজ কোথা হইতে একটি পশ্চিম-দেশীয় স্বত্র চেহারার মুসলমান বন্ধুকে জুটাইয়া আনিয়াছে, প্রথমেই বীণার সঙ্গে তাহার পরিচয় করাইয়৷ দিল। বন্ধুটি বেশ সপ্রতিভ, বিলাত ঘুরিয়া আসিয়াছেন, মেয়েদের সঙ্গে ব্যবহারে কোনও আড়ষ্টভাব প্রকাশ পাইল না। সকলের সঙ্গে মৌখিক পরিচয় সমাধা হইয়া গেলে স্বভত্রের অঙ্কুরোধে তিনি কয়েকটি পারসীক গজল গাহিয়া সকলকে শোনাইলেন। পরিষ্কার স্বৰষ্ঠ, শ্রুতিমধুর ভাষা, মধুরতর স্বর মিলিয়া সহজেই সকলের মনোহরণ করিল। কাহারও সঙ্গে কাহারও কথা বলিবার দায় নাই, স্থদ্ধমাত্র এই কারণেই ক্লাব সেদিন জমিল ভাল। গান শেষ হইয়া গেলে তথাকথিত হিন্দু:সঙ্গীতের উপর ইসলামীয় প্রভাব সম্বন্ধে আলোচনা জুড়িয়া স্বভঞ্জ সকলকে তাহাতে যোগ S99áు দিতে আহবান করিল, কিন্তু ছেলেরাও আজ কথার মাঝে মাঝে সংক্ষিপ্ত টীকা-টপ্পনী করিয়াই কৰ্ত্তব্য শেষ করিল, আলোচনা প্রধানতঃ স্বভদ্র এবং তাঁহার মুসলমান বন্ধুটির মধ্যেই আবদ্ধ হইয়া রহিল। সেদিনকার মত ক্লাবের কাজ ঐ পৰ্য্যন্ত হইয়া শেষ হইল । অন্তদিন হইলে এই সময়টাই বীণাকে খিরিয়া ছোটখাট আর-একটি ক্লাব জমিয়া উঠিত, এবং সত্যিকারের হইয়া জমিত, কিন্তু আজ তাহার মন ভার হইয়া ছিল । স্বভদ্রকে অজয়ের খবর জিজ্ঞাসা করিবে ভাবিয়াছিল, কিন্তু সে তখন তাহার নবাগত বন্ধুটিকে লইয়া মহাব্যস্ত, র্তাহাকে বাড়ী পৌছাইয়া দিতে তাড়াতাড়ি বহির হইয়া গেল। অজয় শেষ পৰ্য্যন্ত আসিল না দেখিয়া স্বলতাও অত্যন্ত ক্ষুন্ন হইলেন। বীণাকে নিজেদের গাড়ীতে বাড়ী রওনা করিয়া দিতে নীচে আসিয়া বলিলেন, “ক্লাব আজ মোটেই ভালো লাগল না, না ?” বীণা কহিল, “মন্ম কি, গানগুলি সত্যিই শোনবার মত, আর গলাটিও বেশ মিষ্টি । কিন্তু এ আর চলবে না স্বলতাদি, আমার হয়ে তুমিই স্বভাবাবুকে বলে ग्निe ।” স্বলতা অবাক হইয়া কহিলেন, “কি চলবে না ?” বীণা কহিল, “মুসলমান মেম্বার কেউ হতে চান, স্বচ্ছন্দে হতে পারেন। কিন্তু নিজের আওরাতটিকে সাবধানে ঘেরাটোপ দিয়ে নিজের বাড়ীতে জমা ক’রে রেখে এসে অন্তদের আওরাতদের সঙ্গে মজলিপি আলাপ জমাবেন, এ হতে পারবে না।” স্বলতা হাসিয়া উঠিয়া কহিলেন, “তা যদি বল, তাহলে ক্লাবের অনেক হিন্দু মেম্বারকেও নাম কেটে বিদেয় করতে झम्न ।” বীণা কহিল, “তা যদি ঠিকাঠক জানতে পাই যে ঐ প্রকারের মনোবৃত্তি তাদেরও কারও মধ্যে আছে তবে তার জন্তেও ঐ ব্যবস্থা করতেই আমি চাই। পর্দা ঢাকা না দিলে নিজের পরিবারের মেয়েদের সন্ত্রম থাকে না ধারা মনে করে, পর্দা ঢাকা দেয় না এমন মেয়েদের কখনও তারা সন্ত্রম করত পারে এ আমি বিশ্বাস করি না।”